Friday , September 20 2024
Breaking News
Home / Countrywide / হানিফের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ, এমপি মনোনয়ন পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে কোটি কোটি টাকা দাবি

হানিফের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ, এমপি মনোনয়ন পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে কোটি কোটি টাকা দাবি

আবু হানিফ তুষার ওরফে হানিফ মিয়া বিভিন্ন সংসদীয় আসনের প্রার্থীদের নাম ও মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করতেন। এরপর যাদের মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা কম তাদের টার্গেট করতেন তিনি। যোগাযোগের সময় তিনি নিজেকে প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ আত্মীয় পরিচয় দিয়ে কারো কাছ থেকে ৫০০ কোটি, কারো কাছ থেকে ২০০-৩০০ কোটি টাকা দাবি করতেন। দামি গাড়ি নিয়ে দামি হোটেলে দেখা করতে যেতেন।

হানিফের কর্মকাণ্ডের কারণে ইতোমধ্যে ১০ থেকে ১১ জন প্রার্থী তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। শুধু সংসদ সদস্যদের মনোনয়ন নয়, দেশের অনেক এলাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ বা পদোন্নতির আশ্বাস দিয়ে তিনি বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তার কাছে মোটা অংকের টাকা দাবি করতেন।

তিনি বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলে পদ, বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে সাধারনের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা আত্মসাৎ করে ৩০ জনের বেশি লোককে চাকরি দেওয়াসহ প্রতারণার মাধ্যমে পাঁচ কোটির বেশি টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও গোয়েন্দা তৎপরতার ভিত্তিতে মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) রাতে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে আবু হানিফ তুষার ওরফে হানিফ মিয়াকে (৩৯) গ্রেপ্তার করে র‌্যাব-১ এর একটি দল।

এ সময় তার কাছ থেকে একটি আগ্নেয়া”স্ত্র, গু’লি, প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত গাড়ি এবং বিভিন্ন ভিডিও ও এডিট করা ছবি উদ্ধার করা হয়। তার বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা এলাকায়।

বুধবার (১৮ অক্টোবর) রাজধানীর র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, আবু হানিফ দীর্ঘদিন ধরে প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের ঘনিষ্ঠ আত্মীয় এবং ভুয়া পরিচয় ও সুসম্পর্ক দাবি করে নানা ধরনের প্রতারণা করে আসছিল। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশের বিভিন্ন সংসদীয় আসনে মনোনয়ন পাওয়ার মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তির কাছে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করে আসছিলেন।

প্রতারণার জন্য সে সবসময় নতুন কৌশল অবলম্বন করত। এমনকি তিনি নিজে বা চক্রের অন্য সদস্যরা দেশে ও দেশের বাইরে বিভিন্ন বেনামী মোবাইল নম্বরে প্রধানমন্ত্রীর নামে বার্তা আদান-প্রদান করতেন। আড্ডায় তিনি আসন্ন সংসদ নির্বাচনে রাজ্যের প্রার্থী ও গুরুত্বপূর্ণ পরিবারের সদস্যদের নাম বাঁচাতেন।

কমান্ডার মঈন জানান, প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অ্যাপ থেকে নিয়োগ ও পদোন্নতি, সরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি এবং তাদের চক্রের সদস্যদের সঙ্গে বিভিন্ন অংকের টাকা দাবি করে বার্তা আদান-প্রদান করত। বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের জন্য, তিনি প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের সদস্যদের সাথে নিজের ছবি এডিট করে টার্গেট করা ব্যক্তির কাছে পাঠাতেন, প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের সদস্যদের তাদের নিকটাত্মীয়দের সাথে সুসম্পর্ক রয়েছে বলে মিথ্যা দাবি করে।

তিনি বিভিন্ন রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতেন এবং কৌশলে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে ছবি তুলতেন এবং তার টার্গেট ব্যক্তির কাছে তা দেখিয়ে পাঠাতেন।

তার বিরুদ্ধে অ”স্ত্র ও মা”দক সংক্রান্ত একাধিক মামলা রয়েছে এবং একাধিক মামলায় তিনি জেল খেটেছেন।

এক প্রশ্নের জবাবে র‌্যাবের মুখপাত্র বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় আমরা জানতে পেরেছি হানিফ ১০-১২ জনকে মনোনয়ন দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। ২০১৫ সালে, যে ব্যক্তির পিএস হিসেবে কাজ করতেন, তাকেও মনোনয়ন পাইয়ে দেওয়ার কথা বলেন। তিনি এভাবে মনোনয়ন পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেছেন।

র‌্যাবের এই কর্মকর্তা জানান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশপাশের ছবি দীর্ঘদিন ধরে এডিট করা হয়েছে। তিনি নিজেকে বিশ্বাসযোগ্য করার জন্য সেগুলো তৈরি করেছেন। এডিট করা এসব ছবি দেখিয়ে তিনি অনেকের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করেন। এসব ছবি দেখিয়ে এবং প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ আত্মীয় হওয়ায় তিনি কার্যালয়ের বিভিন্ন কর্মকর্তার সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পান। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে তিনি অভিনব কৌশল অবলম্বন করে পরিচিতি পান। তিনি কয়েকটি টিভি চ্যানেলেও গিয়েছিলেন। এভাবে তিনি বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করেন। যারা এ ধরনের প্রতারণা করছে তাদের বিরুদ্ধে র‌্যাবের গোয়েন্দা নজরদারি রয়েছে।

 

About bisso Jit

Check Also

আ.লীগ ও তৃণমূল থেকে বিএনপিতে যোগদানের হিড়িক

নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ ও তৃণমূল বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে বিএনপিতে যোগদানের প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফ্যাসিবাদী আওয়ামী …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *