ঝালকাঠি কারাগারের জেলার মোঃ আক্তার হোসেন শেখের বিরুদ্ধে এক বন্দীর স্ত্রীকে বিভিন্নভাবে কু-প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে বিচার চেয়ে কারা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী নারী সুমাইয়া আক্তার।
গত ৩০ আগস্ট ঢাকায় অভিযোগপত্র পাঠানো হয়েছে বলে গণমাধ্যমকে জানান সুমাইয়া। তিনি বলেন, ‘আমার স্বামী মো. মামুনুর রশিদ একটি মামলায় ঝালকাঠি কারাগারে থাকার সুবাদে জেলারের সাথে আমার পরিচয়।
তিনি আমাকে ডেকে অশালীন কথা বলেন, কু-প্রস্তাব দেন। এমনকি তিনি আমার সাথে রাত কাটানোর ইচ্ছাও প্রকাশ করেন। ‘
তিনি আরও বলেন, ‘তিনি (জেলার) আমাকে হুমকি ও ভয় দিয়ে বলেন যে, তিনি আমাকে আমার স্বামীর সাথে দেখা করতে দেবেন না এবং আমি যদি তার অনৈতিক প্রস্তাবে রাজি না হই তবে তাকে জেলখানায় কষ্ট দেবে।
আক্তার হোসেন শেখের কু-প্রস্তাব ও অশালীন আচরণের অভিযোগে মোঃ সুমাইয়া লিখেছেন, ‘একটি মামলায় চলতি বছরের ২৯ জুলাই আমার স্বামীকে জেল হাজতে পাঠায় আদালত। পরদিন ৩০ জুলাই স্বামীর সাথে দেখা করার জন্য আমি কারাগারে যাই। কিন্তু দেখা করতে পারিনি। ঐদিনই জেলার মো. আক্তার হোসেন শেখ এর সরকারি নম্বরে (০১৭১৯***৮৫১) কল করে স্বামীর সাথে দেখা করার কথা জানাই। তিনি আমাকে আমার স্বামীর সাথে দেখার ব্যবস্থা না করিয়ে ফোনে কথা বলার ব্যবস্থা করে দেন। ‘
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, ‘ওই দিন থেকে জেলার আক্তার হোসেন আমার নম্বরে নিয়মিত ফোন করতে থাকেন। তিনি আমার কাছে আমার হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর চেয়েছিলেন যে তিনি প্রতিদিন আমার স্বামীর সাথে কথা বলিয়ে দিবেন। এরপর জেলার আমার সঙ্গে ভিডিও কলের মাধ্যমে অশালীন আলোচনা শুরু করেন। সে আমার সাথে রাত কাটানোর ইচ্ছা প্রকাশ করে। সে (জেলার) আমাকে ভয় দিয়ে বলেন যে, সে আমাকে আমার স্বামীর সাথে দেখা করতে দেবেন না এবং আমি যদি তার অনৈতিক প্রস্তাবে রাজি না হই তাহলে তাকে জেলে কষ্ট দেওয়া হবে। ‘
ভুক্তভোগী সুমাইয়া আক্তার বলেন, ‘আমি প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় জেলার আমাকে গেটে আমার স্বামীর সঙ্গে দেখা করতে নিষেধ করে দিয়েছেন। সকাল-বিকাল দুই শিশুকে নিয়ে জেলের গেটে দাঁড়িয়ে থাকি। গত ৩০ আগস্ট আমি জেলগেটে গেলে এক কারারক্ষী আমার স্বামীর সঙ্গে দেখা করতে দুই হাজার টাকা ঘুষ দাবি করে। আমি তাকে টাকা দিতে না পেরে বাড়ি ফিরে আসি।
ঝালকাঠি জেল সুপার মিলন চাকমা জানান, এ বিষয়ে কারা অধিদপ্তরে অভিযোগ পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে বরিশাল বিভাগীয় কারাগারের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মোঃ জাহাঙ্গীর কবির বলেন, বিষয়টি শুনেছি, ঘটনা সত্য হলে সেটা লজ্জাজনক ও দুঃখজনক। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।