বিভিন্ন সময় গণমাধ্যমে উঠে আসতে দেখা যায় স্ত্রী বা বিয়ের দাবিতে প্রেমিকা প্রেমিকের বাড়িতে অবস্থান করে অনশন করে থাকে। যেটা নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়ে প্রেমিকের পরিবার। এবার রাজশাহী জেলার বাঘা উপজেলায় বিয়ের দাবি নিয়ে ১৭ বছর বয়সী এক এসএসসি পরীক্ষার্থীর বাড়িতে লোকজন নিয়ে অনশনে বসেছেন ওই এলাকারই ২৪ বছর বয়সী দুই সন্তানের জননী।
গতকাল মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) রাত ৮টা থেকে উপজেলার মনিগ্রাম ইউনিয়নে ওই কিশোরের বাড়িতে অনশন শুরু করেন তিনি। কিন্তু প্রেমিকা আসার খবরে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায় ঐ প্রেমিক। বিয়ে না হওয়া পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ওই গৃহবধূ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি ওই গৃহবধূর সঙ্গে এসএসসি পরীক্ষার্থীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সম্পর্কে জড়ানোর পর বিয়ের জন্য চাপ দেন গৃহবধূ। কিন্তু প্রেমিক বিয়ে করতে রাজি হননি। একপর্যায়ে মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) রাত ৮টার দিকে প্রেমিকের বাড়িতে এসে অনশন শুরু করেন।
অনাহারে থাকা ওই গৃহবধূ জানান, একই এলাকায় থাকার কারণে তাকে দীর্ঘদিন ধরে চেনেন। কিন্তু ঈদের কয়েকদিন আগে থেকেই ফোনে কথা হয়। ঈদের কয়েকদিন পর প্রেমের সম্পর্ক হয়। একদিন ইমোতে কথা বলার সময় সে আমার কাছে আপ’ত্তিকর ছবি চেয়েছিল। সেই ছবি দেওয়ার পর সে ব্ল্যাকমেইল করে এবং শারীরিক সম্পর্কের জন্য চাপ দেয়। আমি আমার স্বামীকে ঘুমের ওষুধ খেতে বাধ্য করে এক রাতে তার বাড়িতে যাই। আমাদের শারীরিক সম্পর্কও হয়। এ সময় সে আমাকে বিয়ে করে আমার মেয়েদের দায়িত্ব নেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন। মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে নিজ বাড়িতে অবস্থান করি। কিন্তু জানতে পারলাম সে বাড়িতে নেই।
ওই গৃহবধূ আরও বলেন, স্বামী ছেড়ে এসেছি, বিয়ে করতে হবে। সে না আসা পর্যন্ত আমি এখানে অনশন করবো এবং আমার সঙ্গে যা হয়েছে তার বিচার দাবি করব।
অভিযুক্ত কিশোরের বড় বোন জানান, মেয়েটি এলে তার সঙ্গে ৮-১০ জন ছেলেও আসে। তারা আমাদের বাড়ির সামনের ইটের দেয়াল ও গেট ভেঙ্গে মহিলাকে ঘরে ঢুকতে দেয়।
মনিগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ঘটনা শুনে সেখানে গিয়েছিলাম। ওই গৃহবধূকে ঐ কিশোরের বাড়ির লোকজনের হেফাজতে রেখে এসেছি। একই সঙ্গে ওই ছেলেটিকে হাজির হতে বলেছি। সে এলে সমাধান হবে।
এ ঘটনার বিষয়ে মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন যিনি বাঘা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, তিনি জানিয়েছেন, বিষয়টি সম্পর্কে জানার পর সেখানে ফোর্স পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে বিষয়টি যেহেতু পারিবারিক এবং মানসম্মানের ব্যাপার তাই স্থানীয় পর্যায়ে সেটা সুরাহা করার কথা বলা হয়েছে। তবে যদি কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন, তাহলে আমরা সেই মোতাবেক আইনগত পদক্ষেপে যাব।