দীর্ঘদিন ধরে সরকারের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালিয়ে আসা বাংলাদেশ ওয়েলফেয়ার পার্টি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জোটগতভাবে অংশ নিতে যাচ্ছে।
এ জন্য অন্যান্য নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল মুসলিম লীগ ও বাংলাদেশ জাতীয় পার্টিকে নিয়ে যুক্তফ্রন্ট নামে একটি নতুন জোট গঠন করা হয়েছে।
এই জোটের নেতৃত্বে রয়েছে কল্যাণ পার্টি।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচনে যাবে না বলে ঘোষণা করেছিল কল্যাণ পার্টি। বিএনপির যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে বর্তমান সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন সংগ্রাম করে আসছে।
হঠাৎ সিদ্ধান্ত বদল করে নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন কেন?
বুধবার (২২ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এক সংবাদ সম্মেলনে কল্যাণ পার্টির মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম বীর প্রতীক বলেন,আমি এখান থেকে বের হওয়ার পর বা বিদ্যমান অবস্থাতেই ৫০০ কমেন্ট আসবে যে বিশ্বাসঘাতক, দালাল, বেচা হয়ে গেছে। মেজর জেনারেল ইবরাহিম বা বীরপ্রতীক ইবরাহিম বেচা যাওয়ার পাত্র নয়। এরজন্য আপনাদের কাছে আবেদন করব ধৈর্য ধরুন, দেখেন কখন কী হয়, কী করি।
নির্বাচনে অংশগ্রহণের কোনো চাপ ছিল কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, পরশু হাইকোর্টে গিয়েছিলাম। এই মুহূর্তে এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়া আমার পক্ষে উপযুক্ত নয়। এটা উহ্য রাখতে হবে।
এখন কল্যাণ পার্টি নির্বাচনে যাচ্ছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রয়োজন না হলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রয়োজন আছে বলে মনে করেন তিনি। কিন্তু বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে সেই তদারকি পদ্ধতি সামনে আসছে না। না আসার কারণে আমাকে একটা সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আমাদের যা আছে তার মধ্যে অংশ নেব নাকি সব কিছু থেকে বিরত থাকব। আমি প্রথম বিকল্পটা বেছে নিয়েছি। আমরা এতদিন দাবি করেছিলাম, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ব্যতীত নির্বাচনে যাব না। তার উত্তর হচ্ছে, দাবি আদায়ে সফল না হয়ে বিকল্প পন্থায় নির্বাচনে অবদান রাখার সুযোগ নিচ্ছি।
সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম অতীতে মন্তব্য করেছিলেন, বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাওয়াটা হবে ‘আত্মহত্যা’।
নির্বাচনে গিয়ে কেন আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিলেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি ও আমার নেতাকর্মীরা কষ্ট করে রাজনীতি টিকিয়ে রেখেছি। আমাদের বেঁচে থাকার একটা সীমা আছে। আমরা সেই সীমা ধরে রেখেছি। কিন্তু এই মুহূর্তে আমার রাজনৈতিক অক্ষমতা থাকায় আমি এই সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে পারছি না। ২৮ অক্টোবরের পর এটি একটি নির্দিষ্ট অবস্থানে এসেছে। আমি চুপ থাকব নাকি বিকল্প পন্থা নেব সেটা আমাকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এই মর্মে যে আমি যে কথাগুলো বলার চেষ্টা করি, সেটা সংসদে বলব।
যুক্তফ্রন্ট কয়টি আসনে নির্বাচন করবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা এখনো ঠিক করিনি কয়টি আসনে নির্বাচন করব। তবে আমরা ১০০টি আসনে নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিচ্ছি।
এ সময় বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির মহাসচিব জাফর আহমেদ জয়, নির্বাহী চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম, অতিরিক্ত মহাসচিব ফারুকুল ইসলাম, প্রেসিডিয়াম সদস্য আনোয়ারুল ইসলাম, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের চেয়ারম্যান শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, অতিরিক্ত মহাসচিব তফাজ্জেল হোসেন, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির মহাসচিব আব্দুল আউয়াল মামুন, স্থায়ী কমিটির জ্যেষ্ঠ সদস্য অধ্যাপক ডা. ইকবাল হাসান মাহমুদ প্রমুখ।