অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ ভূঁইয়ার ফেসবুক প্রোফাইল দেখা যায়, তার ফেসবুক কভারে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি রয়েছে। ফেসবুক ব্যবহারের শুরু থেকেই তিনি আওয়ামী লীগের নীতি, আদর্শ ও সরকারের উন্নয়নের কথা তুলে ধরেছেন। কিন্তু হঠাৎ করেই তিনি নোবেল বিজয়ী ড. ইউনূসের পক্ষে সরাসরি অবস্থান নেন। অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ের সহকর্মীরা তার অবস্থান পরিবর্তনে হতবাক হন।
অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ে তার তিন সহকর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ইমরান বিচারক হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে তদবির করে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হয়েছেন। কিন্তু পরপর দুই নিয়োগে তিনি বিচারক হতে পারেননি। এটি তাকে ক্ষুব্ধ করেছে। আবার কেউ বলছেন, এমরানের অনেক আত্মীয়-স্বজন আমেরিকায় থাকেন। তিনি আমেরিকান ভিসা নিশ্চিত করতে ড. ইউনূসের পক্ষে অবস্থান নেন।
আরেক ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আসাদুজ্জামান মনির মনে করেন, লোভের কারণে এমরান রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। তিনি বলেন, কিছু লোভের বশবর্তী হয়ে কাজটি করেছেন। ইউনূস ও তার লোকজন দেশের সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় থেকে ইউনূসের পক্ষে বক্তব্য নেওয়ার জন্য দীর্ঘদিন ধরে ষড়যন্ত্র করে আসছিলেন। এই ষড়যন্ত্রের ফাঁদে ও লোভে পা দিয়েছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান। সরকারকে সমস্যায় ফেলতে তার এসব কর্মকাণ্ড।
আসাদুজ্জামান মনির বলেন, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান উচ্চাভিলাষী। তিনি বিভিন্ন জায়গায় বলতেন, বিচারক নিয়োগের তালিকায় তার নাম সবার আগে। কিন্তু গত নিয়োগেও তিনি বিচারক হতে না পারায় হতাশ হয়ে পড়েন। অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিসে কারও সঙ্গে তার সম্পর্ক ভালো ছিল না।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরানের পদ পরিবর্তনের বিষয়ে ফেসবুকে পোস্ট করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সাবেক ছাত্র ও বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট কুমার দেবুল দে। ফেসবুক পোস্টের একাংশে তিনি লিখেছেন, ‘একজন ব্যক্তি যদি মনে করে শেখ হাসিনার পক্ষে থেকে বা বাংলাদেশের সঙ্গে থেকে কি সুবিধা বর্তমানে পাওয়া যাচ্ছে বা পাওয়া যাবে তার চেয়ে অধিক সুবিধা যদি ড. ইউনূসের পক্ষে বা আমেরিকার সঙ্গে থেকে পাওয়া যায় তাহলে একজন ব্যক্তি কেন শেখ হাসিনার পক্ষে থাকবেন? কোনো ব্যক্তি যদি দেখেন শেখ হাসিনার পক্ষে থেকে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হওয়া গেছে। এরপর বিচারপতি হওয়ার রিপিটেড চেষ্টা করেও আর এগোতে পারেননি। তারপরে হতাশ হয়ে দেশের ওপর ভীতশ্রদ্ধ হয়ে সপরিবারে আমেরিকা চলে যাওয়ার চেষ্টা করে দুইবার ভিসা রিফিউজ হলে সেই ব্যক্তির আর কীইবা করার থাকে! শতভাগ ভিসা কনফার্ম করার মিশন নিয়ে ড. ইউনূস বা আমেরিকার পক্ষ নেওয়া ছাড়া!’
“অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিসের কাগজপত্রে স্বাক্ষর না করা ব্যক্তিগত বিষয় হতে পারত, এটি গোপন রাখা যেত। সাংবাদিকদের যখন সংবাদ সম্মেলন করার জন্য ডাকা হয় এবং কোনো কাগজপত্রে স্বাক্ষর না করার বিষয় প্রচার করা হয় তখন বুঝতে হবে এখানে অনেক বড় কোনো লাভের বিষয় আছে। এখানে একটি বড় লাভ আছে। এখানে শুধু ভিসা কেন? ডঃ ইউনূস একজন বড় মাপের মানুষ, তিনি এক-দুই এক কোটি-দুই কোটিতে নয়, গুনেন হাজার কোটিতে। তাই *** (অশালীন শব্দ) ব্যাপার আছে, *** পেটে পড়লে আর যাই হোক মাথা ঠিক থাকে না। তা না হলে বিচার বিভাগ নিয়ে কাজ করে কেউ কি বিচার বিভাগ ও বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারে?”