সব দলের অংশগ্রহণ ও সুষ্ঠু প্রতিদ্বন্দ্বিতার সুযোগ সৃষ্টি করে নতুনভাবে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের পদক্ষেপ নিতে নির্বাচন কমিশন ও সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ৪০ জন বিশিষ্ট নাগরিক। এক যৌথ বিবৃতিতে তারা নির্বাচনের তফসিল বাতিল এবং সংবিধানের ১২৩ (৩) (খ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহে জাতীয় সংসদ ভেঙে দিয়ে আগামী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানান।
রোববার গণমাধ্যমে পাঠানো ৪০ জন বিশিষ্ট নাগরিকের বিবৃতিতে বলা হয়, এ পদক্ষেপ নেওয়া হলে নির্বাচনকালীন সরকার বিরোধী দলের সঙ্গে সংলাপ, সমঝোতায় পৌঁছানো, অবিলম্বে মুক্তি বা জামিন দিয়ে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও প্রতিযোগিতামূলক হবে। বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে এবং নতুন তফসিল ঘোষণা নির্বাচন পরিচালনার জন্য পর্যাপ্ত সময় ও সুযোগ পাওয়া যাবে।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ৭ জানুয়ারি একতরফা নির্বাচন করতে সরকার ও নির্বাচন কমিশন বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে বলে যৌথ বিবৃতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। এই নির্বাচনের আগে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের নির্বিচারে মামলা, গ্রেফতার, বিতর্কিত মামলায় সাজা ও নি/র্যাতনের মাধ্যমে নির্বাচন; এমনকি রাজনীতির মাঠ থেকেও সরিয়ে দিয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আগামী ৭ জানুয়ারি নির্বাচনে সরকারি দলের মনোনীত প্রার্থীদের সঙ্গে তাদের ডামি প্রার্থী ও অনুগত দলগুলোর প্রার্থীরা নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন। ফলে বাংলাদেশের নাগরিকরা এই নির্বাচনে সঠিক বিকল্প বেছে নেওয়া থেকে বঞ্চিত হবে এবং নির্বাচনের মাধ্যমে প্রকৃত জনপ্রতিনিধি নির্ধারণ করা অসম্ভব হয়ে পড়বে।
বিগত দুটি নির্বাচনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বিবৃতিতে বলা হয়, এ ধরনের কারচুপির নির্বাচনের ফলে সরকারের জবাবদিহিতা বিলুপ্ত হয়েছে, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো দলীয় সরকারের অধীন, অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা ভেঙে পড়েছে এবং আইনের শাসন ও সুশাসন ক্ষুণ্ন হয়েছে।
যৌথ বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও সুজনের সভাপতি, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এম. হাফিজউদ্দিন খান, আবদুল মতিন, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার, সাবেক নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন, মানবাধিকার কর্মী হামিদা হোসেন, সাবেক সচিব সৈয়দ মারগুব মোর্শেদ, সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শাহউদ্দিন মালিক, অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ নজরুল, সুজনের কোষাধ্যক্ষ ও সাবেক ব্যাংকার সৈয়দ আবু নাসের বখতিয়ার আহমেদ, সাবেক রাষ্ট্রদূত এবিএম সিরাজুল ইসলাম, আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সিআর আবরার, শাহনাজ ফেরদৌস ও রোজাদার হোসেন প্রমুখ। . , সাবেক সচিব আব্দুল লতিফ মন্ডল, লেখক রেহনুমা আহমেদ, লন্ডনের সোস ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক স্বপন আদনান, পাওয়ার সেলের সাবেক মহাপরিচালক বিডি রহমতুল্লাহ, ব্রতী শারমিন মুরশিদ, সাংবাদিক কামাল আহমেদ, মানবাধিকার কর্মী নূর খান লিটন, নির্বাহী পরিচালক ড. আইন ও সালিশ কেন্দ্রের ফারুক ফয়সাল, ব্যবসায়ী আব্দুল হক, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তবারক হোসেন, মানবাধিকার কর্মী শিরীন হক, ইস্ট ডেল্টা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইডিইউ চট্টগ্রাম) উপাচার্য মুহাম্মদ সিকান্দার খান, সিনিয়র সাংবাদিক আবু সাঈদ খান, সুজন চট্টগ্রাম জেলা কমিটির সম্পাদক মো. আখতার কবির চৌধুরী, কেন্দ্রীয় মহিলা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পারভীন হাসান, ক্লিনিক্যাল নিউরোসায়েন্স সেন্টার ও বাংলাদেশ ডিসেবিলিটি ফাউন্ডেশনের পরিচালক নায়লা জামান খান, গবেষক মোবাশ্বের হাসান, মানবাধিকার কর্মী হানা শামস আহমেদ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক মাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. ফয়েজ আহমেদ তৈয়ব, মানবাধিকার কর্মী ও গবেষক রোজিনা বেগম।