Friday , November 15 2024
Breaking News
Home / Countrywide / হঠাৎ করে পদ্মা সেতুর কাছেই বন্ধ হয়ে গেল রেলপথ নির্মানের কাজ, জানা গেল কারন

হঠাৎ করে পদ্মা সেতুর কাছেই বন্ধ হয়ে গেল রেলপথ নির্মানের কাজ, জানা গেল কারন

আগামী ২৫ শে জুলাই উদ্বোধন হতে যাচ্ছে দক্ষিণ বাংলার মানুষের বহুদিনের কাঙ্খিত পদ্মা সেতু। এই সেতুর উদ্বোধনের পর দিন অর্থাৎ ২৬ শে জুন থেকে যানব চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হবে পদ্মা সেতু এমনটিই জানা গেছে। এদিকে পদ্মা সেতুর দুই প্রান্তের রেল লাইনের কাজের অগ্রগতি ছিল আশাব্যঞ্জক। কিন্তু সেতুর মুখে এসে হঠাৎ করেই থেমে গেছে রেললাইন নির্মাণের কাজ।

পদ্মা সেতুর দুই পাশের সংযোগ সেতুতে রেললাইন বসানোর কাজ পুরোদমে চলছে। এরই মধ্যে জাজিরা প্রান্তে ফ্লাইওভারে (ভায়াডাক্ট) ৪ দশমিক ০৩ কিলোমিটার রেললাইন স্থাপনের কাজ শেষ হয়েছে। এখন জাজিরা প্রান্তে সেতুর মুখে এসে আটকে গেছে এই কাজ। বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ রেলওয়ে সেকশনের কাজের জন্য সেতুটি রেলপথ মন্ত্রণালয়ের কাছে হস্তান্তরের পর এই কাজ শুরু হবে।

আগামি ১৫ জুলাই স্থানান্তর হতে পারে।
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, জাজিরা প্রান্তে সেতুর শেষ প্রান্ত থেকে পদ্মা রেলস্টেশন পর্যন্ত রেললাইনের কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। মাওয়া প্রান্তের কাজও প্রায় শেষের দিকে। মাওয়া প্রান্তে ১.৭ কিলোমিটার রেলপথ। পদ্মা সেতুতে রেললাইন বসাতে অন্তত ছয় মাস সময় লাগবে। তাই জুলাই মাসে সেতুটি বাস্তবায়িত হলে এ বছর কাজ শেষ করা কঠিন হবে। এমন পরিস্থিতিতে রেলওয়ের কর্মপরিকল্পনায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। চলতি বছরের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতু ব্যবহার করে মাওয়া থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ট্রেন চলাচলের কথা থাকলেও তা হচ্ছে না। নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী আগামী জুনে ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ট্রেন চালাতে চায় রেলওয়ে।

পদ্মা সেতুতে রেলপথ স্থানান্তরের বিষয়ে গত এপ্রিল ও মে মাসে সেতু ও রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের মধ্যে সর্বশেষ চিঠি চালাচালি হয়। এরপর থেকে এ দুই সংগঠনের মধ্যে কোনো আলোচনা হয়নি। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের কাজে ব্যস্ত সেতু কর্তৃপক্ষ।

পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের পরিচালক শফিকুল ইসলাম এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, সেতুর রেললাইনে এখনো গ্যাস লাইনের কাজ চলছে। তা ছাড়া উদ্বোধনের আগে সেতু হস্তান্তরের কোনো সুযোগ নেই। উদ্বোধনের পর আগামী মাসের মাঝামাঝি ঠিকাদারদের সঙ্গে আলোচনা করে সেতুটি রেলপথ মন্ত্রণালয়ের কাছে হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

সূত্র জানায়, ৩৯ হাজার ২৪৬ কোটি ৮০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পে ১৮ হাজার ২১০ কোটি ১১ লাখ টাকা দিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। বাকি ২১ হাজার ৩৬ কোটি ৬৯ লাখ টাকা ঋণ দিয়েছে চায়না এক্সিম ব্যাংক। প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয় ২০১৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত। ২০১৬ সালের ২৭ এপ্রিল প্রকল্পটি সরকারের ফার্স্ট ট্র্যাক প্রকল্পের তালিকাভুক্ত করা হয়।

প্রকল্পটি ঢাকা-মাওয়া, মাওয়া-ভাঙ্গা এবং ভাঙ্গা-যশোর এই তিন ভাগে বিভক্ত। ঢাকা-মাওয়া ও ভাঙ্গা-যশোর বাস্তবায়নের সময়কাল ২০২৩। এবং মাওয়া-ভাঙ্গা সেকশনের মেয়াদ ২০২২ নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু এ বছর মাওয়া-ভাঙ্গা সেকশন চালু হচ্ছে না। প্রকল্পের ঠিকাদার চায়না রেলওয়ে গ্রুপ লিমিটেড (সিআরইসি)। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কনস্ট্রাকশন সুপারভিশন কনসালটেন্ট (সিএসসি) পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করছে।

পদ্মা সেতুর দুই প্রান্ত ছাড়াও কেরানীগঞ্জে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার রেললাইন বিছানো হয়েছে। পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের সর্বশেষ অগ্রগতি প্রতিবেদন অনুযায়ী, মাওয়া-ভাঙ্গা অংশের কাজ ৭০ শতাংশ এগিয়েছে। ঢাকা-মাওয়া সেকশনের অগ্রগতি ৮০ শতাংশ এবং ভাঙ্গা-যশোর সেকশনের নির্মাণকাজ ৫১ শতাংশ। পুরো প্রকল্পের সার্বিক ভৌত অগ্রগতি হয়েছে ৫৯ শতাংশ।

পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক আফজাল হোসেন গনমাধ্যমকে বলেন, সেতুর বিষয়টি বোঝা না যাওয়া পর্যন্ত আমরা কাজ শুরু করতে পারব না। এতে আমাদের কর্মপরিকল্পনায় পরিবর্তন আনতে হচ্ছে। চলতি বছরের ডিসেম্বরে এ রুটে ট্রেন চলাচলের কথা থাকলেও তা আর হচ্ছে না। আগামী জুলাই মাসে ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে।’

সেই লক্ষ্য যথাসময়ে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়েছে কি না জানতে চাইলে আফজাল হোসেন বলেন, এখনই বলা যাবে না। কিন্তু আমাদের সামনে তারিখ রেখে কাজ করতে হবে। এখন প্রতিদিন ৫০ জনের একটি দল ৫০০ মিটার রেললাইন বসাচ্ছে। চাইলে দুই প্রান্ত একত্রিত করে প্রতিদিন এক কিলোমিটার রেললাইন বিছানো সম্ভব। দ্রুত সেতুর কাজ বুঝে নিলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করা সম্ভব।

তবে খুব দ্রুততার সাথে সংযোগ হতে যাওয়া রেল লাইনের কাজ শেষ হবে বলে আশা করেছে রেল বিভাগ। পদ্মা সেতুর সাথে দুই প্রান্তের রেল যোগাযোগ ব্যবস্থার কাজ শেষ হলে যোগাযোগ ব্যবস্থায় অনেক বড় ধরনের পরিবর্তন আসবে। অর্থাৎ বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় আমূল উন্নয়ন সাধিত হবে।

About bisso Jit

Check Also

উপদেষ্টা পরিষদেই বৈষম্য

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে আঞ্চলিক বৈষম্যের অভিযোগ উঠেছে। ২৪ সদস্যের এই পরিষদে ১৩ জনই চট্টগ্রাম …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *