স্বামীর অক্ষমতার কারণে পারিবারিক কলহের বিষয়টি দাম্পত্য জীবনে ঘটতে দেখাটা অনেক সময় হতে পারে। কিন্তু এই কারণে স্বামীর প্রান কেড়ে নেয় স্ত্রী ঐ ধরনের ঘটনা খুব কমই ঘটতে দেখা যায়। এবার তেমনই একটি ঘটনা ঘটলো সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলার একটি এলাকায়। মাত্র দেড় মাস আগে ঐ উপজেলার আগুনখালী গ্রামের ২৫ বছর বয়সী প্রয়াত আবুসামার ছেলে শরিফুল একই উপজেলার চরবেতকান্দি গ্রামের ফখরুল ইসলামের স্বামী পরিত্যক্তা মেয়ে ফারজানা খাতুনকে (১৮) বিয়ে করেন।
বিয়ের পর থেকেই শরিফুলের শারীরিক অক্ষমতার কারণে অসুখী ছিলেন ফারজানা। তিনি বিষয়টি তার আত্মীয়দের জানিয়ে ডিভো”র্স নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু স্বজনরা বিচ্ছেদের কথা জানালে তারা ফারজানাকে বকাঝকা করতেন। তাই সে পরিকল্পিতভাবে শরিফুলের হাত-পা বেঁধে করতোয়া নদীতে ফেলে দেয়।
মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) দুপুরে সিরাজগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শাহজাদপুর সার্কেল) হাসিবুল ইসলাম এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান। এর তিন দিন আগে শনিবার (১৪ জানুয়ারি) দুপুরে উপজেলার বেলইল ইউনিয়নের চরবেতকান্দি এলাকা থেকে নিথর দেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
হাসিবুল ইসলাম বলেন, শরিফুলের লা”শ উদ্ধারের তিন দিন পর হ”/ত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন হয়। সোমবার (১৬ জানুয়ারি) আদালতে ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দিতে হ”/ত্যার দায় স্বীকার করেন আসা”মি ফারজানা।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরও জানান, গত ৯ জানুয়ারি রাত ১১টার দিকে শরিফুল তার শ্বশুর বাড়িতে যান। ওই দিন বেলা তিনটার দিকে ফারজানা শরিফুলকে নদীর তীরে নিয়ে গিয়ে কবিরাজের বরাত দিয়ে জানায়, হাত-পা বাঁধা অবস্থায় নদীর পানি পান করলে শারীরিক অক্ষমতা দূর হবে। শরিফুল রাজি হলে ফারজানা তার লুঙ্গি ছিঁড়ে হাত-পা বেঁধে দেয়। এরপর প্লাস্টিকের বোতল হাতে নিয়ে নদী থেকে পানি আনতে গেলে ফারজানা তাকে ধাক্কা দিয়ে ঘাড় চেপে ধরে। ধ”স্তাধস্তির একপর্যায়ে ফারজানার হাত কামড়ে দেয় শরিফুল।
এ সময় ফারজানা ক্ষি”প্ত হয়ে শরিফুলের গলায় চেপে শ্বাসরোধ করে। পরে শরিফুলের নিথরতা নিশ্চিত হলে ফারজানা তার দেহটি পাশে থাকা নৌকার নিচে ঢুকিয়ে দেন। ঘটনার চারদিন পর শনিবার (১৪ জানুয়ারি) সকাল ১০টার দিকে শিবরামপুর গ্রামের করতোয়া নদীর পোলঘাটে তার নিথর দেহটি ভাসতে দেখে পুলিশে খবর দেয় স্থানীয় বাসিন্দারা। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেহটি উদ্ধারের পর শরিফুলের মা ও পরিবারের সদস্যরা তাকে শনাক্ত করেন। ওই দিনই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তার স্ত্রী ফারজানাসহ চারজনকে আটক করে পুলিশ। এ ঘটনায় প্রয়াতের মা সূর্য বানু বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসা”মিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
তবে এই ঘটনার পর ঐ এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই ঐ নারীর কান্ডে হতবাক হয়েছেন, সেই সাথে ঐ নারীর উপযুক্ত শাস্তি চেয়েছেন। তবে এই ঘটনায় অন্য কোনো ব্যক্তি জড়িত রয়েছেন কিনা সে বিষয়টি পুলিশ খতিয়ে দেখছে বলে জানিয়েছে।