রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের সংসদ সদস্য ও স্বতন্ত্র প্রার্থী এনামুল হকসহ ১৭ জনকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে উপজেলা আওয়ামী লীগ। ওই ১৭ জনের মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অনিল কুমার সরকারও রয়েছেন। সোমবার রাতে উপজেলা আওয়ামী লীগ জরুরি সভা করে এ সিদ্ধান্ত নেয়।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অনিল কুমার সরকার বাগমারা উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য। তিনি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. এবারের নির্বাচনে তিনি নৌকার বিপরীতে এনামুলের কাঁচি প্রতীককে সমর্থন করছেন।
আবুল কালাম আজাদ এ আসনে দলীয় মনোনয়ন পেয়ে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হয়েছেন। তিনি তাহেরপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। বর্তমান এমপি এনামুল স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ায় বিভক্ত বাগমারা উপজেলা আওয়ামী লীগ। এনামুল হকের পক্ষ নিয়েছেন নেতা-কর্মীদের একটি অংশ। অন্য অংশ কালামের জন্য। উভয় দলই দাবি করছে, দলের অধিকাংশ নেতা-কর্মী তাদের পাশে রয়েছেন।
এমন পরিস্থিতিতে কালাম দলের অনুসারী হিসেবে পরিচিত উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম হেলালের সভাপতিত্বে সোমবার কার্যনির্বাহী কমিটির জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। দলীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বলা হয়, জেলা সভাপতি অনিল কুমার সরকারসহ ১৭ নেতা নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
সভা শেষে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অনিল কুমার সরকার, স্বতন্ত্র প্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এনামুল হক, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ভবানীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আবদুল মালেক মণ্ডল, মতিউর রহমান টুকু ও আফতাব উদ্দিন আবুল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আল মামুন প্রমুখ। প্রামানিকসহ ১৭ নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করা হয়। সমাপ্ত
এ বিষয়ে এমপি এনামুল হক বলেন, আমি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। তাই আমাকে বা অন্য কাউকে বহিষ্কার করার অধিকার তাদের নেই। তারা তা করতে পারে না। বিষয়টি কেন্দ্রীয় নেতাদের জানিয়েছি।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অনিল কুমার সরকার বলেন, যারা এ ধরনের অবৈধ ও সংবিধান পরিপন্থী সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি প্রশ্ন করেন, ‘জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতিকে উপজেলা আওয়ামী লীগ কীভাবে দল থেকে বহিষ্কার করল? কেউ কি কখনও এটা শুনেছেন? এগুলোকে পাগলামি ছাড়া আর কী বলব!’
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম সারোয়ার আবুল বলেন, “জেলা সভাপতি অনিল কুমার সরকারও বাগমারা উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য। আমরা অনিল সরকারকে উপজেলা কমিটি থেকে বহিষ্কার করেছি। এসব সুপারিশ কেন্দ্রে পাঠানো হবে।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, এটা কীভাবে সম্ভব! জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিকে বরখাস্ত বা বহিষ্কার করতে পারেন কেবল দলীয় সভাপতি। সেই ক্ষমতা আর কারো নেই। বাগমারা উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতারা কোনোভাবেই কাজ ঠিক করেননি। এখন এমন পাগলামির সময় নয়।