বার্ধক্যজনিত কারণে গত রোববার (১৮ ডিসেম্বর) না ফেরার দেশে পাড়ি জমান গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার বোয়ালী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. আলী আজমের মা সাহেরা বেগম। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৭ বছর। এদিকে মায়ের মৃত্যুর খবরে গতকাল মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) প্যারোলে মুক্তি পাওয়ার পর হাতকড়া আর ডান্ডাবেড়ি নিয়েও মায়ের জানাজা পড়ান এই বিএনপি নেতা।
নিহতের স্বজনরা জানায়, মায়ের মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে শেষ বার মাকে দেখতে ও মায়ের জানাজা নিজে পড়াতে তার আইনজীবী গত সোমবার তার প্যারোলে মুক্তি চায়। আদালত সেদিন তাকে মুক্তি না দিলেও মঙ্গলবার তিন ঘণ্টার জন্য তার প্যারোলের আবেদন মঞ্জুর করেন। পরে তিনি প্যারোলে মুক্তি পান এবং হাতকড়া ও শিকল পরা অবস্থায় তার বাড়ির কাছে তার মায়ের জানাজা আদায় করেন।
এমনকি শেষকৃত্যের সময়ও তার হাতে থাকা হাতকড়া ও পায়ের শেকল অপসারণ করা হয়নি বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। জানাজায় উপস্থিত লোকজন এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সেই অবস্থায় একটি ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি ভাইরাল হয়ে যায়।
জানাজায় উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি কাজী সৈয়দুল আলম বাবুল, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক পারভেজ আহমেদসহ উপজেলা বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
কালিয়াকৈর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক পারভেজ আহমেদ জানান, মায়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে আলী আজম প্যারোলে মুক্তি পেয়েছেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, শেষকৃত্যের সময়ও তার হাতকড়া ও শেকল সরানো হয়নি।
আলী আজমের ভাই আতাউর রহমান জানান, জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করলে তিনি প্যারোলে মুক্তি পান। কিন্তু জানাজায় ইমামতি করার সময় পুলিশ তার হাতকড়া ও হাতকড়া অপসারণ করেনি। ২ ডিসেম্বর পুলিশ তাকে রাজনৈতিক মামলায় গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠায়।
এ বিষয়ে গাজীপুর জেলা কারাগারের সুপার মোহাম্মদ বজলুর রশীদ বলেন, আলী আজমকে ৯ পুলিশ সদস্যসহ তার বাড়িতে পাঠানো হয়েছে। সরকারের উচ্চপর্যায়ের নির্দেশনা ও জেল আইন অনুযায়ী তাকে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে সংবাদ মাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করে কালিয়াকৈর থানার ওসি আকবর আলী খান জানান, মায়ের মৃত্যুর খবরে প্যারোলে মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর ওই বিএনপি নেতাকে প্রক্টেসন দিয়ে নিয়ে আসেন তারা। তবে হাতকড়া এবং ডান্ডাবেড়ি খুলে দেয়ার দায়িত্ব তাদের নয় বলেও জানান তিনি।