চলমান হরতাল-অবরোধের মধ্যে ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস উপলক্ষে ঢাকায় বড় সমাবেশ করতে চায় বিএনপি। ওইদিন রাজধানীতে বিজয় মিছিল করার সিদ্ধান্ত নেয় দলটি। দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতারা জানিয়েছেন, বিজয় দিবসের কর্মসূচিকে তারা বড় সমাবেশ করার সুযোগ হিসেবে ব্যবহার করতে চান।
আগামী ১৮ ডিসেম্বর রাজধানীতে বিজয় দিবসের মিছিল করবে আওয়ামী লীগ।
গত সোমবার বিকেলে আওয়ামী লীগ এ কর্মসূচি ঘোষণা করে। আওয়ামী লীগের ঘোষণার পর সোমবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বিজয় দিবসে মিছিল করার সিদ্ধান্ত হয়। গতকাল, নির্বাচন কমিশন ১৮ ডিসেম্বরের পর নির্বাচন-সংক্রান্ত সমাবেশে নিরুৎসাহিত করার ঘোষণা দিয়েছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু দেশের একটি জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, প্রতি বছরের মতো এবারও তারা বিজয় দিবসে মিছিল করবে।
দলীয় ফোরামে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
১০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে ঢাকাসহ সারাদেশে মানববন্ধন করেছে বিএনপি। গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় গণসমাবেশের ৪৩ দিন পর রাজধানীসহ সারাদেশে দলীয় ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করে দলটি। তবে ওইদিনের কর্মসূচিতে দেখা যায়নি সিনিয়র নেতাদের।
এতে মধ্যবিত্তের অনেক নেতা উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপির একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, বিজয় দিবসে মিছিল হবে কি হবে না তা নিয়ে দলের নীতিনির্ধারকরা দ্বিধাদ্বন্দ্বে ছিলেন। আওয়ামী লীগের ঘোষণার পর এখন বিএনপিকে কর্মসূচি করতে দেওয়া হবে বলে বিশ্বাস তৈরী হয়েছে। আর বিজয় উদযাপনে এমন দিবসের কর্মসূচি পালন করতে দিলে নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ বাড়বে বলেও মনে করেন তারা।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বিজয় দিবসের মিছিলে ঢাকার আশপাশের জেলা থেকেও নেতাকর্মীদের জড়ো করার কথা ভাবছে বিএনপি।
মিছিলের অনুমতি চেয়ে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে পুলিশকে চিঠি দেওয়া হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা কালের দেশের একটি জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ১৭ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। ১৮ ডিসেম্বর নির্বাচনী প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে। এরপর শুরু হবে নির্বাচনী গণসংযোগ। ১৮ ডিসেম্বরের পর বিএনপিও তাদের চলমান আন্দোলনের দ্বিতীয় পর্ব শুরু করবে। প্রতীক বরাদ্দের পর কঠোরভাবে কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নেয় দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। দ্বিতীয় পর্বের কর্মসূচি শুরুর আগে ঢাকায় বড় সমাবেশ করা গেলে নেতাকর্মীদের মধ্যে এক ধরনের উদ্দীপনা তৈরি হতে পারে বলে মনে করছেন তারা।
প্রায় দেড় মাসের হরতাল-অবরোধে নেতাকর্মীদের মধ্যে একঘেয়েমি তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন বিএনপি নেতারা। আন্দোলন এখনো সফল না হওয়ায় তাদের মধ্যে কিছুটা হতাশা বিরাজ করছে। তারপরও অন্তত নির্বাচন পর্যন্ত কঠোর কর্মসূচিতে থাকতে চায় দলটি।
হরতাল-অবরোধের মধ্যেও বিএনপি জনসংযোগ কর্মসূচি পালন করছে। এর মধ্যে বিএনপির কারাবন্দি নেতাকর্মীদের স্বজনদের উদ্যোগে মানববন্ধন, শ্রমিক সমাবেশ ও পেশাজীবী সমাবেশের আয়োজন করে দলটি। ১৪ ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবী দিবস এবং ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।