দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির সভানেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত হয় বার্ধক্য বয়সের মতো জীবনযাপন করছেন। তিনি বেশ কয়েক মাস হাসপাতালে থাকার পর বাসায় যান এবং সেখানে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। এবার তার হাটে ব্লক ধরা পড়েছেন, যেটা নিয়ে ফের তাকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হলো। তবে তার অন্য রোগগুলোর চিকিৎসাও চলমান রয়েছে।
বেগম খালেদা জিয়া হাসপাতালে নিবিড় পর্যবেক্ষনে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও দলের ভাইস চেয়ারম্যান এ জেড এম জাহিদ হোসেন। তিনি আরও বলেন, খালেদা জিয়ার হার্টে আরও দুটি ব্লক পাওয়া গেছে।
এ জেড এম জাহিদ হোসেন জানান, শনিবার দুপুর ২টা থেকে খালেদা জিয়াকে ৭২ ঘণ্টা নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। এখন পর্যন্ত তিনি শারীরিকভাবে সুস্থ, চিকিৎসকরা বলছেন, ৭২ ঘণ্টা ছাড়া কোনো মন্তব্য করা ঠিক হবে না। এ কারণে তারা কোনো মন্তব্য করা থেকে বিরত রয়েছেন।
খালেদাকে সিসিইউতে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞদের পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে ড. জাহিদ জানান, গতকাল ম্যাডামের হার্টে এনজিওগ্রাম করে তিনটি ব্লক পাওয়া গেছে।একটা ব্লক মেইন গ্রেট ভেসেল, যেটা লেফট সাইডে, সেটায় মোর দ্য ৯৫% ব্লক ছিল। বাকি দুটি ব্লকের আচরণ কেমন হবে তা এখন বলা মুশকিল। বাকি দুটি ব্লক কেমন হবে তা এখনই বলা মুশকিল। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞদের একটি দল খালেদা জিয়ার দেখভাল করছেন।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে হৃদযন্ত্রের সমস্যা নিয়ে শুক্রবার বিকেল ৩টা ২০ মিনিটে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের ক’রোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) ভর্তি করা হয়।
শনিবার সকালে তার চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ড জরুরি ভিত্তিতে এনজিওগ্রাম করার সিদ্ধান্ত নেয়। দুপুরে ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদারের তত্ত্বাবধানে এনজিওগ্রাম করা হলে সেখানে ব্লক ধরা পড়ে এবং সেখানে রিং বসানো হয় প্রফেসর
২০২১ সালের এপ্রিলে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া রোগে আ”ক্রা/ন্ত হওয়ার পর খালেদা জিয়া পাঁচবার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন। তৃতীয় দফায় তাকে প্রায় ৩ মাস হাসপাতালে থাকতে হয়।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তিনি গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল রক্তক্ষরণ ও লিভার সিরোসিসে ভুগছিলেন। তিনি বহু বছর ধরে বাত, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস ও চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন। এর আগে গত ৮ এপ্রিল তাকে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য একই হাসপাতালে নেওয়া হয়।
দুর্নীতির মামলায় সাজা পেয়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাগারে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। দেশে ছড়িয়ে পড়া সংক্রমণের প্রাদুর্ভাবের পরে, ২৫ মার্চ, ২০২০ তারিখে, তাকে সরকারের একটি নির্বাহী আদেশে সাময়িকভাবে প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। এরপর থেকে নানা শারীরিক সমস্যা নিয়ে গুলশানের একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করছেন ৬০ বছর বয়সী খালেদা জিয়া।
বাংলাদেশে তার চিকিৎসার কোনো ব্যবস্থা নেই দাবি করে খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর জন্য তার ভাই শামীম এস্কান্দার একাধিকবার অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু সরকার সব সময়ই সাময়িক মুক্তির শর্ত অস্বীকার করে আসছে।
খালেদা জিয়ার যেসকল অসুস্থা রয়েছে তার কয়েকটি চিকিৎসা বাংলাদেশের নেই, এমন দাবী করে তাকে বিদেশে নেওয়ার সুযোগ দেয়ার জন্য সরকারের নিকট বেশ কয়েকবার অনুরোধ করেছিলেন শামীম এস্কান্দার। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে তার সাময়িক মুক্তির বিষয়টি তুলে ধরেন যেখানে বাইরে যেতে দেওয়ার এমন কোনো আইন বলে জানায়।