সাম্প্রতিক সময়ে ভোজ্যতেলের দাম অতিরিক্ত বৃদ্ধি পাওয়ায় সাধারণ জনগণের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে। সারাদেশ খাদ্যদ্রবের দাম বৃদ্ধির জন্য বিগত বেশ কিছুদিন ধরে বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। দিনে দিনে সংবাদ মাধ্যমে উঠে আসছে দ্রব্যমূল্য নিয়ে নানা বিষয়। এসকল খাদ্যদ্রবের দাম বৃদ্ধির কারণে নিরুপায় হয়ে সাধারণ মানুষ জড়িয়ে পড়ছে নানা ধরনের দুর্নীতি ও অপরাধ মূলক কর্মকাণ্ডে। এমনি একটি অপরাধ মূলক কর্মকান্ডের ঘটনা সাম্প্রতিক সময়ে বেশ ভাইরাল হয়।
এতদিন চোরেরা বিলাস দ্রব্য, স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ টাকা টার্গেট করলেও হঠাৎ করে দাম বেড়ে যাওয়ায় শরীয়তপুরে দোকান থেকে ভোজ্যতেল চুরি হচ্ছে। আর বাজারে যথারীতি সয়াবিনের ডাবল সেঞ্চুরি দেখে আতঙ্কিত ক্রেতা।
বোতলজাত তেলের সরবরাহ হঠাৎ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এক সপ্তাহ ধরে শরীয়তপুরে ড্রামে খোলা এসব তেল বিক্রি হচ্ছে। পাইকারি পর্যায়ে ভোজ্যতেলের সংকটের মধ্যেই অপরিশোধিত তেল বিক্রি শুরু করেছে খুচরা বিক্রেতারা। দোকানের সামনে ড্রাম ভর্তি সয়াবিন ও পাম তেল দেখা যায়।
কিন্তু তাতেও বাধ সেঁধেছে চোরেরা। সম্প্রতি বিভিন্ন মুদি দোকানে অভিযান চালিয়ে রাতের আঁধারে সয়াবিন তেল লুট করছে একদল চোর। যা সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়ে। একের পর এক দোকানে সয়াবিন তেল চুরির ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বছরের পর বছর তেলের ড্রাম বাইরে থাকলেও সয়াবিন তেল চুরির ঘটনা এই প্রথম। একজন দোকানদার জানান, তারা ১১ ব্যারেল তেল চুরি করেছে।
সয়াবিনের পাশাপাশি জ্বালানি তেলও চোরের নজরে পড়ে। শুধু সদর নয়, গোসাইরহাটসহ অন্যান্য উপজেলায় সহিংসতা বেড়েছে। সম্প্রতি কয়েকটি দোকান থেকে মোবাইল ও ব্যাটারিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে গেছে একদল চোর। তবে ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, ভিডিও ফুটেজ থাকলেও চোর ধরতে পুলিশের আন্তরিকতা নেই।
তবে পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আক্তার হোসেন ( Akhter Hossain ) জানান, তেল চুরির ঘটনা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এ ব্যাপারে পালং থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে পুলিশ কর্মকর্তা জানান। তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, চোরদের গ্রেফতার করে উপযুক্ত শাস্তির আওতায় আনার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এমন সময় দোকানে কাউকে ২০ টাকায় তেল কিনতে আসতে দেখা যায়। একটি দৃশ্য দেখে এটা স্পষ্ট যে ভোক্তাদের সত্যিই একটি খারাপ অবস্থায় আছে.সয়াবিনের দাম ডাবল সেঞ্চুরির হওয়ায় গ্রামের বাজারে ক্রয়ক্ষমতা হারিয়েছে অনেকেই।
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে খাদ্যদ্রবের দাম বৃদ্ধির করনে সারাদেশের মানুষ বিপাকে পড়েছেন। সরকার টিসিবির (TCB ) পণ্যের সহায়তা নিতে পরামর্শ দিলেও টিসিবির লাইনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাড়িয়ে থেকে অবশেষে পণ্যের স্টক ফুরিয়ে যাওয়ায় খালি হাতে বাড়ি ফিরছেন অনেকেই। কিছু ব্যবসায়ীরা টিসিবির পণ্য কমদামে ক্রয় করে বাজারে বেশিদামে বিক্রির অভিযোগ ও উঠে এসেছে সংবাদ মাধ্যমে। বেশ কিছু জায়গায় টিসিবির পণ্য বিক্রয় স্থলে পুলিশ মোতায়ন করলেও নিয়ন্ত্রণে আসছেনা এসকল দুর্নীতি, এমন অভিযোগ করেছেন অনেকেই।