ক্যাডার পুলিশ কর্মকর্তাদের মতো নন-ক্যাডার পুলিশ কর্মকর্তারাও সুপার সুপারনিউমারি (পদ না থাকলেও পদোন্নতি) পদোন্নতি দাবি জানিয়েছেন।
এ দাবি নিয়ে সোমবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে বৈঠক করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ৫০টি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)। সোমবার বিকেলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বৈঠক করেন তারা।
এ সময় আশপাশের জেলার বিভিন্ন থানার ওসিরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পুলিশ সদর দপ্তরের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বস্ত করেন।
এর আগে সোমবার সকালে ডিএমপির মাসিক অপরাধ সম্মেলনের আগে ডিএমপি সদর দফতরে তাদের দাবি নিয়ে আলোচনা হয়।
বিকেলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে বলে দাবি করেন বাংলাদেশ পুলিশ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম।
তিনি বলেন, আমাদের দাবি ছিল পুলিশ পরিদর্শকদের ১০ বছর পূর্ণ করে ৬ষ্ঠ গ্রেড পেতে হবে। ১০ বছর পূর্ণ হলে ব্যাজ থেকে গ্রেডের স্বয়ংক্রিয় পরিবর্তন। ১০ বছরের মধ্যে পদোন্নতি না হলে সুপারনিউমারারি পদে পদোন্নতি। সাব-ইন্সপেক্টরদের (এসআই) জন্য একই প্রস্তাব করা হয়েছে। তার মধ্যে এসআই/সার্জেন্ট পদটি দ্বিতীয় শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তা হওয়া স্বত্ত্বেও তাদের র্যাংক ব্যাজের নীল/লাল ফিতা তুলে নেওয়া।
এছাড়াও এসআই ও ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার ব্যাজ পদোন্নতির বিষয়টি পরিকল্পিতভাবে পুলিশ সদর দপ্তরে রাখা হয়েছে যাতে সময় নির্ধারণ করে দ্রুত বিষয়টি নিষ্পত্তি করা হয়। কনস্টেবলদের বিভাগীয় পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে পর্যায়ক্রমে পদোন্নতি তালিকার (পিএল) মাধ্যমে পদোন্নতি দেওয়া হবে।’
বৈঠক প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘উনারা আমার কাছে আসছিলেন। তাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তারা পদোন্নতিসহ আরও বেশ কিছু দাবি-দাওয়া নিয়ে এসেছেন। ওই বিষয়গুলো উপরে আমরা পুলিশ সদর দফতরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বসে পরবর্তি সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
বৈঠকে অংশ নেওয়া ডিএমপির একজন ওসি বলেন, মাঠ পর্যায়ে সরাসরি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনকারী পুলিশের নিম্নস্তরের কর্মকর্তা বা সদস্যদের পদোন্নতি না দেওয়ায় বিসিএসের মধ্যে প্রতিনিয়ত মনস্তাত্বিক দ্বন্দ্ব ও বিরোধের সৃষ্টি হচ্ছে। পুলিশ ক্যাডার এবং নন-ক্যাডাররা দীর্ঘদিন পদোন্নতি না পাওয়ায় এই ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
একাধিক পুলিশ পরিদর্শকের অভিযোগ, নির্বাচনের আগের সব কর্মকাণ্ড আসলে মাঠপর্যায়ের সদস্যরাই করেছেন। নির্বাচনের পর তাদের অন্য জেলায় বদলি করা হয়।
তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, পদোন্নতির আশ্বাস পেয়ে কয়েকদিন পর সব ভুলে যান সিনিয়ররা। ডিএমপির গুরুত্বপূর্ণ থানায় বিশেষ কিছু লোক রেখেছিলেন। বাকিরা হাজারো দৌঁড়ঝাপ করলে তাদের পাঠিয়ে দেওয়া হয় বিভিন্ন জেলায় বা ইউনিটে।
পরিদর্শকদের দাবি, পদোন্নতির সমস্যা সমাধানে সরকার পুলিশ সুপার (এসপি) এবং ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেলদের (ডিআইজি) জন্য সুপারনিউমারারি পদ প্রদান করছে। কিন্তু ইন্সপেক্টর ও সাব-ইন্সপেক্টর বা সার্জেন্টরা সেই সুবিধা থেকে বঞ্চিত থাকেন। সম্প্রতি ৫৫২ জনকে এই পোস্টটি তৈরি করা হয়েছে। বিষয়টি পত্রিকায় প্রকাশের পর ৫২ জনকে উচ্চপদে পদোন্নতি দেয় সরকার। বাকি ৫০০ পদ থেকে কোটা অনুযায়ী পরিদর্শক দেওয়া হলে সবাই সন্তুষ্ট।