Friday , November 15 2024
Breaking News
Home / Countrywide / স্রোতের বিপরীতে বহমান এক মুক্তিযোদ্ধা সফিকুল,নেন না কোন মুক্তিযোদ্ধা ভাতা বা রাষ্ট্রিয় সন্মাননাও

স্রোতের বিপরীতে বহমান এক মুক্তিযোদ্ধা সফিকুল,নেন না কোন মুক্তিযোদ্ধা ভাতা বা রাষ্ট্রিয় সন্মাননাও

মুক্তিযোদ্ধা নামটাই কেমন যেন একটা সম্মানের। এই সম্মান কে না পেতে চাই, কিন্তূ এমন কি শুনেছেন মুক্তিযোদ্ধা হয়েও মুক্তিযুদ্ধের সম্মান চান না! হ্যাঁ এমনই একজন মুক্তিযোদ্ধার খবর মিলেছে দিনাজপুরে। জানালেন নিজের মনের ক্ষোভ গুলো। জানালেন কেন তিনি ভাতা নেন না মুক্তিযোদ্ধা বাবদ কোনো টাকা নেন না সরকারের কাছ থেকে।

মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়া বীর মুক্তিযোদ্ধাদের রাষ্ট্রীয়ভাবে দেওয়া সম্মানী ভাতার টাকা নেন না দিনাজপুরের বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক মেয়র সফিকুল হক ওরফে ছুটু। মৃত্যুর পরও রাষ্ট্রীয় সম্মাননা নিতে চান না বলে পরিবারের সদস্যদের জানিয়ে রেখেছেন। কারণ হিসেবে বলছেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের ধারেকাছে আসেননি, এমন অনেকেই মুক্তিযোদ্ধা বনে গেছেন, রাষ্ট্রীয় সম্মান পাচ্ছেন। অথচ জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করেছি, যুদ্ধে বাবাকে হারিয়েছি, ভাইকে হারিয়েছি। অ–মুক্তিযোদ্ধাদের ভিড়ে নিজেকে হারাতে চাই না। ভাতা কিংবা রাষ্ট্রীয় সম্মান গ্রহণ করতে না চাওয়াটাই আমার প্রতিবাদ।’

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে সম্প্রতি দিনাজপুর প্রথম আলো বন্ধুসভা আয়োজিত ‘এসো মুক্তিযুদ্ধের গল্প শুনি’ অনুষ্ঠানে আলোচনাকালে সফিকুল হক এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বন্ধুসভার সদস্য সুব্রত সরকার ও কেয়া চৌধুরীর সঞ্চালনায় সদস্যদের দুই ঘণ্টাব্যাপী মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণাসহ সাম্প্রতিক সময় ও আগামীর সোনার বাংলা গড়তে নিজের মতামত ব্যক্ত করেন সফিকুল হক।

সফিকুল হক দিনাজপুর শহরের বালুবাড়ি এলাকার ভাষাসৈনিক মো. আমিনের ছেলে। মুক্তিযুদ্ধের সময় দিনাজপুর সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিলেন। দুবার দিনাজপুর পৌরসভার মেয়র ছিলেন। বর্তমানে দিনাজপুর ডায়াবেটিক হাসপাতাল, চক্ষু হাসপাতাল, এম আবদুর রহিম সমাজকল্যাণ ও মুক্তিযুদ্ধ গবেষণাকেন্দ্রসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কাজের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন।

যুদ্ধদিনের স্মৃতিচারণা করে সফিকুল হক বলেন, ‘দিনে দিনে মুক্তিযোদ্ধার তালিকাটা ছোট হওয়ার কথা। কিন্তু সেটা বড় হচ্ছে। দুর্নীতির নিয়ন্ত্রণ নেই। …সামগ্রিক উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে, দুর্নীতি থেকে উত্তরণ ঘটাতে আগামী প্রজন্মই এখন ভরসা। ৫০ বছরেও যা আমরা পারিনি, আগামী প্রজন্মকে সেটা বাস্তবায়ন করতে হবে। নতুন প্রজন্মকে সঠিক দিকনির্দেশনা ও সঠিক ইতিহাস জানাতে পারলে আমাদের অসমাপ্ত কাজগুলো সমাপ্ত করা সম্ভব হবে।’

এ এক অন্য রকম প্রতিবাদ। কথাটা নিজের মন থেকে বলেছেন যেখানে মুক্তিযুদ্ধ শেষ হয়েছে অনেক বছর আগে সেখানে তো মুক্তিযোদ্ধা কমার কথা কিন্তু বাড়ছে কেন! একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার এমন প্রতিবাদ আসলেই হৃদয়বিদারক। তবে শেষ পর্যন্ত কি হবে সেটা আমাদের অজানা। নতুন নতুন ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে সরকার কোনো পদক্ষেপ নেবে কিনা সে ব্যাপারে এখনো কিছু বলা হয়নি। শুধু অপেক্ষার পালা পরবর্তীতে কি হয়।

About Ibrahim Hassan

Check Also

উপদেষ্টা পরিষদেই বৈষম্য

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে আঞ্চলিক বৈষম্যের অভিযোগ উঠেছে। ২৪ সদস্যের এই পরিষদে ১৩ জনই চট্টগ্রাম …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *