পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপির এখন কোনো রাজনীতি নেই। নির্বাচনে অংশ না নিয়ে তাদের নেতারা যে বিরাট ভুল করেছিলেন, তা ছিল তাদের আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত, যা কারণে কর্মীদের কাছে তারা এখন প্রশ্নবিদ্ধ। তাদের কর্মীরা এখন খুবই হতাশ, সেই হতাশা কাটিয়ে উঠতে তারা নানা বক্তৃতা ও নানা কর্মসূচির পরিকল্পনা করে প্রমাণ করার চেষ্টা করছেন যে তারা এখনও বেঁচে আছেন।
তিনি বলেন, আসলে বিএনপির দু-তিনজন নেতা টেলিভিশনে কথা বলেন, শুধু তারাই আছেন, অন্য কোথাও বিএনপির কোনো অবস্থান নেই। আর এসব কথা বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। কারাগারে অনেকের স্বাভাবিক মৃ/ত্যু হয়। কারাগারে আমাদের দলের অনেকেই অতীতে মা/রা গেছেন।
শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের ফৌজদারহাট-বন্দর সড়কের ডিসি পার্কে জেলা প্রশাসন আয়োজিত বহু-সাংস্কৃতিক উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব বাংলাদেশের উপর প্রভাব ফেলছে, যা সরকার তার নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণে মোকাবেলা করতে পারছে না। বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী এমন বক্তব্য নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, মিয়ানমারের ভেতরে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা আমাদের নেই। যা ঘটছে তা মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ কোন্দল। মায়ানমার সরকারী বাহিনী এবং আরাকান বাহিনী এবং অন্যদের মধ্যে বিরোধ চলছে এবং সেই দ্বন্দ্বের জের ধরে মাঝে মাঝে আমাদের দেশে দুটি গু/লি এসে দুই জন মা/রা গেছে, এটা সঠিক। সম্প্রতি মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়।
তিনি বলেন, তাদের পরিবারের বেশ কয়েকজন সদস্য তাদের সীমান্ত বাহিনী ও সেনাবাহিনী নিয়ে মিয়ানমার থেকে আমাদের দেশে পালিয়ে এসেছে। মিয়ানমার তাদের ফিরিয়ে নিতে রাজি হয়েছে। আমরা তাদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। আমাদের রাষ্ট্রদূত মিয়ানমারের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন। কোন প্রক্রিয়ায় তাদের ফিরিয়ে নেওয়া হবে সেটা চূড়ান্ত করার বিষয়, পররাষ্ট্রনীতির বিষয় নয়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, শুধু মিয়ানমারের সীমান্ত বাহিনী ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা আমাদের দেশে অনুপ্রবেশ করেনি, শত শত মানুষ ভারতেও অনুপ্রবেশ করেছে। সেগুলোও ফিরিয়ে নিয়ে গেছে।
আরাকান আর্মি মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে বসতি স্থাপন করা নাগরিকদের ফিরিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান বলেন, আপনারা জানেন, আমি ইতিমধ্যে ভারতসহ বিভিন্ন দেশ সফর করেছি। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেছি। ন্যাম সম্মেলনে মিয়ানমারের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। সেখানে তাকে বলেছিলাম, অন্তত প্রত্যাবাসন শুরু করতে। তার বক্তৃতায় আমি যা অনুভব করেছি, তাতে মিয়ানমার প্রত্যাবাসন শুরুতে সম্মত হয়েছে। কিন্তু তাদের বর্তমান অভ্যন্তরীণ সংকটের কারণে তারা এই মুহূর্তে তা করতে পারছে না।
তিনি বলেন, মায়ানমারের সকল বাস্তুচ্যুত মানুষকে সম্মান ও নাগরিক অধিকার দিয়ে আমাদের দেশে ফিরিয়ে দেওয়াই একমাত্র সমাধান। আমি সেই সমাধানের দিকে কাজ করছি।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ফিলিপাইনের রাষ্ট্রদূত লিও টিটল আউসান জুনিয়র, এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম ও ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার। রাজীব রঞ্জন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কে এম রফিকুল ইসলাম।