লক্ষ্মীপুর-৩ (সদর) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী এম এ সাত্তারের (ট্রাক প্রতীক) পক্ষে কাজ করায় আওয়ামী লীগের ১১ নেতাকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) রাত ১০টার দিকে চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কাশেম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াহাব স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। ভবিষ্যতে তারা দলীয় কোনো পদে প্রার্থী হতে পারবেন না বলেও সিদ্ধান্ত হয়।
মুক্তিপ্রাপ্ত নেতারা হলেন- চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অহিদুজ্জামান বেগ বাবলু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন পাটোয়ারী, কোষাধ্যক্ষ হারুনুর রশিদ পাটোয়ারী, শ্রম সম্পাদক নাছির পাটোয়ারী, সাংস্কৃতিক সম্পাদক হুমায়ুন কবির, সদ্য সামছুল আলম বাবুল পাটওয়ারী, নুরুল আমিন, সোহরাব হোসেন রুবেল পাটওয়ারী, লোকমান মাস্টার, ও মো. খালেদ।
এর আগে গত ১৯ ডিসেম্বর মান্দারী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ মাসুদকে দলীয় পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী মঙ্গলবার সকালে চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওহাবের ব্যক্তিগত কার্যালয়ে এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন কমিটির সভাপতি আবুল কাশেম। অসন্তুষ্ট নেতারা দলীয় কর্মকান্ডে, দলীয় গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন ও অনৈতিক কর্মকান্ডে লিপ্ত রয়েছেন। সংবিধানের ৪৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ১০ নেতাকে দলীয় পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তারা আগামীতে আওয়ামী লীগের কোনো কমিটিতে প্রার্থী হতে পারবেন না।
এদিকে আহত নেতা ও মান্দারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন রুবেল পাটোয়ারী ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। থানা কমিটির নেতাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ারও হুমকি দেন তিনি।
স্ট্যাটাসে বলা হয়েছে, খুব শিগগিরই আপনার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। থানা কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে থানা কমিটির কোনো নেতাকে বরখাস্ত করার এখতিয়ার আপনার নেই। নিশ্চয়ই আপনি আওয়ামী লীগের শত্রু, শেখ হাসিনার শত্রু। একটি সুন্দর অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের উদ্বুদ্ধ করছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি বিএনপি-জামায়াতের এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য ভোটারবিহীন নির্বাচন পরিচালনা করে দলের পরীক্ষিত নেতা-কর্মীদের অসম্মান করছেন।
যুগ্মসাধারণ সম্পাদক পদ থেকে অব্যহতিপ্রাপ্ত নেতা মোশারফ হোসেন পাটওয়ারী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের বিষয়ে উম্মুক্ত করে দিয়েছেন৷ দল থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী বা দলীয় কর্মীদের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার কোনো নির্দেশনাও নেই। সম্মেলনের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় নেতারা আমার নাম ঘোষণা করছেন। আমাকে অব্যাহতি দিতে হলে জেলা কমিটি কেন্দ্রে সুপারিশ করবেন। কেন্দ্র আমাদেরকে অব্যহতি দিতে পারবেন। থানা আওয়ামী লীগের দুই নেতা কোনোভাবেই আমাকে অব্যহতি দিতে পারবেন না।
সহসভাপতি পদ থেকে অব্যহতিপ্রাপ্ত নেতা অহিদুজ্জামান বেগ বাবলু বলেন, ফেসবুকে দেখেছি আমাদেরকে অব্যহতি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কেন্দ্র থেকে কোনো সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়নি যে, নেতাকর্মীরা স্বতন্ত্রের পক্ষে করতে পারবে না। বহিষ্কার বা অব্যাহতির নির্দেশনাও নেই। এ ব্যাপারে কি ব্যবস্থা নেওয়া যায় তা নিয়ে আমরা বসবো।