বর্তমান সময়ে দেশে অনলাইন ভিত্তিক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান থেকে পন্য ক্রয়-বিক্রয়ের প্রবনতা ব্যপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এরই সূত্র ধরে দেশে গড়ে উঠেছে অসংখ্য অনলাইন ভিত্তিক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান। এদেরই মধ্যে অন্যতম একটি ইভ্যালি। এই প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে নানা ধরনের অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এরই লক্ষ্যে এই প্রতিষ্ঠানের তদন্তে নামে দুদক। তবে এবার তারা এই তদন্ত কার্য থেকে সরে এসেছে এবং জানিয়েছে এর কারন।
ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির তদন্ত থেকে সরে এলো দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ইভ্যালি পরিচালনার জন্য উচ্চ আদালত থেকে সাবেক বিচারপতিসহ চারজনকে দায়িত্ব দেওয়ার একদিন পরই দুদক এই তথ্য জানালো। আজ মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) বিকেলে দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈন উদ্দিন আব্দুল্লাহ গণমাধ্যমকে এতথ্য জানান। তিনি বলেন, ই-কমার্স বা ইভ্যালির দুর্নীতি দুদকের শিডিউলভুক্ত অপরাধ নয়। মানি লন্ডারিংয়ের বিষয়টি দেখে আমরা আমলে নিয়েছিলাম। এখন মানি লন্ডারিংয়ের বিষয়টিসহ অন্য সংস্থা তদন্ত করবে।
২০২০ সালের নভেম্বর থেকে ইভ্যালির বিষয়ে তদন্ত শুরু হলেও চলতি বছরের জুলাইয়ে এসে তা গতি পায়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ইভ্যালির মানি লন্ডারিংয়ের বিষয়ে তদন্তে নামে দুদক। গত নভেম্বর থেকে মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে ইভ্যালির বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছিল দুদক। এমনকি তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ইভ্যালির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. রাসেলের বিদেশগমনে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। গত ১৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে ইভ্যালির দুই শীর্ষ কর্মকর্তা শামীমা নাসরিন ও রাসেলকে গ্রেফতার করে র্যাব। অর্থ নিয়ে যথাসময়ে পণ্য ডেলিভারি না দেওয়ায় গুলশান থানায় দায়ের করা একজন গ্রাহকের মামলায় তাদের গ্রেফতার করা হয়। এরপর একে একে তাদের বিরুদ্ধে আরও অন্তত ছয়টি মামলা হয়েছে।
এর আগে ১৮ অক্টোবর ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি পরিচালনার জন্য আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি এইচ এম সামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। সেই গঠিত কমিটিতে স্থান পেয়েছেন ওএসডি হওয়া রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবীর মিলন। উক্ত কমিটিতে তিনি ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। সরকারি বেতনে ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হিসেবে থাকবেন তিনি। বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। পাঁচ সদস্যের কমিটিতে তাকে রাখা প্রসঙ্গে হাইকোর্টে বলেছেন, মাহবুব কবীরের সঙ্গে কথা বলেছি। কাজের প্রতি তার আগ্রহ দেখে ভালো লেগেছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন বিভাগের সাবেক সচিব মোহাম্মদ রেজাউল আহসান, ওএসডিতে থাকা আলোচিত অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবীর মিলন, চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট ফখরুদ্দিন আহম্মেদ, কোম্পানি আইন বিশেষজ্ঞ আইনজীবী ব্যারিস্টার খান মোহাম্মদ শামীম আজিজ।
ইতিমধ্যে আলোচিত ও সামালোচিত অনলাইন ভিত্তিক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি পরিচালানয় ৪ সদস্যের বোর্ড গঠন করেছে উচ্চ আদালত। এদের মধ্যে সাবেক বিচারপতি এইচ এম সামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে ইভ্যালির অর্ন্তবর্তীকালীন এমডির দায়িত্ব দিয়েছে উচ্চ আদালত।