দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ থেকে নজরুল ইসলাম মঞ্জুকে অব্যাহতি দিয়েছে বিএনপি। তবে দল থেকে মঞ্জুকে অব্যাহতি দেওয়ায় মঞ্জুর পক্ষ নিয়ে প্রতিবাদ সরূপ খুলনার ১৬ নেতা পদত্যাগ করেছেন। এবং তারা এই পদত্যাগ পত্রে জানিয়েছেন বর্তমান দলের সিদ্ধান্তে আস্থা রাখতে পারছি না বিধায় পদত্যাগ করছেন।
নজরুল ইসলাম মঞ্জুকে বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার প্রতিবাদে খুলনার ১৬ নেতা পদত্যাগ করেছেন। এর মধ্যে খালিশপুর থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এস এম আরিফুর রহমান মিঠুও রয়েছেন। শনিবার রাতে এসব নেতা পদত্যাগ করেন। দলের মহাসচিবের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে এসএম আরিফুর রহমান মিঠু উল্লেখ করেন, দলের মূল ও ত্যাগী নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে খুলনা মহানগরের আহ্বায়ক কমিটি গঠনের অন্যায় সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে আমি মহানগরের কোষাধ্যক্ষ ও খালিশপুর থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দুটি পদ থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করছি। এদিকে রাতে খুলনা মহানগরীর ২২নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি-সম্পাদকসহ ১৪ জন নেতাকর্মী পদত্যাগ করেছেন। এরা হলেন- ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি এমকেএ তরিকুল্লাহ্, সাধারণ সম্পাদক মো. জাহিদ কামাল টিটো, সদস্য মো. সামছুল আলম খান, মো. তারিকুল আলম, সাহেব আলী, মো. নজরুল ইসলাম নান্না, মো. রফিক, মো. ফজলুর রহমান, জাহাঙ্গীর মল্লিক, মো. বেলাল তালুকদার, এসএম শাহাব উদ্দিন, মো. আবুল বাশার ও কবির আহমেদ।
নগরীর ২২ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি এমকেএ তারিকুল্লাহ বলেন, নজরুল ইসলাম মঞ্জুকে অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানার পর তাৎক্ষণিক আমি ও সাধারণ সম্পাদকসহ নেতাকর্মীরা পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। নজরুল ইসলাম মঞ্জুর বিরুদ্ধে অসম্মান ও অমর্যাদাকর পদক্ষেপ এবং সারাদেশে বিএনপির কমিটি গঠনের হাল-হকিকত দেখে আমরা বর্তমান দলের সিদ্ধান্তে আস্থা রাখতে পারছি না বিধায় পদত্যাগ করেছি। অপরদিকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে মহানগর স্বেচ্ছাসেবক ফোরামের ১ম যুগ্ম-আহ্বায়ক সারুজ্জামান মুকুল পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। খালিশপুর থানা বিএনপির সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক এসএম আরিফুর রহমান মিঠু বলেন, খুলনায় একজনকে প্রতিষ্ঠিত করতেই ত্যাগী ও সংগ্রামী নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে মহানগর বিএনপির কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই প্রক্রিয়া আমার কাছে ভালো লাগেনি, যে কারণে আমি স্বেচ্ছায় দলের খালিশপুর থানা কমিটির সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে পদত্যাগ করেছি।
তিনি বলেন, দলের দীর্ঘদিনের আন্দোলন সংগ্রামে ত্যাগী নেতা নজরুল ইসলাম মঞ্জুকে তার পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। যা আমাদের হতাশ করেছে। কয়েকদিন আগে তাকে পু/লি/শ মে/রে/ছে, তিনি জে/ল খেটেছেন। রক্তের দাগ শুকানোর আগে এই ধরনের সিদ্ধান্ত কেন? কাউকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য যে অন্যায় কাজগুলো হচ্ছে এটা কখনো মানি না, মানবও না। এর আগে শনিবার দুপুরে খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম মঞ্জুকে দল থেকে অব্যাহতি দেয় বিএনপি। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে তাকে দল থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় বলে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে জানানো হয়।
দীর্ঘ দিন ধরে ক্ষমতার বাইরে রয়েছে বিএনপি দল। এবং দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরাজ করছে নানা ধরনের অস্থিরতা। তবে বর্তমান সময়ে দলটির কেন্দ্রীয় পর্যায়ের নেতাক্রমীরা দলের মধ্যে থাকা সকল অনিয়ম এবং নেতাকর্মীদের মধ্যে সৃষ্টি হওয়া সকল অস্থিরতা নিরসনে নিরলস ভাবে কাজ করছে। ইতিমধ্যে এই ক্ষেত্রে দলের কেন্দ্রীয় নেতারা গ্রহন করেছেন নানা ধরনের পদক্ষেপ।