Saturday , November 16 2024
Breaking News
Home / Countrywide / হঠাৎই নারায়ণগঞ্জের একই এলাকা থেকের হস্যজনকভাবে ১৫ তরুণ নিখোঁজ, বেড়েছে নতুন উদ্বেগ

হঠাৎই নারায়ণগঞ্জের একই এলাকা থেকের হস্যজনকভাবে ১৫ তরুণ নিখোঁজ, বেড়েছে নতুন উদ্বেগ

এ যেন নতুন এক আতঙ্ক আর উৎপাতের সৃষ্টি হয়েছে না।নারায়ণগঞ্জে। জানা গেছে ঢাকা থেকে বেশ অদুরে নারায়ণগঞ্জের আড়াই হাজার নামের এক এলাকা থেকে রহস্যজনকভাবে হারিয়ে গেছেন বা উদাও হয়ে গেছেন ১৫ জন যুবক। আর এই ঘটনায় চাঞ্চল্যে সৃষ্টি হয়েছে সেখানে।এ দিকে তাদের মধ্যে অন্তত ছয়জন নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন নব্য জে’এ/’ম/বি’/তে জড়িয়েছেন বলে তথ্য পেয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট। অন্য নয় তরুণের বিষয়ে এখনো সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা যদিও বলছেন, নিখোঁজ বাকিরাও জঙ্গিবাদে জড়িয়েই হয়তো ঘর ছেড়েছেন। নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকায় ট্রাফিক পুলিশ বক্সের সামনে গত ১৭ মে প্লাস্টিকের ব্যাগের ভেতর থেকে একটি শক্তিশালী বোমা উদ্ধার করা হয়। ওই ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে গত রবিবার বিকাল ৪টায় যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে আবদুল্লাহ আল মামুন ওরফে ডেভিড কিলারকে গ্রেপ্তার করে সিটিটিসির বম্ব ডিসপোজাল টিমের সদস্যরা। জব্দ করা হয় একটি মোটরসাইকেল, যেটি ট্রাফিক পুলিশ বক্সে রাখা বোমা পরিবহনে ব্যবহৃত হয়েছিল। মামুনকে জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে অনেক কিছুই। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই আড়াইহাজার থানার নোয়াগাঁও এলাকার জঙ্গি আস্তানায় চালানো হয় অভিযান।

সেখান থেকে উদ্ধার করা হয় তিনটি শক্তিশালী আইইডি (ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস), ৩০০ গ্রাম লাল রঙের বিস্ফোরকজাতীয় পাউডার, সাতটি বিউটেন গ্যাসের ক্যান, এক সেট রিমোট কন্ট্রোল ডিভাইস, দুই প্যাকেট ছোট সাইজের বিয়ারিং বল, ৫০০টি ক্রিসমাস বাল্ব, এক রোল দুই ইঞ্চি সাদা কার্টন টেপ ও একটি মোটরসাইকেল। উদ্ধারকৃত মোটরসাইকেলটি নব্য জেএমবির সাংগঠনিক কাজে ব্যবহার করা হতো। পরবর্তী সময়ে সিটিটিসির বম্ব ডিসপোজাল ইউনিট বোমা তিনটি নিষ্ক্রিয় করে, যেগুলো আগের চেয়ে শক্তিশালী ছিল বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

সূত্র জানায়, আড়াইহাজার উপজেলার সাতগ্রাম ইউনিয়নের মিয়া সাহেবের বাড়ির পাশের নোয়াগাঁও কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের মুয়াজ্জিম ছিলেন মামুন। এ ছাড়া তিনি নোয়াগাঁও হাফেজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানার তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে কাজ করতেন। তার বাবার নাম হান্নান। গ্রামের বাড়ি সিরাজগঞ্জের কাজিপুরের চালিতাডাঙ্গায়। পড়াশোনা করেছেন সিরাজগঞ্জের একটি মাদ্রাসায়। পরে নোয়াগাঁও এলাকায় তার বোন ও বোন জামাইয়ের কাছে চলে আসেন। দেড় বছর আগে নব্য জেএমবিতে যোগ দেন তিনি।

সিটিটিসির সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আড়াইহাজার থানার নোয়াগাঁও এলাকার আশপাশের ১০ থেকে ১২টি গ্রামের অন্তত ১৫ তরুণ নিখোঁজ রয়েছেন। ওই গ্রামগুলোয় আহলে হাদিসপন্থি সদস্যদের প্রভাব রয়েছে।

জঙ্গি আস্তানাটিতে অভিযানের বিষয়ে জানাতে গতকাল সোমবার বিকাল ৩টায় ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করেন সিটিটিসি প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান। তিনি বলেন, পল্লবী থানার একটি মামলার পলাতক আসামি মো. কাউসার হোসেন ওরফে মেজর ওসামাকে গত রবিবার রাত ৮টায় কেরানীগঞ্জ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি নব্য জেএমবির সামরিক শাখার প্রশিক্ষক ও বোমা তৈরির মূল কারিগর। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানাধীন কাজীপাড়া এলাকায় অন্য একটি জঙ্গি আস্তানায় অভিযান পরিচালনা করে ১১ ইঞ্চি লম্বা বোমা তৈরির জিআই পাইপ, দুটি গ্রেনেড তৈরির জিআই বক্স, চারটি রিমোট কন্ট্রোল, দুটি জিহাদি বইসহ কিছু বিস্ফোরক দ্রব্য উদ্ধার করা হয়।

সিটিটিসি প্রধান জানান, গ্রেপ্তারকৃত মেজর ওসামা নব্য জেএমবির সামরিক শাখার প্রশিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় সংগঠনের সামরিক শাখার অন্য সদস্যদের সঙ্গে অনলাইন ও অফলাইনে যোগাযোগ রক্ষা করে বোমা তৈরির প্রশিক্ষণ দিতেন তিনি। সেই সঙ্গে নব্য জেএমবির আমির মাহাদী হাসান জন ওরফে আবু আব্বাস আল বাঙ্গালীর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন। সিটিটিসি সূত্র জানায়, নব্য জেএমবির বর্তমান আমির মাহাদী হাসান জন তুরস্কে বসে ওসামাসহ অন্য নেতাদের দিকনির্দেশনা দিতেন। তুরস্ক থেকে বিভিন্ন চ্যানেলে নিয়মিত টাকা পাঠাতেন এসব নেতার কাছে।

এ ছাড়া গ্রেপ্তারকৃত ওসামা তিন বছর আগে নব্য জেএমবিতে যোগ দেন। এর আগে কুমিল্লার একটি মাজারে বোমা রেখে এসেছিলেন তিনি। ঢাকার একটি বড় মন্দিরে হামলারও পরিকল্পনা ছিল তার। দুই সহযোগীকে নিয়ে ওই মন্দির রেকিও করা হয়। কিন্তু কড়াকড়ি নিরাপত্তার কারণে তাদের সেই চেষ্টা সফল হয়নি। একপর্যায়ে ওসামা তার সঙ্গীদের নিয়ে বান্দরবানের পাহাড়ি এলাকায় চলে যান। সেখান থেকে খুলনায় গিয়ে নানা ধরনের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। সূত্র আরও জানায়, পেটি ফান্ডের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করে বোমা তৈরির উপকরণ কিনতেন গ্রেপ্তারকৃত দুই জঙ্গি নেতা।

এ দিকে গ্রেফতারকৃতদের ইতিমধ্যে নেয়া হয়েছে পুলিশি হেফাজতে/ সেই সাথে তাদের কে নেয়া হয়েছে রিমান্ডে। যানা গেছে সেখান থেকে পাওয়া তথ্য দিয়ে পরবর্তি ব্যবস্থা নেয়া হবে তাদের বিরুদ্ধে।

About Ibrahim Hassan

Check Also

উপদেষ্টা পরিষদেই বৈষম্য

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে আঞ্চলিক বৈষম্যের অভিযোগ উঠেছে। ২৪ সদস্যের এই পরিষদে ১৩ জনই চট্টগ্রাম …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *