‘এক দফা সরকার হটানোর দাবিতে ১৫ দিনের গুচ্ছ কর্মসূচি নিয়ে আসছে বিএনপি। এই গুচ্ছ কর্মসূচিতে থাকবে বহুমাত্রিক সমাবেশ, একাধিক রোডমার্চ। জানা গেছে, আগামী মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া এ কার্যক্রম চলবে ৩ অক্টোবর পর্যন্ত।
নির্বাচন কমিশনার জনাব মোঃ আনিছুর রহমান বলেন আগামী নভেম্বরে সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে। এর আগে অক্টোবরেই আন্দোলন চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যেতে চায় বিএনপি। সেই চিন্তা থেকেই চলতি সপ্তাহে ১৫ দিনের গুচ্ছ কর্মসূচি শুরু করতে যাচ্ছে দলটি। এ কর্মসূচি শেষ হলে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে নতুন কর্মসূচি দিতে পারে দলটি।
বিএনপির একাধিক সূত্রে জানা গেছে, আগামী মঙ্গলবার ঢাকার কেরানীগঞ্জে বড় সমাবেশের মধ্য দিয়ে এ পর্বের কর্মসূচি শুরু হবে। এরপর রাজধানী ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে তিনটি সমাবেশ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া দেশের দক্ষিণ ও পূর্বাঞ্চলে চারটি রোডমার্চ কর্মসূচি হতে পারে।
আগামীকাল সোমবার সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করবে দলটি।
এবার কেরানীগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জে একটি এবং ঢাকায় তিনটি বড় সমাবেশ করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বিএনপির নীতিনির্ধারকরা। এর মধ্যে ঢাকায় পেশাজীবী সমাবেশ, নারী সমাবেশ ও শ্রমিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া সিলেট, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম অঞ্চলে চারটি রোডমার্চ কর্মসূচি করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মূলত বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বচ্ছসেবক দল ও ছাত্রদলের উদ্যোগে এই রোডমার্চের কর্মসূচি পালন করা হয়। তিনটি সংগঠন ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশের উত্তর, দক্ষিণ ও পূর্বাঞ্চলের পাঁচটি অঞ্চলে ‘তারুণ্যের রোডমার্চ’ করার পরিকল্পনা করেছিল।
রোডমার্চের প্রথম দিনে গতকাল শনিবার যুবদল, স্বচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল রংপুর থেকে দিনাজপুর পর্যন্ত প্রায় ৮০ কিলোমিটার সড়ক মিছিল করে। আজ রোববার দ্বিতীয় দিনে বগুড়া থেকে রাজশাহী পর্যন্ত রোডমার্চ অনুষ্ঠিত হবে। এটি সান্তাহার নওগাঁ হয়ে রাজশাহী নগরে গিয়ে শেষ হবে।
এই রোডমার্চে প্রধান অতিথি থাকবেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম এবং বিশেষ অতিথি থাকবেন স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। সরকারের হটানোর দাবিতে এক দফা আন্দোলনে ভোটাধিকার বঞ্চিত তরুণদের রাজপথে নামাতে এই রোডমার্চ কর্মসূচি নিয়েছে তিনটি সংগঠন।
জানা গেছে, যুবদল, স্বচ্ছসেবক দল ও ছাত্রদলের সিলেট, খুলনা ও চট্টগ্রাম রুটে যুব রোডমার্চের পরিকল্পনা বিএনপিসহ তিন সংগঠন ও সমমনা বিরোধী দল ও জোট একযোগে করবে। প্রথম রোডমার্চ হতে পারে সিলেটের পথে। একটি ভৈরব বাজার থেকে শুরু হয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজার হয়ে সিলেট নগরে গিয়ে শেষ হবে। আরেকটি রোডমার্চ হবে খুলনার উদ্দেশ্য। এটি ঝিনাইদহ থেকে শুরু হয়ে যশোর, নওয়াপাড়া হয়ে খুলনা শহরে যাবে। এরপর বরিশাল-পটুয়াখালী ও পিরোজপুর অঞ্চলে রোডমার্চ হবে। শেষ রোডমার্চ হবে চট্টগ্রামের পথে। এটি কুমিল্লা থেকে শুরু হয়ে ফেনী, মিরসরাই হয়ে চট্টগ্রাম শহরে গিয়ে শেষ হবে।
এছাড়া রোডমার্চ কর্মসূচি শুরুর আগে-পরে সমাবেশ ও সড়কের বেশ কয়েকটি স্থানে পথসভা করার পরিকল্পনা রয়েছে বিএনপির নীতিনির্ধারকদের। এর মাধ্যমে ‘একদফা’ দাবিতে চূড়ান্ত আন্দোলনের পথে সারাদেশে শেষ গণসংযোগের কাজ শেষ করার চেষ্টা করছেন নেতারা। এই পর্বে রোডমার্চ ও সমাবেশ কর্মসূচি চলবে ৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। এরপর ঢাকাকেন্দ্রিক নতুন ধারাবাহিক কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। চলবে অক্টোবর মাস জুড়ে। মূলত দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত এ কর্মসূচি টানা হবে।