গত মাস দুই আগে দেশের বেশ কয়েকটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় মেজবাউর রহমান সুমনের পরিচালিত সিনেমা ‘হাওয়া’। যা এরই মধ্যে জায়গা করে নিয়েছে কোটি ভক্তদের মাঝে। কিন্তু এরপরও সিনেমাটি নিয়ে যেন শেষ নেই আলোচনা-সমালোচনার। ইতিমধ্যে ‘হাওয়া’র বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়েছে এক মামলাও। একই সঙ্গে ‘শনিবার বিকেল’ ছবির মুক্তি আটকে রাখার ঘটনায় সরব শোবিজ অঙ্গন।
প্রতিবাদ জানাতে সম্প্রতি দেশের দেশের নির্মাতা, শিল্পী ও কলাকুশলীরা জানিয়েছেন সম্মিলিত প্রতিবাদ।
এদিকে এবার এক আলোচনা অনুষ্ঠানে শিল্প সংস্কৃতির উপর চাপিয়ে দেয়া নানা খড়গের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, মেজবাউর রহমান সুমন ও অভিনেত্রী জয়া আহসান। কথা বলার পাশাপাশি তারা অংশ নেন ‘টু দ্য পয়েন্ট’-অনুষ্ঠানে।
‘শনিবার বিকেলে’ সেন্সর বোর্ডের সিদ্ধান্তে হতাশ নির্মাতা মোস্তফা সরিয়ার ফারুকী। নির্মাতা সূত্রে জানা গেছে, প্রায় সাড়ে তিন বছর ধরে ছবিটি আটকে রাখা হয়েছে বিনা কারণে। সেন্সর বোর্ড কেন ছবিটি মুক্তি দিতে দিচ্ছে না তা এখনো জানেন না এই গুণী নির্মাতা।
এই বিষয়গুলো আলোচনায় এলে ফারুকী বলেন, “দুর্ভাগ্যবশত, প্রতিটি ছবির জন্য আমাকে সেন্সর বোর্ডের সঙ্গে লড়াই করতে হয়েছে। আমার নির্মিত ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ প্রায় দেড় বছর সেন্সর বোর্ডে আটকে ছিল। সেটা ছিল বিএনপির আমল। সেন্সর বোর্ডের ক্ষেত্রে বিএনপি-আওয়ামী লীগ, উভয় সরকারই আমাকে সমানভাবে ভালোবাসে। ‘থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নম্বর’ প্রায় ১১ মাস ব্লক ছিল, ‘ডুব’ প্রায় দেড় বছর ব্লক ছিল। আর ‘শনিবার বিকেল’ প্রায় সাড়ে তিন বছর ধরে আটকে আছে।”
ক্ষোভ প্রকাশ করে নির্মাতা আরও বলেন,, “যারা এখানে (সেন্সর বোর্ড) বসে আছেন, তারা যে চোখ দিয়ে সিনেমা দেখেন- তাদের চোখ দিয়ে তো আমরা সিনেমা বানাই না। আমরা নতুন ভাষায় সিনেমা বানাই, আমরা চাই সেই সিনেমাটি নতুন দর্শকদের সঙ্গে সিনেমার নতুন ভাষা নিয়ে সংলাপ করুক। এখন যারা সেন্সর বোর্ডে বসেন, তারা আগে যে সিনেমাগুলো দেখছেন সেগুলোর সঙ্গে হয়তো মিলবে না, আমাদের নতুন ভাষায় এই সিনেমাগুলো। তখন তারা ভাবতে পারে, এটা কি দেখানো যায়!”
আলোচনার একপর্যায়ে সেন্সর বোর্ড ব্যবস্থা বাতিলের কথাও বলেন ফারুকী। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “সেন্সর বোর্ড প্রথা বাতিল করে গ্রেডিং সিস্টেম চালু করতে হবে। যেমনটা সারা বিশ্বে আছে।”
বিভিন্ন সময়ে সিনেমার ওপর যে অদৃশ্য চাপ নেমে আসে তা সবাই একসঙ্গে থাকলে ‘কাটিয়ে ওঠা’ সম্ভব বলেও মনে করেন পরিচালক।
ফারুকী বলেন, “আমরা যদি সবাই এক হয়ে দাঁড়াই, তবে সেন্সরের চাপিয়ে দেয়া খড়গ, হামলামামলা- এগুলো আমাদের উপর বেশিদিন রাখতে পারবে না। আমরা সরকারকে বলতে চাই, নির্মাণের মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে কাজ করছি, পেছন থেকে টান দিয়ে ধরতে নয়। তাই সরকারের উচিত আমাদের সমর্থন করা, বাধা না দেওয়া।
এর আগেও এ সিনেমাটি নিয়ে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন ঢাকাই সিনেমার এক ঝাক তারকারা। অনেকেই দাবি করেছেন, শিল্প ইন্ডাস্ট্রিকে আরও এগিয়ে সরকারের উচিত তাদের সমর্থন করা।