এবার বিএনপির টার্গেট ঢাকা। ঢাকায় তারা নিজেদের রাজনৈতিক শক্তি প্রদর্শন করার জন্য করবে বড় ধরনের এক সমাবেশ। আর এই সমাবেশ এর লক্ষ্যে ইতিমধ্যেই তারা নিয়েছে নানা ধরনের সব ব্যবস্থা। এ দিকে এবার এ নিয়ে ক্ষেপেছেন সরকার দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আমরা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ললিপপ খাবো? আর আপনারা ঢাকা দখল করবেন? হায় আল্লাহ! কত বড় সাহস!
শনিবার (৩ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
এ সময় ওবায়দুল কাদের বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, যেখান থেকে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়েছিল, ৭ মার্চের ঘোষণা, যেখানে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পণ করেছিল, মির্জা ফখরুলের পছন্দ নয়। তিনি পল্টন, ৩৫ হাজার বর্গফুট জায়গা চান। কিন্তু বেগম জিয়া সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনেক কর্মসূচি করেছেন। গত নির্বাচনেও তিনি এখানে জনসভা করেছিলেন।
এসময় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ঠিকাছে?’ নেতাকর্মীরা সমস্বরে বলেন, ‘ঠিকাছে’। এজন্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যান আপনাদের পছন্দ নয়। এখানে নাকি অঘটন ঘটবে? এটা নাকি খাঁচা। ৩৫ হাজার বর্গফুটের পল্টন আপনাদের কাছে নিরাপদ। অঘটন আর কেউ ঘটাবে না। অঘটন ঘটাবেন আপনারাই। আপনারা আগুন নিয়ে আসবেন, বোমা নিয়ে আসবেন, লাঠি নিয়ে আসবেন সেজন্য পল্টন আপনাদের পছন্দ। সেখানে একটি ঘর রয়েছে। সেটিতে মজুত করবে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ফখরুল সাহেব পল্টনকে আওয়ামী লীগ ভয় পায় না। আওয়ামী লীগ আপনাদের অগ্নিসংযোগ ও সন্ত্রাস, হোর্ডিং লাঠিতে ভীত।
এ সময় তিনি মির্জা ফখরুলকে লন্ডনের নির্দেশে দেশে কণ্ঠ না দিতে বলেন। তিনি বলেন, লন্ডনে বৈঠকের নির্দেশে কণ্ঠ দিয়ে কাজ হবে না।
বিএনপির সমাবেশে পরিবহন বন্ধ না করার জন্য পরিবহন মালিক সমিতির নেতাদের সঙ্গে কথা বলে দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘শুধু শুনেছি বিএনপির নেতা-কর্মীরা বিছানা, বালিশ, শীতের কম্বল ও মশারি দিয়ে তাঁবু তুলছেন। কয়েল।” এত তাড়াতাড়ি আসার কি দরকার? আর তত্ত্বাবধায়ক থাকবে না, সংবিধান পরিবর্তনের সুযোগ থাকবে না। আমি পরিবহন মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দকে যানবাহন বন্ধ না করার জন্য অনুরোধ করেছি। তারা আরও বলেছে গাড়ি থামাও না। তাহলে ভয় কিসের? ছাত্রলীগের সম্মেলন আনা হয়েছে ৬ তারিখে। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আপনার ধারে কাছেও যাবে না।
গণমাধ্যমের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘কিছু মিডিয়া তাদের (বিএনপি) বন্ধু, তারা আমাদের খবর দেয় না। এত বড় জমায়েত, কিন্তু কোনো ছবি দেখি না। তবে মির্জা ফখরুল এখানে দাঁড়িয়ে বক্তব্য দিলে পুরো ছবিই কোনো না কোনো গণমাধ্যমে উঠে যেত। আমাদের ভালো লাগে না আমি ঢাকা ক্লাবের সাথে কথা বলেছি, অনুরোধ করেছি আমরা আর চাই না। আমাদের প্রাপ্য কভারেজ দিন। আমরা দোয়া চাই, কিন্তু দুআ আমাদের দেয় না।’
এসময় ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কমিটি একসঙ্গে ঘোষণা হবে বলেও জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, এ দিকে ঢাকায় সমাবেশের আগেই শুরু হয়েছে নানা ধরনের অস্থিরতা। জানা গেছে বিশেষ এক অভিযানে নেমেছে পুলিশ। আর এই অভিযান চলবে আগামী ১৫ তারিখ পর্যন্ত। এ নিয়ে বিএনপি নেতারা বলছেন মূলত তাদের দমন করার জন্যই সমাবেশের আগে এমন অভিযান শুরু করেছে সরকার।