নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের গ্রামীণ টেলিকম ট্রাস্টকে ৫০ কোটি টাকা জমা দিয়েই আপিল করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্টের।
বৃহস্পতিবার বিচারপতি মোহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকার ও বিচারপতি সরদার রাশেদ জাহাঙ্গীর এ রায় দেন।
এ বিষয়ে ড. ইউনূসের আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে যাচ্ছেন তারা। এর আগে ১২ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের গ্রামীণ টেলিকম ট্রাস্টকে ৫০ কোটি টাকা জমা দিয়ে ২০১১ থেকে ২০১৩ কর বছরের জন্য আয়কর আপিল করার নির্দেশ দেন।
গত ২৮ জানুয়ারি আদালতে হাজির হয়ে শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় শ্রম আপিল আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আবেদন করেন। ইউনূসসহ গ্রামীণ টেলিকমের আরও তিন কর্মকর্তা। হাইকোর্ট আবেদন খারিজ করে দেন।
রায়ে আদালত বলেন, আইন অনুযায়ী ড. ইউনূসকে দিতে হবে এখানে কোন অনুকম্পা দেখানোর সুযোগ নেই।
সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার তাহমিনা পলি জানান, ২০২০ সালের নভেম্বরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড গ্রামীণ কল্যাণ ট্রাস্টকে ২০১১ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত দুই বছরের জন্য প্রায় ২৫০ কোটি টাকা আয়কর দাবি করে নোটিশ পাঠায়। এরপর জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) গ্রামীণ কল্যাণ ট্রাস্টের তহবিল নেই বলে মওকুফ চেয়েছিলেন।
আবেদনটি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) প্রত্যাখ্যান করার পরে, তারা আয়কর মওকুফ চেয়েছিল। কিন্তু তখন তাদের একটি অ্যাকাউন্টে প্রায় ৩৫০ থেকে ৪০০ কোটি টাকা ছিল। কিন্তু জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) টাকা চেয়ে নোটিশ দেওয়ার পর গ্রামীণ টেলিকম ওই নোটিশ চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করে। রিটের শুনানির নোটিশ কেন বেআইনি বলা হবে না, সেই মর্মেও রুল জারি করেছেন আদালত। এরপর গত তিন বছরে মামলাটি বিভিন্ন আদালতে গিয়ে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চে আসে।
আজ শুনানি শেষে আদালত গ্রামীণ টেলিকমের রিট আবেদন খারিজ করে দেন। তিনি গ্রামীণ টেলিকমকে বিধি মোতাবেক দাবিকৃত আয়করের ২৫ শতাংশ অগ্রিম জমা দেওয়ার এবং তারপর এনবিআরের বিরুদ্ধে আপিল করার নির্দেশ দেন।
এর আগে গত ১ জানুয়ারি ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান শেখ মেরিনা সুলতানার বিরুদ্ধে একটি মামলায় মো. ইউনূস ও পরিচালক আশরাফুল হাসান, নূরজাহান বেগম ও এম শাহজাহানকে ৬ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
একইসঙ্গে চারজনকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও ২৫ দিনের কারাদণ্ড দেন আদালত। আর রায়ের পর তারা পৃথক জামিনের আবেদন করলে আপিলের শর্তে চারজনকেই জামিন দেন আদালত।
২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে মামলাটি দায়ের করেন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের শ্রম পরিদর্শক (সাধারণ) এস এম আরিফুজ্জামান।