Thursday , November 14 2024
Breaking News
Home / Countrywide / স্যুটকেসে মৃতদেহ, পতিতাপল্লিতে গিয়ে মিলনকে ফিরতে হলো লাশ হয়ে

স্যুটকেসে মৃতদেহ, পতিতাপল্লিতে গিয়ে মিলনকে ফিরতে হলো লাশ হয়ে

কয়েকদিন আগে একটি ঘটনা সারাদেশে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করে। ফরিদপুর শহরের নতুন বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে স্যুটকেসের ভেতর থেকে লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। উদ্ধারকৃত লাশের পরিচয় ও হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের বারান্দায় এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোরশেদ আলম এ তথ্য জানান।

নিহত ব্যক্তির নাম মিলন প্রামাণিক (৩৯)। সে পাবনা সদরের নিউ গোহাইবাড়ি মহল্লার কাশ প্রামাণিকের ছেলে এবং রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ ঘাট এলাকায় ইটভাটায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করত।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, রোজিনা আক্তার ওরফে কাজলের (৩২) সঙ্গে গোলন্দের দৌলতদিয়া পতিতাপল্লীর এক নারীর সঙ্গে মিলন প্রামাণিকের সম্পর্ক ছিল। এ সুযোগে রোজিনা মিলনকে বিভিন্ন সময়ে তিন থেকে চার লাখ টাকা ধার দেন।

এ টাকা ফেরত না দেওয়া নিয়ে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। ২৬ জানুয়ারি দিবাগত রাত ২টার দিকে রোজিনা নিজ ঘরে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে মিলনকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরে মিলনের মাথা ও পা পেঁচিয়ে একটি স্যুটকেস ভর্তি করা হয়।

এরপর একটি রিকশা নিয়ে গোয়ালন্দ বাসস্ট্যান্ডে যান এবং সেখান থেকে ৬০০ টাকায় একটি মাহেন্দ্র ভাড়া করে ফরিদপুর বাসস্ট্যান্ডে নিয়ে যান। এদিকে, রিকশাচালক এবং মহেন্দ্র চালক তাকে স্যুটকেসটি তুলতে এবং নামাতে সহায়তা করে। স্যুটকেসটি ভারী কেন জানতে চাইলে রোজিনা বলেন, এর ভেতরে এয়ার কন্ডিশনার রয়েছে।

পুলিশ সুপার জানান, পরে স্যুটকেসটি ফরিদপুরে নিয়ে এসে ঢাকাগামী বিকাশ পরিবহনের একটি বাসের টিকিট কিনে বাসের লাগেজ লকারে তুলে নেন। বাসটি চলে গেলে মহিলাকে খুঁজে না পেয়ে বাসের পরিচারিকারা বাসস্ট্যান্ডের গোল্ডেন লাইন পরিবহন কাউন্টারের সামনে একটি বৈদ্যুতিক খুঁটির কাছে স্যুটকেসটি ফেলে যায়।

পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, ওই মহিলা মৃতদেহের নিষ্পত্তির জন্য অভিনব সব পদ্ধতি ব্যবহার করেছেন। তার ব্যবহৃত রিকশা ও মাহেন্দ্র চালকদের গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা হত্যা মামলার সাক্ষী হবেন। গতকাল বিকেল ৩টার দিকে রোজিনাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ডিএমপির কদমাতলী থানার সহায়তায় ঢাকার জুরায়ান এলাকা থেকে এ ঘটনায় ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ শামীম হাসান বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে গত ২৭ জানুয়ারি ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মামলার তদন্তকারী ফরিদপুর কোতয়ালী থানার আরেক উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুজন বিশ্বাস জানান, আজ বিকেলে রোজিনাকে আদালতে সোপর্দ করা হবে। স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি না দিলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে নেওয়া হবে।

ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোরশেদ আলম বলেন, স্যুটকেসে লাশ উদ্ধারের ঘটনা সারাদেশে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনার রহস্য উদঘাটন হয়েছে দুদিনের মধ্যে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও অভিযান) শৈলেন চাকমা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোঃ সালাউদ্দিন, ফরিদপুর কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাসানুজ্জামান, কোতয়ালী থানার পরিদর্শক (অপারেশন) মো. আব্দুল গাফফার, পুলিশের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (প্রশাসন) তুহিন লস্কর, পুলিশ পরিদর্শক আবু তাহের, ফরিদপুর কোতয়ালী থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুজন বিশ্বাস ও এ মামলার বাদী এসআই মোহাম্মদ শামীম হাসান।

About Zahid Hasan

Check Also

উপদেষ্টা পরিষদেই বৈষম্য

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে আঞ্চলিক বৈষম্যের অভিযোগ উঠেছে। ২৪ সদস্যের এই পরিষদে ১৩ জনই চট্টগ্রাম …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *