জাতীয় নির্বাচনে হতাশাজনক ফলাফলের পর পাকিস্তানের তিনটি রাজনৈতিক দলের দলীয় প্রধানরা পদত্যাগ করেছেন। সেই সঙ্গে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা দুই দলের নেতারাও রাজনীতি না করার ঘোষণা দিয়েছেন।
দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) তাদের পদত্যাগের খবর জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইস্তেহকাম-ই-পাকিস্তানের (আইপিপি) প্রধান জাহাঙ্গীর তারিন, পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ পার্লামেন্টারিয়ানের (পিটিআই-পি) কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান পারভেজ খটক ও জামায়াতে ইসলামীর আমির সিরাজুল হক। তারা দলীয় প্রধানের পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। এদের মধ্যে জাহাঙ্গীর তারিন ও পারভেজ খট্টক রাজনীতি ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
তারা দুজনই ইমরান খানের খুব ঘনিষ্ঠ ছিলেন। কিন্তু প্রতিকূল সময়ে ইমরান খানের হাত ছেড়ে দেন তারা। তাদের কারণেই ইমরানকে গ্রেপ্তারের পর পিটিআইকে রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। তারা দল ছেড়ে নিজেদের দল গঠন করে। কিন্তু তাতেও কোনো লাভ হয়নি। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শোচনীয় পরাজয় হয়েছে। দলীয় প্রার্থীরা হেরে গেছেন, এমনকি নিজেরাও। এমন বিপর্যয়ের পর শুধু দলীয় প্রধানের পদই নয়, রাজনীতিও ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
নির্বাচনী প্রচারণার সময় পারভেজ খট্টক জোর গলায় দাবি করেছিলেন তিনিই আবার মুখ্যমন্ত্রী হবেন। আর পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরাও জয়ের পর তার সঙ্গে হাত মেলাবেন। কিন্তু তার ভরাডুবি হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর পদে বসার আশার দুরাশাই থাকল। উল্টো প্রভাবশালী এই নেতা এখন নিজেই ছাড়লেন রাজনীতি।
আরেক নেতা চিনি ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর তারিন নির্বাচনের আগে পিটিআই ছেড়ে ইস্তেহকাম-ই-পাকিস্তান পার্টি (আইপিপি) গঠন করেন। তবে ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনেও তার দল শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয়। তিনি নিজেই মুলতানে পিটিআই সমর্থিত প্রার্থীর কাছে হেরে যান। এছাড়াও তিনি তার জন্মস্থান লোধরানে পিএমএল-এন প্রার্থীর কাছে হেরেছেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স পোস্টে জাহাঙ্গীর তারিন বলেন, নির্বাচনে আমার প্রতিদ্বন্দ্বী বিজয়ীকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। সেই সঙ্গে তিনি শুভাকাঙ্ক্ষী ও নিজের সমর্থকদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমি আইপিপির চেয়ারম্যানের পদ ছেড়ে দেওয়ার পাশাপাশি রাজনীতি থেকেও বিদায় নিচ্ছি। তবে দেশের সমৃদ্ধির জন্য ব্যক্তিগত পর্যায়ে কাজ করে যাব।
এ প্রসঙ্গে পাকিস্তানের সিনিয়র সাংবাদিক লায়েক আলি খান বলেন যে, খাইবার পাখতুনখোয়ায় জনগণ সেই দলগুলোকে প্রত্যাখ্যান করেছে যারা ইমরানের সমালোচনা করেন। অন্যদিকে খট্টকের দলে লজ্জাজনক পরাজয় বরণ করতে হয়েছে। নির্বাচনে ইমরানের মিত্ররা রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী প্রার্থীদের কাছে হেরেছে।