প্রতিষ্ঠার এক যুগ পেরিয়ে গেলেও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) ছাত্রলীগের কোনো সাংগঠনিক কাঠামো নেই। তবে অনেক শিক্ষার্থী স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও জনপ্রতিনিধিদের অনুসারী হিসেবে নিজেদেরকে ছাত্রলীগ নেতা দাবি করে আসছেন। রাজনীতির সাথে জড়িত থাকলেও দীর্ঘদিন কমিটি না থাকায় অনেকেই এখন হতাশ এবং রাজনৈতিক কারণে তাদের বিরুদ্ধে মামলা-হামলা হচ্ছে। সম্প্রতি ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে রাজনীতি থেকে সরে আসার হিড়িক পরেছে। তবে শিগগিরই কমিটি ঘোষণা আসছে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতারা।
জানা গেছে, ২০১১ সাল থেকে বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মী ও সম্ভাব্য নেতাদের জীবনবৃত্তান্ত নেওয়া হলেও সেখানে এখনো কোনো কমিটি গঠন করা হয়নি। গত এক মাসে ছাত্রলীগের প্রায় এক ডজন নেতাকর্মী রাজনীতি ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন। অনেকেই ফেসবুকে আবেগঘন স্ট্যাটাস দিয়েছেন।
রাকিব হাসান নামে একজন লিখেছেন, ‘বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সব রাজনৈতিক সমস্ত কর্মকাণ্ড থেকে নিজেকে সরিয়ে নিলাম। ছোট বড় সবার জন্য শুভকামনা। গাজী মাশরুর নামে আরেক ছাত্রলীগ নেতা সোমবার রাতে ফেসবুকে লিখেছেন, ‘বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রলীগের কমিটি না থাকায় আমি আর রাজনীতি আর টে/নে নিতে পারছি না… বিদায়।’
রাকিব হাসানের কাছে এমন সিদ্ধান্তের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি ক্লাস এইট থেকেই ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত। বিশ্ববিদ্যালয়ে মুজিব আদর্শকে সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে ভর্তির পর থেকেই রাজনীতি করে আসছি। কিন্তু দীর্ঘদিন কমিটি না থাকায় আমি হতাশ। তাছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে দেখা যাচ্ছে অভ্যন্তরীণ কোন্দল বাড়ছে। এসব কোন্দলের ভিত্তিতে অনেক নিরপরাধ ব্যক্তিকে মামলায় আসামি করা হচ্ছে। আমি মনে করি এই ধরনের অপচর্চার মধ্যে রাজনীতি করা আমার জন্য শুভ নয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক ছাত্রলীগ নেতা অমিত হাসান রক্তিম বলেন, আমি প্রায় এক যুগ ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। কেন্দ্র থেকে বারবার কমিটি করার আশ্বাস দেওয়া হলেও আমাদের এখনো কোনো পরিচয় হয়নি।সাংগঠনিক কাঠামোর অভাবে অনেকেই ছাত্রলীগের নাম ভাঙিয়ে করে অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে।এর দ্বারা আমাদেরকে দো/ষারোপের শিকার হচ্ছি, আমাদের জীবন নষ্ট করা হচ্ছে।এতে অনেককে হতাশ হতে দেখছি।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হতাশ না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অসীম দেওয়ান বলেন, রাজনীতি একটি দীর্ঘ ও চলমান প্রক্রিয়া। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের নিরাশ না হওয়ার পরামর্শ দেব। কেন্দ্রে যারা আছেন তাদেরও বলব বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ ইউনিটে সাংগঠনিক কাঠামো দেওয়ার উদ্যোগ নিতে।
আর ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়টি আমাদের মাথায় আছে। এটি দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইউনিট। শিগগিরই সেখানে কমিটির বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।