আওয়ামী লীগ প্রার্থী চূড়ান্ত করলেও যথাসময়ে নির্বাচন হওয়া নিয়ে সংশয় রয়েছে বিএনপি নেতাদের। সেই সঙ্গে আন্দোলনের কৌশল পরিবর্তনের কথা ভাবছে দলটি। হরতাল-অবরোধ থেকে বিরতি নিয়ে বিক্ষোভ, সমাবেশ ও আন্দোলন কর্মসূচিতে ফিরতে চান তারা। নেতারা বলছেন, দাবি না মানলে যে কোনো পরিস্থিতির দায়ভার সরকারকেই নিতে হবে।
গত ২৯ অক্টোবর থেকে বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো হরতাল-অবরোধ কর্মসূচি পালন করছে। প্রাথমিক কর্মসূচি বাস্তবায়নে মাঠে নেতাকর্মীদের সক্রিয় অবস্থান দেখা গেলেও দিন যত যাচ্ছে ততই কমছে নেতাকর্মীদের উপস্থিতি। হরতাল-অবরোধের কার্যকারিতাও কমেছে। তাই নেতাকর্মীদের শক্তিশালী করতে কর্মসূচিতে পরিবর্তন চায় দলটি।
তারা লুকিয়ে থাকা নেতাদের জন্য একটি স্বাভাবিক রাজনৈতিক পরিবেশ তৈরি করে শক্তি সঞ্চয় করতে এবং সামনের কঠিন কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তুত করতে চায়। এ কারণে হরতাল-অবরোধে সাময়িক বিরতি নিয়ে বিক্ষোভ, সমাবেশ ও অবরোধ কর্মসূচিতে ফেরার বিষয়ে সমমনা দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা চলছে।
দলটির নেতাদের দাবি, আওয়ামী লীগের একতরফা নির্বাচনকে দেশের মানুষ ভালোভাবে নিচ্ছে না। পরিস্থিতি বিবেচনায় আন্দোলনের কৌশলও পরিবর্তন করা হচ্ছে।
বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন,
পুলিশি পাহারায় আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে নেতাকর্মীরা উল্লাস করছেন; এই যে রাষ্ট্র পরিচালনায় এখন দুই পক্ষ দেখা যাচ্ছে। বিএনপি জনগণের আকাঙ্ক্ষার ভিত্তিতে রাজনীতি করে। তাই আমরা এখন যেভাবে এগোচ্ছি, তাতে হয়তো আমাদের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণে পরিবর্তন আসবে।
ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ প্রার্থী চূড়ান্ত করলেও দাবি পূরণে অনড় বিএনপি। নেতারা বলেন, নির্দলীয় সরকারের দাবি পূরণ না হলে রাজনৈতিক সং/ঘাতের দায় সরকারকেই নিতে হবে।
এ সময় গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন।
আওয়ামী লীগ নির্বাচন করতে পারবে না, করার সুযোগ নেই। বাংলাদেশিরাও তাদের পাত্তা দেয় না। রাজনীতি আরও জটিল হবে, জটিল হলে অর্থনীতি খারাপ হবে। আওয়ামী লীগকে পুরো দায়িত্ব নিতে হবে।
এদিকে সপ্তম দফার অবরোধের প্রথম দিনে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ করেছে বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো। প্রায় এক মাস পর নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে সরে যায় পুলিশ। তবে কেন্দ্রীয় কার্যালয় তালাবদ্ধ।
বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুরে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির পক্ষ থেকে অররোধ ঘোষণা দেন সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। রোববার ও সোমবার সারাদেশে এ কর্মসূচি পালন করছেন তারা। তিনি আরো বলেন, সড়ক, সমুদ্র ও রেলপথে অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হবে।
২৮ অক্টোবর বিএনপির গণসমাবেশে হামলা, হ/ত্যা, নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের প্রতিবাদে বিএনপি-জামায়াত ও তাদের শরিকরা ২৯ অক্টোবর হরতাল এবং ৩১ অক্টোবর, ১ ও ২ নভেম্বর মোট তিনদিনের অবরোধ কর্মসূচি পালন করে। এক দফা দাবি সরকারের পদত্যাগ। এরপর আবার দ্বিতীয় দফায় ৫ ও ৬ নভেম্বর এবং তৃতীয় দফায় ৮ ও ৯ নভেম্বর অবরোধ কর্মসূচি। দলটি ১১ ও ১২ নভেম্বর চতুর্থ দফা, ১৫ ও ১৭ নভেম্বর পঞ্চম দফা এবং ২২ ও ২৩ নভেম্বর। ষষ্ঠ দফা ২৬ ও ২৭ নভেম্বর আবারও অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপি।