Wednesday , December 25 2024
Breaking News
Home / Countrywide / স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশগ্রহন নিয়ে সুর বদলালো বিএনপি

স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশগ্রহন নিয়ে সুর বদলালো বিএনপি

আসন্ন উপজেলা পরিষদ ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বিভিন্ন পর্যায়ে দলের নেতা-কর্মীদের মতামত নিচ্ছেন বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব। এদিকে দলের স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞদের লিখিত প্রস্তাবও জমা দেওয়া হয়েছে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটি ও প্রভাবশালী দায়িত্বশীল সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। আগামী মার্চে সারাদেশে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের কথা জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

আগামী ৯ মার্চ ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন নির্বাচন ও কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। একই দিনে কয়েকটি পৌরসভার নির্বাচনও রয়েছে। পরে আনুষ্ঠানিকভাবে তফসিল ঘোষণা করা হবে বলে কমিশন জানিয়েছে।

বিএনপির দায়িত্বশীল নেতাদের সঙ্গে আলাপকালে জানা যায়, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অধীনে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নেবে কি না তা নিয়ে বিএনপিতে আলোচনা শুরু হয়েছে।

স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা উচিত বলে মনে করেন কয়েকজন নেতা। এতে সংগঠন শক্তিশালী হয়, তৃণমূল পর্যায়ে দায়িত্বশীল ও গ্রহণযোগ্য নেতৃত্ব পাওয়া যায় এবং দলে আস্থার পরিবেশ সৃষ্টি হয়।

এই সরকারের বিরুদ্ধে একদলীয় পদত্যাগ আন্দোলনের সময় স্থানীয় সরকার নির্বাচনে গিয়ে বিএনপি রাজনৈতিক কৌশলে পিছিয়ে পড়বে বলে কেউ কেউ বলছেন। একই সঙ্গে বিএনপির সঙ্গে যারা সরকারের পদত্যাগের যুগপৎ আন্দোলনে জড়িত, তারাও নেতিবাচক অবস্থান নিতে পারেন।

দলের স্থায়ী কমিটির ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো বলছে, তারেক রহমান ইতোমধ্যে উপজেলা নির্বাচনসহ স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে মতামত নেওয়া শুরু করেছেন। ইতোমধ্যে দলের একাধিক বিশেষজ্ঞও একটি প্রস্তাব জমা দিয়েছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে দলের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন বলেন, নির্বাচন নিয়ে আমরা এখনো আলোচনা করিনি, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে কিনা তা জানা যায়নি।

স্থানীয় সরকার নির্বাচনে কেন্দ্রীয় নেতারা আসলে শীর্ষ নেতৃত্বকে প্রভাবিত করছেন বলে দাবি করেছেন বিএনপির ঘনিষ্ঠ এক কর্মকর্তা। অনেক নেতাই নির্বাচনে আগ্রহী নন, বিশেষ করে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বৃত্তে কিছু কেন্দ্রীয় নেতা যারা পরবর্তী নেতৃত্ব তৈরি করতে নারাজ এবং স্থানীয়ভাবে প্রভাব হারানোর আশঙ্কা করছেন। তারা সবসময় একটি “বিকল্প নেতা” তৈরি হওয়ার সম্ভাবনাকে বাধা দেয়।

দলের বিভিন্ন পর্যায়ের আলোচনা থেকে জানা গেছে, বিগত কয়েকটি সিটি নির্বাচনে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের দিকে তাকালেই বিষয়টি পরিষ্কার হবে। নিশ্চিত বিজয়ী প্রার্থীদের ‘কৌশলগত কারণে’ ধরে রাখা হয়েছে। আর এর পেছনে রয়েছে ‘ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সার্কেল’-এর ভূমিকা।

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী ছিলেন নজরুল ইসলাম মঞ্জু। এরপর আর কোনো নির্বাচনে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেননি। কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের (কুসিক) দুইবার নির্বাচিত মেয়র মনিরুল হক সাক্কুকে ২০২২ সালের জুন মাসে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় বহিষ্কার করা হয়। বিদায়ী বছরে অনুষ্ঠিত সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিজয়ের নিশ্চিত পরিবেশ থাকলেও সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী অংশ নেননি।

গত বছরের ২২ জানুয়ারি স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিদের সঙ্গে তারিক রহমানের বৈঠকেও বিষয়টি উঠে আসে। বৈঠকে উপস্থিত কয়েকজনের দেওয়া তথ্যমতে, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নেওয়ার আঞ্চলিক প্রভাব ও কৌশল ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছে তুলে ধরেন বেশ কয়েকজন প্রতিনিধি।

বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত উপজেলা নির্বাচনে বিএনপির স্থানীয় নেতারা অংশ নেন। ২০১৮ সালের পর বিএনপি প্রথমবারের মতো স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে।

প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২৮ ফেব্রুয়ারি গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমরা স্থানীয় সরকারে আর কাউকে নির্বাচনে মনোনয়ন দেব না “, বলেন উল্লেখ করেন শায়রুল কবির খান।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের ঘনিষ্ঠ স্থায়ী কমিটির এক সদস্য বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে বিএনপি সম্মান করে না। সেক্ষেত্রে দলীয় অংশগ্রহণের প্রশ্নই আসে না।

স্থানীয় সরকার নির্বাচনের পর থেকে অনেকেই আগ্রহী হবেন বলে তিনি উল্লেখ করেন। আমরা নিরুৎসাহিত করতে পারি, কিন্তু বাধা দিতে পারি না। বহিষ্কার নাও হতে পারে। অনেকেই মার্কস ছাড়াই আবেদন করতে পারে। তবে এটা সত্য, আওয়ামী লীগ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বিএনপির জনগণকে জিততে দেবে না।

এরই মধ্যে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীকে মনোনয়ন না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।

বিএনপির কয়েকজন নেতা মনে করেন, বিএনপি নির্বাচনে এলে প্রার্থিতার বিষয়টি উন্মুক্ত রাখতে চায় ক্ষমতাসীন দল। সে কারণে দলীয় প্রতীকে মনোনয়ন দেওয়া হবে না।

চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সদস্য জয়নাল আবেদীন ফারুক বলেন, আওয়ামী লীগ নৌকা দেবে না, তাদের নৌকা ডুবে গেছে। তারা ৭ জানুয়ারি ডামি নির্বাচন করবে। আমরা এই সরকারের অধীনে গত নির্বাচনে যাইনি।

About Babu

Check Also

শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর ব্যাপারে নয়াদিল্লির জবাব, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পৌষ মাস নাকি সর্বনাশ?

ভারতে অবস্থানরত বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মন্তব্য করেছে। নয়াদিল্লি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *