বেশকিছু দিন আগেই গৃহবধূকে টার্গেট করেন লোকমান হোসেন ওরফে কালু। এরই ধারাবাহিকতায় সুযোগবুঝে স্বামীর পরিচয়ে ঘরে ঢুকে গৃহবধুকে অপহরণের পর নির্যাতনের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় অন্যতম প্রধান আসামি সেই কালুকে গ্রেপ্তারের পর এ ঘটনার রহস্য উদঘাটন করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। এরই মধ্যে জসিমকে কারাগারে নেয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে পুলিশ।
কালুর বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, গৃহবধূর স্বামীর সঙ্গে মেঘনা নদীতে মাছ শিকার করে কালু। কোনো একসময় বাড়িতে কথা বলার অজুহাতে গৃহবধূর স্বামীর মোবাইল নেন কালু। এতে তিনি গোপনে ওই নারীর নম্বর সংগ্রহ করে রাখেন। ৩০ নভেম্বর বিকেলে কণ্ঠ নকল করে স্বামী পরিচয় দিয়ে কালু ওই গৃহবধূকে কল দেন এবং রাতে বাড়িতে ফিরবেও বলে জানান। ওইদিন দিবাগত রাত ৩টার দিকে ফের কণ্ঠ নকল করে স্বামী পরিচয় দিয়ে কালু গৃহবধূকে ঘরের দরজা খুলতে বলেন। দরজা খুলে স্বামীকে দেখতে না পেয়ে গৃহবধূ দরজাটি বন্ধ করতে যায়। এতে তাৎক্ষণিক গৃহবধূর মুখ চেপে ধরে ও রশি দিয়ে বেঁধে একপর্যায়ে টানা-হেঁচড়া করে ঘর থেকে ৩০০ গজ দূরে ধানক্ষেতে নিয়ে অমানবিক নির্যাতন করে কালু। এতে গৃহবধূ অচেতন হয়ে পড়েন। পরে মৃতভেবে ধানক্ষেতে ফেলে রেখে পালিয়ে যান কালু।
বুধবার (১ ডিসেম্বর) সকালে স্থানীয়রা উপজেলার চরলরেঞ্চ ইউনিয়নের চরলরেঞ্চ গ্রামের ওই ধানক্ষেত থেকে বিবস্ত্র অবস্থায় গৃহবধূকে উদ্ধার করেন স্থানীয়রা। প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনায় গৃহবধূ বাদী হয়ে মামলা করলে রাতেই কালুকে চরলরেঞ্চের চৌধুরী বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। কালু ভোলা জেলার মাইজচর এলাকার মৃত রফিক মাঝির ছেলে। গৃহবধূর পাশের বাড়িতেই কালু ভাড়া ঘরে থাকতেন। সেখান থেকেই তার প্রতি কালুর খারাপ দৃষ্টি জন্মায়।
এদিকে এ ব্যাপারে কমলনগর থানার ওসি মোসলেহ উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সংবাদ মাধ্যমকে জানান, এ ঘটনায় মামলা দায়ের পরপরই অভিযান চালিয়ে কালুকে গ্রেপ্তারের পর রহস্য উদঘাটন করা হয়। এরই মধ্যে আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে নেয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।