আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নানা ধরনের কৌশল নিয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিসহ আরো বেশ কিছু দাবি নিয়ে ক্ষমতাসীন দলকে সরকার থেকে হঠাতে আন্দোলনে নামতে যাচ্ছে বিএনপি।এদিকে সরকার প্রশাসনিক পর্যায়েও কিছু রদবদল আনছে। তবে সেটা রাজনৈতিক দিক বিবেচনার করে এমনটা মনে করছেন অনেকে। প্রশাসনের শীর্ষ দুই পদে রদবদলের বিষয়টি সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে।
প্রশাসনের শীর্ষ পদ মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও মুখ্যসচিব পদে রদবদল আসছে শিগগিরই। এই পদ দুটিতে নতুন মুখ দেখা যাবে। এই দুটি গুরুত্বপূর্ণ পদের পরিবর্তনকে কেন্দ্র করে প্রশাসনে আরও বেশ কিছু পরিবর্তন আসবে।
আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে এ বিষয়ে একাধিক প্রজ্ঞাপন জারি করতে পারে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। কোনো বিলম্ব হলে সোমবারের মধ্যে তা জারি করা হবে। দেশের একটি জনপ্রিয় সংবাদ মাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট নির্ভরযোগ্য সূত্র।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের মেয়াদ ১৫ ডিসেম্বর শেষ হবে। 8 ডিসেম্বর, ২০২০ তারিখে, তার আগের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের ধারাবাহিকতায় তার চুক্তি ২ বছরের জন্য বাড়ানো হয়েছিল। যা ওই বছরের ১৬ ডিসেম্বর কার্যকর হয়। সে হিসেবে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের মেয়াদ বাড়ানো না হলে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের শেষ কার্যদিবস হবে ১৫ ডিসেম্বর।
তার চুক্তির মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ানো হতে পারে বলে বেশ কিছুদিন ধরেই প্রশাসনে জোর গু’ঞ্জন ছিল। তবে শেষ পর্যন্ত চুক্তির মেয়াদ না বাড়িয়ে নতুন মন্ত্রিপরিষদ সচিব হিসেবে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কবির বিন আনোয়ারকে নিয়োগের সবুজ সংকেত দেওয়া হয়। এইভাবে সারসংক্ষেপ প্রস্তুত করা হয়।
প্রশাসন ক্যাডারের ১৯৮৫ ব্যাচের এই কর্মকর্তা বর্তমানে নিয়মিত চাকরিতে রয়েছেন। তবে তার মেয়াদ বেশিদিন নেই। পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে যোগদানের আগে তিনি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অতিরিক্ত সচিব হিসেবে মহাপরিচালক (প্রশাসন) হিসেবে কর্মরত ছিলেন। কর্মরত সিনিয়র সচিবদের মধ্যে তিনি শীর্ষে রয়েছেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব নিয়োগের রীতি অনুযায়ী জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে তাকে এই পদে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে।
এদিকে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. আহমেদ কায়কাউসের চুক্তির মেয়াদ ৩১ ডিসেম্বর শেষ হবে। তিনি ২৩ ডিসেম্বর ২০২০ তারিখে ২ বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিযুক্ত হন। যা ১ জানুয়ারী, ২০২১ থেকে কার্যকর হবে। যেমন, তার শেষ কার্যদিবস ৩১ ডিসেম্বর হলেও, তিনি ৭ ডিসেম্বর তার দায়িত্ব ছেড়ে দিতে পারেন। এর আগে, তিনি তার চুক্তিতে ২ মাস বাকি রেখে নভেম্বর মাসে চাকরি ছেড়ে দিতে চেয়েছিলেন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যান। কিন্তু নানা কারণে তা বিলম্বিত হচ্ছে।
মুক্তির আদেশ সাপেক্ষে তিনি শীঘ্রই স্বেচ্ছায় মুখ্য সচিবের পদ ছাড়বেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ঘনিষ্ঠ সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে। ফলে এই অবস্থানেরও পরিবর্তন হচ্ছে। সচিবালয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ে কর্মরত ১৯৮৬ ব্যাচের সিনিয়র সচিবকে মুখ্য সচিব পদে নিয়োগের গুঞ্জন থাকলেও তা এখন অনেকটাই অনিশ্চিত। অবশেষে নবম ব্যাচের একজন সিনিয়র সচিবকে প্রধান সচিব হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। এখন পর্যন্ত এমন খবর অনেকটা নিশ্চিত।
সূত্র জানিয়েছে, এই রদবদল ঘটানোর পর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়েও অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ পদেও আসার সম্ভাবনা রয়েছে নতুন মুখের। তবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বিশেষ কিছু পদে কোনো পরিবর্তন আসবে না বলে জানিয়েছেন একাধিক সূত্র। আগামি নির্বাচনকে ঘিরে সামনে প্রশাসনে আরো বেশ কিছু রদবদল আসবে বলে মনে করছেন একাধিক সূত্র।