নেত্রকোনা জেলার খালিয়াজুরীতে অবস্থিত খালিয়াজুরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডেন্টাল সার্জন হিসেবে দায়িত্বে থাকা প্রসেনজিৎ দাস, তার নিজের কর্মস্থলে চিকিৎসার কাজ বাদ দিয়ে, তিনি মদন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তার স্ত্রীর জায়গায় নিয়মিত রোগী দেখে থাকেন। সেখানে তিনি রোগীদের যে ব্যবস্থাপত্র দেন সেই অনুযায়ী মদন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তৃপক্ষ সরকারি ওষুধও দিয়ে থাকেন এমন ধরনের অভিযোগ উঠেছে ঐ ডাক্তারের বিরু’দ্ধে। নেত্রকোনা সিভিল সার্জন এই বিষয়ের প্রেক্ষিতে আশ্বাস দিয়েছেন যে তিনি এই অনিয়মের বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহন করবেন।
এই ধরনের অনিয়মের অভিযোগ পাওয়ার পর, তিনি সোমবার (৪ অক্টোবর) সকাল ১১ টায় মদন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিদর্শন করেন এবং খালিয়াজুরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডেন্টাল সার্জন ডা. প্রসেনজিৎ দাসকে বহির্বিভাগ বিভাগে একজন রোগী দেখতে পান। তার প্রেসক্রিপশন দিয়ে রোগীদের সরকারি ওষুধ দেওয়া হচ্ছে। মদন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডেন্টাল সার্জন মদন প্রসনেজিত দাসের স্ত্রী ডা. মালিকা ভরদ্ধাজ কেয়াকে ওই সময় হাসপাতালে পাওয়া যায়নি।
মদন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, ডেন্টাল সার্জন ডাক্তার প্রসেনজিৎ দাস ২০১৯ সালের এপ্রিল মাসে মদন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদান করেন। অন্যদিকে তার স্ত্রী ডেন্টাল সার্জন ডাক্তার মালিকা ভরদ্ধাজ কেয়া খালিয়াজুরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত রয়েছেন। স্বামী-স্ত্রীর সুবিধার্থে ২০২১ সালের আগস্ট মাসে ডাক্তার প্রসেনজিৎ দাস প্রেশন ডেপুটেশনের মাধ্যমে খালিয়াজুরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদান করেন।
এদিকে তার স্ত্রী মালিকা ভরদ্ধাজ কেয়াকে মদন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদান করান। এরপর থেকেই ডাক্তার প্রসেনজিৎ দাস নিজ কর্মস্থলে না গিয়ে তার স্ত্রীর বদলে মদন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়মিত রোগী দেখেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ডেন্টাল সার্জন ডাক্তার প্রসেনজিৎ দাস জানিয়েছেন, আমার মূল পোস্টিং মদন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। খালিয়াজুরীতে ডাক্তার কম থাকায় কর্তৃপক্ষ আমাকে বলেছেন রোগী দেখার জন্য।
মদন হাসপাতালের ডেন্টাল সার্জন ডাক্তার মালিকা ভরদ্ধাজ কেয়া মোবাইল ফোনে জানিয়েছেন, আজ আমাকে বহির্বিভাগে ডিউটি দেওয়া হয়েছে। তাই আমার স্বামী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে ডিউটি করছে। আমি বাসায় আছি। খালিয়াজুরীতে কে ডিউটি করছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি এ’ড়িয়ে যান।
মদন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার মো. হাসানুল হোসেন জানিয়েছেন, ডাক্তার প্রসেনজিৎ দাসের মূল নিয়োগ মদন হাসপাতালে। কিন্তু খালিযাজুরীতে ডাক্তার সং’ক/ট থাকায় সেখানে তিনি রোগী দেখছেন।
ডা. সেলিম মিয়া যিনি নেত্রকোনার সিভিল সার্জন হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি দেশের একটি জনপ্রিয় এক সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, প্রসেনজিৎ দাস যিনি ডেন্টাল সার্জন তিনি মদনে এবং তার স্ত্রী ডা. মালিকা ভরদ্ধাজ কেয়া যিনি ডেন্টাল সার্জন হিসেবে খালিয়াজুরী উপজেলা হাসপাতালে দায়িত্ব প্রাপ্ত ছিলেন। তারা দুজন অনুরোধ করার পরে প্রসেনজিৎ দাসকে গত আগস্ট মাসের দিকে খালিয়াজুরি এবং তার স্ত্রী মালিকাকে মদনে স্থানান্তর করা হয়েছিল। ডা. প্রসেনজিৎ দাস মদন হাসপাতালে যদি কোনো রোগী দেখার পর তার চিকিৎসার জন্য ব্যাবস্থাপত্র দিয়ে থাকেন এবং সেই অনুযায়ী সরকারি ওষুধ বিতরন করা হয়, তাহলে অবশ্যই সেটা নিয়ম বহির্ভুত। এ বিষয়ে খোজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।