গত ৮ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলায় অবৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্সধারী চালকের বেপরোয়া গতির পিকআপ ভ্যানে চাপা পরে ঘটনাস্হলেই নিহত হন বাবার শ্রাদ্ধের আনুষ্ঠানিকতা সারতে আসা একই পরিবারের পাঁচ ভাই৷ দুর্ঘটনাস্হল থেকে মারাত্মক আঘাতপ্রাপ্ত রক্তিম সুশীল ১৫ দিন আইসিইউতে চিকিৎসাধীন থাকার পর আজ তিনিও মৃত্যুবরণ করেন৷ আট ভাই-বোনের পরিবারে ভাইদের মধ্যে একমাত্র বেঁচে আছেন প্লাবন সুশীল। তিনিও এখন মানসিকভাবে বিপর্যস্ত।
পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তিদের হারিয়ে কক্সবাজারের চকরিয়ায় সুরেন্দ্র সুশীলের বাড়িতে শোকের মাতম যেন থামছেই না। গতকাল মঙ্গলবার রক্তিমের লাশ বাড়িতে পৌঁছালে আরেক দফা কান্নার রোল ওঠে।রাত পৌনে নয়টার দিকে বাড়িতে পৌঁছায় রক্তিমের নিথর দেহ। ছেলের লাশ দেখে বারবার মূর্ছা যান রক্তিমের মা মৃণালিনী সুশীল (মানু)।
প্লাবন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। বোন হীরা বাড়ি ফিরলেও এখনো সুস্থ হননি। চকরিয়ার ওই বাড়িতে এখন সদ্য স্বামী হারা ছয় নারীর বসবাস। আর অতি সম্প্রতি বিধবা হয়েছেন তাঁদের শাশুড়ি মানু। তাঁর স্বামী সুরেশের স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছিল ৩০ জানুয়ারি। রক্তিমেরা আট ভাইয়ের মধ্যে সাতজনই ছিলেন বিবাহিত।
তাছাড়া সবাই রেখে গেছেন ছোট ছোট শিশু সন্তান। এদের মধ্যে এক মাস থেকে ১৬ বছর বয়সী সন্তান রয়েছে। এতটুকু বয়সে ছেলেমেয়েগুলো ভালোভাবে বুঝতেই পারছে না তাদের বাবা-চাচাদের মৃত্যু। আট ভাইয়ের মধ্যে স্মরণ সুশীলের স্থানীয় বাজারে সেলুনের দোকান ছিল। তাঁর এক ছেলের বয়স চার বছর। মৃত্যুর ২০ দিন আগে জন্ম নেয় তাঁর একটি মেয়ে। দুই ছেলে-মেয়ে নিয়ে তাঁর স্ত্রী তৃষ্ণা সুশীল এখন অদৃষ্টকে দায়ী করছেন। তিনি বলেন, ‘ভগবান আমাদের অনেক বড় শাস্তি দিল।’
প্রসঙ্গত, গত ১১ ফেব্রুয়ারী, শনিবার র্যাবের গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-১৫ এর যৌথ অভিযানে রাজধানীর মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে গ্রেপ্তার হন হন্তারক চালক সাইফুল ইসলাম ওরফে সাইফুল। দূর্ঘটনার পর মালিকের পরামর্শে আত্মগোপনে থাকা চালক গ্রেপ্তার হলেও পিকআপ ভ্যানের মালিককে এখনও গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয় নি৷