২০১৫ সালের ২৯ জানুয়ারি না/শকতার অভিযোগে ৩৭ বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে মামলা করে পুলিশ। তদন্ত শেষে ২০১৭ সালে বিচার শুরু হয়। গত পাঁচ বছর ধরে মামলার বিচার চলছিল কচ্ছপগতিতে। সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে, কেউ হাজির হয়নি। তারিখও পড়ে চার-পাঁচ মাস পর পর। কিন্তু হঠাৎ করেই সেই চেনা রূপ বদলে গেছে। গত ২৪ জুলাই সাক্ষ্য গ্রহণের দিন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা আদালতে হাজির হয়ে বিস্মিত হন। ওইদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত মামলার বাদীসহ ২০ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়। নতুন দিন ধার্য করা হয়েছে ২৭ সেপ্টেম্বর।
২০১৩ সালে নগরীর সোনালী ব্যাংক চত্বরে পুলিশের সঙ্গে সং/ঘর্ষের ঘটনায় ২৫ বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে মামলা হয়। গত ১০ বছর ধরে এ মামলার বিচার চলছে। দীর্ঘ সময় কোনো সাক্ষ্য নেওয়া হয়নি। গত ২৯ আগস্ট একদিনে ১১ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়। মামলার পরবর্তী তারিখ ২৬ সেপ্টেম্বর।
শুধু এ দুটি নয়, গত ৩ মাস ধরে খুলনায় বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে মামলার বিচার কার্যক্রম গতি পেয়েছে। বছরের পর বছর সাক্ষ্য নেওয়া হয়নি এমন মামলায় একদিনে ৭, ১১ এমনকি ২০ জন সাক্ষ্য গ্রহন করা হচ্ছে।
নির্বাচনের আগে সরকার বিএনপি নেতাদের সাজা দিয়ে কারারুদ্ধ করতে চায় বলে অভিযোগ দলটির নেতাদের। বিচারিক কাজে হঠাৎ ত্বরান্বিত হওয়া তারই প্রতিফলন। এ কারণে তারা আ/তঙ্কে ভর করেছে।
নেতাদের নামে মামলা পরিচালনার জন্য দলীয় আইনজীবীদের নিয়ে আলাদা সেল গঠন করেছে খুলনা মহানগর বিএনপি। লিগ্যাল সেলের তথ্য অনুযায়ী, বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে খুলনার ১৯টি আদালতে তিন শতাধিক মামলা বিচারাধীন রয়েছে। এর মধ্যে সর্বশেষ ৪৮টি মামলা সাক্ষ্য গ্রহণের মাঝখানে। একটি সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে।
মামলায় খুলনা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম মঞ্জু, খুলনা-১ আসনের সাবেক মেয়র মনিরুজ্জামান মনি, খুলনা-১ আসনের প্রার্থী ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আমির এজাজ খান, খুলনা-৩ আসনের প্রার্থী রকিবুল ইসলাম বকুল, খুলনা-৪ আসনের প্রার্থী আজিজুল বারী হেলাল, আগামীতে প্রার্থী হতে আগ্রহী অধ্যক্ষ তরিকুল ইসলাম, নগর বিএনপির স/দস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিনসহ ৫টি থানায় বিএনপির শীর্ষ নেতারা। কোনো মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলে তারা নির্বাচনে অযোগ্য হবেন।
গত বৃহস্পতিবার সরেজমিনে দেখা গেছে, আদালতে হাজিরা দিয়ে বের হচ্ছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। আইনজীবী সমিতি ভবনের নিচতলায় সিনিয়র নেতা ও আইনজীবীদের সঙ্গে মামলা নিয়ে পরামর্শ করছিলেন নগর বিএনপির সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু। আগামী সপ্তাহে কোন মামলার সাক্ষ্য আছে তা খুঁজে বের করতে নেতাদের সাক্ষীদের সাথে যোগাযোগ করার পরামর্শ দিচ্ছেন। তারা স্বীকার না করলেও মামলার গতি নিয়ে তাদের চোখে উদ্বেগ দেখা গেছে।
নজরুল ইসলাম মঞ্জু দেশের একটি জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, আমি মনিসহ সিনিয়র নেতাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার বিচার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে চলছে। ওই মামলায় ২০ মার্চ তিনজনের এবং ৩০ আগস্ট আরও সাতজনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। মামলার পরবর্তী তারিখ ১৮ অক্টোবর। আগে মামলার তারিখ ছিল পাঁচ মাস পর, এখন প্রতি মাসে তারিখ নির্ধারণ করা হয়। আমরা বুঝি নির্বাচনের আগে তারা শাস্তি দিতে চায়।
বিএনপির আইনজীবী সেলের প্রধান গোলাম মাওলা বলেন, আগে চার-পাঁচ মাস পর তারিখ পড়া হতো, একদিনে দুই-তিনজন সাক্ষ্য দিয়েছেন। এখন প্রতি মাসে তারিখ হয়, ১০-১২ জন সাক্ষী নেওয়া হয়। এটি একটি ভাল লক্ষণ বলে মনে হচ্ছে না।