দেশে আয়োজিত এক বাণিজ্য মেলার সুবাদে পাকিস্তানি নাগরিক দানিশের সঙ্গে পরিচয় হয় ফাতেমার। এরপর থেকে দিন যতই যাচ্ছিল ততই যেন, তাদের মধ্যকার এ সম্পর্ক আরও গভির হচ্ছিল।এরই ধারাবাহিকতার মধ্য দিয়ে একপর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। আর এই সম্পর্ক চিরস্থায়ী করতে শেষমেষ বিয়েও করেন তারা। এরপর স্বামীর সঙ্গে পাকিস্তানে চলে যান ফাতেমা।
সেখানেই পরিচয় হয় ভারতীয় জাল মুদ্রা তৈরির এক চক্রের সঙ্গে। চক্রটি ফাতেমার সহায়তায় কয়েকদফা জাল মুদ্রার চালান নিয়ে আসে বাংলাদেশে। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক এ নেটওয়ার্কের সদস্যদের শনাক্ত করতে কাজ করছে গোয়েন্দা পুলিশ। খোঁজ নেওয়া হয়েছে তাদের সম্পদেরও।
গত ২৬ নভেম্বর ৭ কোটি ৩৫ লাখ জাল ভারতীয় মুদ্রাসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পুলিশের দাবি ছিল এটিই দেশের ইতিহাসে ভারতীয় জাল মুদ্রার সবচেয়ে বড় চালান। গ্রেপ্তারকৃত দুজনের মধ্যে ফাতেমা আক্তার অপি চক্রটির বাংলাদেশের প্রধান হিসেবে কাজ করত।
মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয় গোয়েন্দা পুলিশকে। আবারও রিমান্ডে নেওয়া হয় আসামিদের। জিজ্ঞাসাবাদে ভারতীয় জাল মুদ্রা কীভাবে পাকিস্তানে তৈরি হয়ে শ্রীলংকা হয়ে বাংলাদেশে আসে, আর পরবর্তীতে এর গন্তব্য কোথায় সে বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়ার কথা জানিয়েছেন গোয়েন্দারা।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপকমিশনার (গুলশান বিভাগ) মশিউর রহমান বলেন, কয়েকটি আন্তর্জাতিক ও দেশীয় চক্র আছে, এখন পর্যন্ত আমরা সেটা জানতে পেরেছি। হঠাৎ করেই এত জাল রুপি তারা আনা নেওয়া করতে যায়নি, তাদের আগের অভিজ্ঞতা অবশ্যই থাকার কথা। এর আগেও ফাতেমা এবং তার স্বামী ধরা পড়েছিল আমাদের কাছে। তখনও তাদের কাছে জাল রুপি পাওয়া গিয়েছিল।
পুলিশ বলছে, বছর দশেক আগে ফাতেমার সঙ্গে বাণিজ্য মেলার একটি পাকিস্তানি স্টলে পরিচয় হয় দানিশের। বিয়ের পর পাকিস্তানে পাড়ি জমান ফাতেমা। জড়িয়ে পড়েন জাল রুপির কারবারে।
পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, কাদের কাছ থেকে এ জাল রুপি আনে, কাদের কাছে যায়, তাদেরকেও আমরা শনাক্ত করতে পেরেছি।
এদিকে সংবাদ মাধ্যমকে ফাতেমার বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ এনে গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে জাল রুপির ব্যবসা করে রাজধানী ঢাকাতে বাড়িও করেছেন ফাতেমা। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যান্য অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলেও জানিয়েছেন তারা।