ভারতের মূল ভূখণ্ডে ডিজেল পরিবাহী পাইপলাইন আরও সম্প্রসারণের পরিকল্পনা হঠাৎ করেই বাতিল করে দিয়েছে ভারত। বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক সংকটের কারণ দেখিয়ে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে নয়াদিল্লি।
ভারত-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন (IBFP) নামে পরিচিত পাইপলাইনের মাধ্যমে ডিজেল আমদানি ২০২৩ সালের মার্চ মাসে শুরু হয়েছিল। ভারতীয় মিডিয়া আউটলেট লাইভমিন্ট রবিবার (১ সেপ্টেম্বর) প্রকল্পের সাথে পরিচিত ব্যক্তিদের উদ্ধৃত করে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। গত বছরের মার্চ মাসে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং তৎকালীন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়ি থেকে বাংলাদেশের দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুরে একটি তেলের ডিপো পর্যন্ত বিস্তৃত আন্তঃসীমান্ত পাইপলাইনের উদ্বোধন করেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে বর্তমান রাজনৈতিক সংকটের কারণে ভারত-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইনের (আইবিএফপি) মাধ্যমে প্রতিবেশী বাংলাদেশে ডিজেল পরিবহনের ভারতের পরিকল্পনা অনেকাংশে স্থবির হয়ে পড়েছে।
বিষয়টি সম্পর্কে অবগত তিনজন ব্যক্তি বলেছেন, ১৩১ কিলোমিটার পাইপলাইন বাংলাদেশের পার্বতীপুরের বাইরে প্রসারিত করার প্রস্তাব ছিল। বর্তমানে এই পাইপলাইনটি পার্বতীপুরেই শেষ হয়েছে। তবে, ভারত সরকার এখন এই পাইপলাইন সম্প্রসারণের বিষয়টিতে সাময়িক বিরতি দিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।
উপরে উদ্ধৃত তিনজনের মধ্যে একজন বলেছেন, যেহেতু প্রকল্পটি ভালোভাবে কাজ করছে এবং অনেকাংশে সফলও হয়েছে, তাই প্রতিবেশী বাংলাদেশের আরও জায়গায় পাইপলাইনটিকে আরও প্রসারিত করা হবে না কেন তা বিবেচনাধীন ছিল। তবে এখন (বাংলাদেশের) রাজনৈতিক পরিস্থিতি কিছুটা অস্থিতিশীল হওয়ায় ভারত এই বিষয়ে আরও বিবেচনা ও আলোচনার জন্য অপেক্ষা করতে চায়। তবে এই বিষয়ে নির্দিষ্ট কোনও টাইমলাইন দেয়া যাবে না। ’
যৌথ পাইপলাইনটির বার্ষিক ১ মিলিয়ন মেট্রিক টন হাই-স্পিড ডিজেল (এইচএসডি) ভারত থেকে বাংলাদেশে পরিবহনের ক্ষমতা রয়েছে এবং বর্তমানে এটি বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের সাতটি জেলায় পণ্য সরবরাহ করে।
এই পাইপলাইনটি দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে প্রথম আন্তঃসীমান্ত জ্বালানি পাইপলাইন। পাইপলাইনটির নির্মাণ ২০২০ সালে শুরু হয়েছিল এবং প্রকল্পটির ব্যয় ৫২০ কোটি রুপি, যার মধ্যে ভারত সরকার ৩৩৮ কোটি টাকা অবদান রেখেছে। উদ্ধৃত তিনজনের মধ্যে আরেকজন বলেছেন, ডিজেলের পাশাপাশি বাংলাদেশে উচ্চ সালফার ফুয়েল অয়েল (এইচএসএফও) এবং ফার্নেস অয়েল পাঠানোর প্রস্তাবও বিবেচনা করছে ভারত। এইচএসএফও মূলত সামুদ্রিক শিল্পে ব্যবহৃত হয়ত। আর ঘর, ব্যবসা এবং শিল্প ইউনিট গরম করার জন্য ব্যবহৃত হয় ফার্নেস অয়েল।