ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলের (ডিএজি) পদ থেকে বরখাস্ত হওয়া এমরান আহমেদ ভূঁইয়া নিরাপত্তা চেয়ে ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসে যান।
শুক্রবার বিকেলে পরিবারেরসহ দূতাবাসে যান তিনি। এর আগে ডিএজি এমরানকে পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে আইন মন্ত্রণালয়।
শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে এ বিষয়ে তার প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি দেশের একটি জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। তাই আমি সপরিবারে মার্কিন দূতাবাসে হা/জির হয়েছি। বন্ধের দিন হওয়ায় নিরাপত্তাকর্মীরা প্রবেশ করতে দেয়নি। প্রধান ফটকের পাশের একটি ঘ/রে আমাদের বসিয়েছে।
এরপর বিকেল পাঁচটার দিকে এমরান আবার ফোন দিলে জানান, তিনি এখনো সেখানেই আছেন।
এমরান নিরাপত্তার জন্য সপরিবারে মার্কিন দূতাবাসে যাওয়ার বিষয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। তিনি দেশের একটি জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘এ কারণেই নাটক সাজানো হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে যেতে চায়, বিষয়টি দেখছি।
নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রসঙ্গে বক্তব্য দিয়ে আলোচনায় আসেন শুক্রবার সকালে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এমরান আহমেদকে বরখাস্তের ঘোষণা দেন।
আইন ও বিচার অধিদফতরের সলিসিটর বিভাগের জারি করা নোটিশে বলা হয়েছে, “দ্য বাং/লাদেশ ল অফিসার্স অর্ডার, ১৯৭২ এর ধারা ৪(ক) অনুযায়ী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহমেদ ভূঁইয়ার নিয়োগ আদেশ বাতিল করা হয়েছে এবং জনস্বার্থে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।”
ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘন ও দু/র্নীতির মামলা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে খোলা চিঠি (বিবৃতি) পা/ঠিয়েছিলেন বিশ্বের বিভিন্ন ক্ষেত্রের দেড় শতাধিক নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি তাদের মধ্যে শতাধিক নোবেল বিজয়ী রয়েছেন। সোমবার হাইকোর্টের বর্ধিত ভবনের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, ড. ইউনূস একজন সম্মানিত মানুষ। তার মানহানি করা হচ্ছে এবং এটা বিচারিক হ/য়রানি।’
শতাধিক নোবেল বিজয়ীর ওই খোলা চিঠির বিরুদ্ধে অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় থেকে প্রতিবাদ বিবৃতি দেওয়ার কথা- ইমরান আহমেদ বলেন, অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিসে কর্মরত সবাইকে তাতে স্বাক্ষর করার জন্য জানানো হয়েছে। আমি এই বিবৃতিতে স্বাক্ষর না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক অনুষ্ঠান শেষে আইনমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, তিনি (এমরান আহমেদ ভূঁইয়া) অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের দায়িত্বে থাকা ডিএজি (ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল)। তিনি যদি প্রেসের সাথে কথা বলেন, তাহলে তাকে হয় পদত্যাগ করতে হবে অথবা অ্যাটর্নি জেনারেলের অনুমতি নিয়ে কথা বলতে হবে। তিনি তা করেননি।
ওই দিন অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় থেকে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে কোনো বিবৃতি দেওয়া হয়নি। ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহমেদ ভূঁইয়া অন্য কোনো পক্ষকে খুশি করতে এ কথা বলেন। নিশ্চয়ই এখানে তার একটা উদ্দেশ্য ছিল।
এরপর বৃহস্পতিবার অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. নাসির উদ্দিন এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেন। ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় সংক্রান্ত কোনো বক্তব্য দেওয়ার আগে অ্যাটর্নি জেনারেলের সঙ্গে পরামর্শ ও পূর্বানুমতি নিতে হবে।