বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এক ব্রিটিশ অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোরীকে জোড়পুর্বক বিয়ে দিতে চায় এমনই এক অভিযোগ করেছে মায়ের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী প্রবাসী কিশোরী নিজেই। ভুক্তভোগীর মা সিলেটের বাসিন্দা, তার মায়ের জোরপুর্বক এই বিয়ের হাত থেকে বাচঁতে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায় উক্ত কিশোরী। ওই কিশোরী গণমাধ্যমকে জানায়, জোরপূর্বক বিয়ে এড়াতেই বাড়ি থেকে সে পালিয়ে আসছে এবং এ বিষয়ে ঢাকায় ব্রিটিশ হাইকমিশনের কাছে বিভিন্ন পর্যায়ে সহায়তা চেয়েছে।
সিলেটের ওসমানী নগরের ১৫ বছরের এক কিশোরীকে তার মা জোর করে বিয়ে দিতে চাওয়ার অভিযোগে উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হয়েছে সে। ওই কিশোরী ব্রিটিশ ও বাংলাদেশি নাগরিক। কিশোরী আর মায়ের কাছে থাকতে চান না। ইংল্যান্ডে ফিরে যেতে চান। হাইকোর্ট কিশোরী সম্পর্কে বিস্তারিত শুনে আইনজীবীকে এ বিষয়ে যথাযথ আবেদন নিয়ে আসতে বলেছেন। বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি সাহেদ নূর উদ্দিনের হাইকোর্ট বেঞ্চ গত বৃহস্পতিবার এ পরামর্শ দিয়েছেন। এদিকে ওই কিশোরীকে অপহরণের অভিযোগ সিলেট ওসমানী নগর থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। মামলায় কিশোরীকে আশ্রয় দেওয়া সমাজ সেবিকা শারমিন আক্তারসহ তার পরিবারের ৭ জনকে আসামি করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার ওই ৭ আসামিকে আগাম জামিন দিয়েছেন আদালত। কিশোরীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট পুর্ণিমা জাহান গনমাধ্যমলে বলেন, মেয়েটির বয়স ১৫ বছর।
তার মা চাচ্ছেন এখনই বিয়ে দিতে। কিন্তু ওই কিশোরী রাজি নয়। বিয়ে দেওয়ার প্রতিবাদ করায় তার মা তাকে বেদম প্রহর করেন। তখন সে বাসা থেকে পালিয়ে তার মেয়ে বন্ধুর বাসায় আশ্রয় নেয়। বান্ধবীর মা শারমিন আক্তার একজন সমাজ সেবিকা। তিনি কিশোরীকে আশ্রয় দিয়েছেন এবং আইনজীবী নিয়োগ, ব্রিটিশ হাই কমিশনের সঙ্গে যোগাযোগসহ নানান ধরনের সহযোগিতা করছেন। এ কারণে শারমিন আক্তারসহ তার পরিবারের ৭ সদস্যের বিরুদ্ধে অপহরণের মামলা করেছেন কিশোরীর মা। হাইকোর্ট তাদের সবাইকে আগাম জামিন দিয়েছেন। জামিন শুনানির সময় আমি হাইকোর্টের সামনে পুরো ঘটনা বলেছি। তাকে জোর করে বিয়ে দেওয়ার চেষ্টার কথা বলেছি। সে ব্রিটিশ নাগরিক। ওই দেশে সে চলে যেতে চায়, সেকথা বলেছি। আদালতকে ১৫ বছরের কিশোরী বলেছে, সে স্বেচ্ছায় তার বান্ধবীর পরিবারের সঙ্গে রয়েছে। নিজের আত্মরক্ষার জন্য সে বান্ধবীর পরিবারে আশ্রয় নিয়েছে। সে মায়ের কাছে থাকতে চান না। ইংল্যান্ডে চলে যেতে চান।
কিশোরীর আইনজীবীর অনুমতি সাপেক্ষে ছবিটি প্রকাশ করা হলো সব শুনে আদালত বলেছেন, যেহেতু আজকের মামলাটি আগাম জামিনের। তাই এসব বিষয় নিয়ে আলাদা একটি আবেদন করতে বলেছেন। তখন আদালত বিষয়টি দেখবেন। আইনজীবী আরও বলেন, গত সপ্তাহে লন্ডন লোয়ার কোর্ট অব জাস্টিস বাংলাদেশের ব্রিটিশ হাই কমিশনকে অনুরোধ করেছেন মাহমুদার বিষয়টি বাংলাদেশের আদালতে নজরে আনার। মাহমুদাকে ইংল্যান্ডে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করতে অনুরোধ করেছেন। লন্ডনের কনসার্ন অথরিটি যারা বাল্য বিয়ে প্রতিরোধ নিয়ে কাজ করে তারা বেশ কিছু অর্ডার সেখানকার আদালত থেকে নিয়েছেন। অ্যাডভোকেট পুর্ণিমা জাহান বলেন, কিশোরীর বয়স ১৫ বছর।
সে এখনও মাইনর। তাই এখানে অনেকগুলো ব্যাপার আছে। তার কাস্টডি কে নেবে। ইংল্যান্ডে গিয়ে সে কার কাছে থাকবে। তার স্কুলের বিষয় আছে। ইংল্যান্ড সরকার তার সেফটি এবং সিকিউরিটির জন্য কি ধরনের ব্যবস্থা নেবে। সবগুলো বিষয় কোর্টের নজরে আনবো। ওই কিশোরীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সিলেটের ওসমানী নগরের বাসিন্দা ব্রিটিশ নাগরিক তার বাবা ৬টি বিয়ে করেছেন। তার মা সবার ছোট। বাবার বয়স ১০০ বছর পার হয়ে গেছে। বাবার বিট্রিশ নাগরিকত্বের সুবাদে কিশোরীও ইংল্যান্ডের নাগরিক। জন্মের পর থেকে কিশোরী ইংল্যান্ড ও বাংলাদেশে আসা যাওয়ার মধ্যে ছিলেন। কিশোরী ও তার আইনজীবীর দাবি, তার মা এক আত্মীয়র সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে লিপ্ত। কিশোরীকে বিয়ে দিয়ে তার মা লাভবান হতে চান। কিশোরী কোনভাবেই তার মার কাছে ফেরত যাবে না। মায়ের কাছে থাকা সে নিরাপদ মনে করছে না।
উল্লেখ্য, জোড়পুর্বক মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করায় বাড়ি থেকে পালিয়ে নিজের এক বান্ধবির বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেন প্রবাসি কিশোরী। কিশোরীর বাবা একজন ব্রিটিশ নাগরীক সেই সুবাধে ভুক্তভোগী কিশোরীও ব্রটিশ নাগরীকত্ত্ব পেয়েছেন। উক্ত কিশোরীর বয়স মাত্র পনেরো বছর। তিনি অপ্রাপ্ত বয়স্ক
হওয়ায় বিয়েতে রাজি না হয়ে বাসা থেকে পালিয়ে গিয়ে নিজের বান্ধবির বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেন। তার বান্ধবির মা একজন সমাজ সেবিকা হওয়ায় তাকে তার দেশে ফিরে যেতে বিভিন্নভাবে সহায়তা করেছেন। অপরদিকে মেয়েকে কোথাও খুজে না পেয়ে পুলিশে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বাসা থেকে পালিয়ে আসা কিশোরীর মা। সেই অভিযোগের ভিত্ত্বিতে কিশোরীকে সাহাজ্য করা কিশোরীর বান্ধবীর মাকে আইনি জটিলতার সম্মুক্ষিন হতে হয়েছিলো।