যশোরে কারাগারে থাকা যুবদলের এক নেতাকে ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। হৃদরোগে আক্রান্ত হলে তাকে কারাগার থেকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তাকে ডাণ্ডাবেড়ি পরিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ স্বজনদের।
পরিবারের অভিযোগ, খাওয়ার সময়ও তার হাতকড়া খোলা হয়নি। তাকে তার স্বজনদের সাথে দেখা করতে দেওয়া হয়নি।
তার নাম আমিনুর রহমান মধু। তিনি যশোর জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি। একই সঙ্গে তিনি সদর উপজেলার দেওয়ারা ইউনিয়নের আহমেদাবাদ ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক। ২ নভেম্বর বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার ডাণ্ডাবেড়ি পরা একটি ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। এরপর থেকেই এমন আচরণের জন্য চলছে সমালোচনা। বিএনপি নেতারাও একে ‘মানবাধিকার লঙ্ঘন’ বলে অভিহিত করেছেন।
এ বিষয়ে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলা প্রশাসক মো: শরিফুল আলম বলেন, আমিনুর রহমান যশোরের কোতয়ালী থানার একটি মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আসেন। তার হার্টে আগেই রিং পরানো ছিল। কারাগারে আসার পর হৃদরোগে আক্রান্ত হলে তাকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ও পরে ঢাকায় নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসা শেষে আজ ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তাকে যশোর পাঠানো হয়।
শরিফুল আলম বলেন, কোনো আসামিকে কারাগার থেকে বের করে নিয়ে গেলে নিরাপত্তার স্বার্থে কারাবিধি অনুযায়ী তাদের ডাণ্ডাবেড়ি পোড়ানো হয় । কোনো আসামি অসুস্থ হলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এখানে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয় না।
জানা গেছে, গ্রেপ্তারের পর ১২ নভেম্বর যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে থাকা অবস্থায় আমিনুর হৃদরোগে আক্রান্ত হন। কারাগার থেকে তাকে প্রথমে দুই পায়ে শিকল ও হাতকড়া পরিয়ে যশোরের ২৫০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় রাতেই তাকে ঢাকার কেরানীগঞ্জ কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। পরদিন ১৩ নভেম্বর কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে তাকে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালের মেঝেতে তার পায়ে শিকল দিয়ে এবং ডান হাতে হাতকড়া পরিয়ে চিকিৎসা করা হয়।
বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগ) অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন, আমিনুর রহমান মধুকে জামিন না দেওয়া এবং তাকে চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করা মানবাধিকারের লঙ্ঘন।
যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম এ গফুর বলেন, বিষয়টি খুবই আবেগঘন। হৃদরোগে আক্রান্ত ব্যক্তির এমন ডাণ্ডাবেড়ি পরিয়ে চিকিৎসা করা মোটেও সমীচীন নয়। আইন-আদালত মানুষের কল্যাণের জন্য, তাদের অকল্যাণের জন্য নয়।