ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ দীর্ঘ দিন ক্ষমতা থাকায় দলের নেতাকর্মীরা দ্বন্দ্বে জড়াচ্ছে এমনটায় মন্তব্য করেছেন অনেকে। যদিও এমন ঘটনা নতুন নয় কিন্তু দলের সাধারন সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের উপস্থিতির সত্বেও এমন মা/রধরের ঘটনায় কিসের ইঙ্গিত বলে সমালোচনার তীর দলটির দিকে। ক্ষমতাসীনদের আভ্যন্তরীন কোন্দল যেন লাগাম টানা যাচ্ছে। বহুবার এ ব্যাপারে শীর্ষ নেতৃবৃন্দ হু/শিয়ারি দিয়েছেন কিন্তু পরিবর্তন নেই।
ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের লালবাগ থানা ইউনিটের সম্মেলনে আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের উপস্থিতিতেই বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগের চার পক্ষ।
এসময় বিশৃঙ্খলা থামাতে গিয়ে মাইক হাতে নিয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ হুমায়ুন কবির ‘শুয়োরের বাচ্চা’ বলে গালি দেন বিশৃঙ্খলাকারীদের।
মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর লালবাগের নবাবগঞ্জ পার্কে লালবাগ থানা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সম্মেলনে নেতাকর্মীদের মধ্যে পাঁচ দফায় হাতাহাতি মা/রামারি হয়েছে। মাইকে বারবার নির্দেশ দিলেও বিশৃঙ্খলা থামেনি।
রাজধানীর লালবাগের এই এ থানাতেই বাড়ি ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবিরের।
সম্মেলনে নেতাদের নামে স্লোগান দেওয়া নিয়ে হট্টগোল ও বাকবিণ্ডতা শুরু হয়।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য ড. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, কাউন্সিলর হাসিবুর রহমান মানিক ও হাজী সেলিমের ছেলে সোলায়মান সেলিমের সমর্থকদের মধ্যে হাতাহাতি ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়েছে।
এসময় বিশৃঙ্খলা থামাতে গিয়ে মাইক হাতে নিয়ে হুমায়ুন কবির বলেন, স্লোগান বন্ধ করো। স্লোগান বন্ধ কর ‘শুয়োরের বাচ্চারা’।
সোলায়মান সেলিমের কর্মীরা মানিকের সাথে ওই ঘটনার পর সবাই ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সদস্য এবং ২ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আনিসুর রহমান আনিস বিরোধী স্লোগান দেন। আনিস এ সময় স্টেজে ছিলেন।
মাইকে সোলায়মান সেলিমকে উদ্দেশ্য করে কাউন্সিলর আনিসুর বলেন, সোলায়মান সেলিম মাস্তানি করবেন না। আপনার চেয়ে বড় মাস্তান মঞ্চে আছে।
স্লোগানধারী নেতাদের উদ্দেশ্যে বলেন, সিসিটিভি ফুটেজ দেখে সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ঘরে কাউকে থাকতে দেওয়া হবে না। ঘুমাতে দেওয়া হবে না।
পরে কেন্দ্রীয় নেতাদের বক্তব্য শুরু হলে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক বক্তব্য দেয়ার মধ্যেই সম্মেলনের মাঠে আবারও মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন হাসিবুর রহমান মানিক ও হুমায়ুন কবির সমর্থকরা।
এ সময় আবদুর রাজ্জাক নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, মারামারি থামানোর জন্য আহ্বান করছি। বিশৃঙ্খলা করবেন না, বিশৃঙ্খলা করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আপনারা থামুন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আপনার মাঝে এসেছে, এর গুরুত্ব উপলব্ধি করুন।
এ সময়ে আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, লাফালাফি বাড়াবাড়ি করবেন না। নির্বাচনের ১৪ মাস বাকি কিন্তু শোডাউন দিয়ে শক্তি দেখাতে শুরু করেছে। আপনারা কেউ এমপি হতে পারবেন না, নেতা হতে পারবেন না।
এ বিষয়ে দেশের একটি জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যমকে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির বলেন, আমরা একটা ভালো সম্মেলন করি এটা জালাল(ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন) সাহেবও চান না, হাজী সেলিমও চায় না। তারা শান্তিপূর্ণ সম্মেলন চায় না।
‘হাজী সেলিমের ছেলে মঞ্চে বক্তৃতা দেওয়ার জন্য প্রস্তাব পাঠান।কিন্তু মহানগরের নেতারাই তো সুযোগ পায়নি সেখানেও (হাজী সেলিমের পুত্র) কোন পজিশনেই নেই। এসময় হাজী সেলিমকে মিথ্যা মামলা থেকে মুক্তি দেয়ার কথা বলা হয়। কিন্তু আমরা কেন এসব কথা বলব?
গালি প্রসঙ্গে এসময় হুমায়ুন কবির বলেন, ‘মানুষের ধৈর্য্যেরও তো সীমা থাকে।
প্রসঙ্গত, সাধারন সম্পাদকের উপস্থিতিতে নেতাকর্মীদের এমন কর্মকান্ড দলকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। সামনে অনেক দিন রয়েছে নির্বাচন ঘিরে কি হতে পারে বিষয়টি নিয়ে দলের শীর্ষ নেতারা ভাবছেন।