মানিকগঞ্জের সরকারি দেবেন্দ্র কলেজের মহিলা হোস্টেলে বিশৃঙ্খলা ও চাঁদাবাজি করতে গিয়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছাত্রদের কাছে হাতে নাতে ধরা খেলেন কলেজ ছাত্রলীগের ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক জেরিন বিশ্বাস। হোস্টেল ও কলেজের শিক্ষার্থীরা জানান, জেরিন বিশ্বাস আজ হঠাৎ করে মাত্র দুই দিনের জন্য ছাত্রী হোস্টেলে এসে তার নির্ধারিত ৩০৮ নম্বর কক্ষে চলে যান। সে ইতোপূর্বে ছাত্রীদের নিকট থেকে ওয়াইফাই, সংগঠন খরচ, ব্যানার বানানো, লিফলেট বিলি, সংগঠনের নেতা-কর্মীদের নাস্তা খরচ, মিছিলের খরচসহ বিভিন্ন সময় বিভিন্ন নামে সাধারণ ছাত্রীদের থেকে জোর করে চাঁদা তুলতো। কেউ দিতে না চাইলেই তার উপর নেমে আসতো নির্যাতন ও ছাত্রলীগ নেতাদের দিয়ে নানান রকমের হয়রানি।
কলেজের ছাত্রী আসমানী নূর জানান,কলেজের ছাত্রী আসমানী নূর বলেন, আজ ছাত্রলীগ নেত্রী জেরিন হোস্টেলে এসে কয়েক জন ছাত্রীর নিকট আগামী কালের শোক দিবসের কথা বলে ১০০ টাকা করে চাঁদা নেয় এবং আগামীকাল কিভাবে শোক দিবসে মাঠে নামা যায় সেই বিষয়ে কয়েকজনের সাথে আলাপ-আলোচনা করে। সাধারণ শিক্ষার্থীরা বৈষম্য বিরোধী ছাত্রনেতাদের জানালে শিক্ষার্থীরা তাকে টাকাসহ হোস্টেলে আটকে রাখে। এ সময় তার মোবাইল ফোনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের তালিকা দেখা যায়।
ওই তালিকা সে জেলা ছাত্রলীগে সভাপতি সিফাত কোরাইশী সুমনের সাথে কথা বলে জানিয়ে দেয়। তার মোবাইল চেক করে আগামীকাল ১৫ আগস্টের কর্মকাণ্ডের বিভিন্ন তথ্য ও প্রমাণ পাওয়া যায়। শিক্ষার্থীরা তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে তার অপরাধ স্বীকার করে। ছাত্ররা তাকে কান ধরে উঠবস করিয়ে কলেজের অধ্যক্ষের কাছে নিয়ে যায়। পরে তিনি পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন। তার বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মোঃ ফরিদ হোসেন বলেন, আগামীকালকের যেকোনো ষড়যন্ত্র রুখে দেব। আমাদের ভাই ও বোনেরা সবসময় প্রস্তুত। শিক্ষার্থীরা জানায়, জেরিনের গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জ শহরের নিকটেই তার হোস্টেলে না থাকলেও চলে। সে মূলত প্রভাব বিস্তার ও নানান ভাবে চাঁদাবাজি করার জন্যেই হোস্টেলে অবস্থান করতো। সে ওয়াই ফাই বিল বাবদ ৫০০০ টাকা নিতো ছাত্রীদের নিকট থেকে। কিন্তু বিল দিতো মাত্র ৩০০ টাকা।
তিনি ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ নেতাদের সঙ্গে অশালীন ও অশ্লীল আচরণ করতেন বলেও অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা। তার বেপরোয়া আচরণ ও অসামাজিক কার্যকলাপ নিয়ে কেউ কথা বলতে পারেনি। শহরের অদূরে নলী ইউনিয়নের কুন্দুরিয়া গ্রামের মোঃ শাপলু বিশ্বাসের মেয়ে জারিন বিশ্বাস দেবেন্দ্র কলেজে বিএসএস (অর্নাস) তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা এ সময় ছাত্রলীগকে সহযোগিতার জন্যে দেবেন্দ্র কলেজের অধ্যক্ষ ড. রেজাউল করিমসহ বেশ কিছু শিক্ষককে দায়ী করে কথা বলেন। ছাত্রসমন্বয় নাহিদ মনির বলেন, ফ্যাসিবাদী-সস্ত্রাসী ছাত্রলীগকে সরকারি দেবেন্দ্র কলেজ সহ পুরো জেলায় অবাঞ্চিত ও নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে আর কোনোভাবেই দাড়াতে দেয়া হবে না।