তরুণীর দায়ের করা ধ*র্ষণের মামলায় পাবনা জেনারেল হাসপাতালের অটোল্যারিঙ্গোলজিস্ট (জুনিয়র কনসালটেন্ট) ডাঃ মনিরুজ্জামান নয়নকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (০৬ ডিসেম্বর) বিকেলে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এর আগে সোমবার মধ্যরাতে শালগড়িয়া হাসপাতাল রোডের ভাড়া বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করে পাবনা থানা পুলিশ।
গ্রেপ্তার ডা. নয়ন পাবনা সদর উপজেলার ক্যালিকো রাজাপুর গ্রামের মৃত আব্দুল করিমের ছেলে। তিনি ৩৩ বিসিএস সম্পন্ন করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে মেডিকেল অফিসার হিসেবে যোগদান করেন এবং ২০২০ সাল থেকে ডেপুটেশনে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে কর্মরত আছেন।
থানায় দায়ের করা অভিযোগে ওই তরুণী (২৩) জানান, তিনি একটি বেসরকারি পারিবারিক শ্রবণ কেন্দ্রে কাজ করেন। এ সময় ডাঃ মনিরুজ্জামান নয়ন রোগীদের পরীক্ষার জন্য তার কাছে রেফার করতেন। রোগীর পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে ডা. নয়নের সঙ্গে তার ভালো সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এই উপলক্ষে সেপ্টেম্বর মাসে একদিন ডাঃ তাকে বলেন- তার (ডা. মনিরুজ্জামান নয়ন) স্ত্রী খুবই অসুস্থ এবং সে কারণে তাকে বাড়িতে এসে রান্নায় একটু সাহায্য করতে হবে।
তরুণী সরল বিশ্বাসে তার বাড়িতে গিয়ে তার স্ত্রীর কথা জিজ্ঞেস করেন। তিনি জানান, তার স্ত্রী বাড়িতে নেই। এ সময় ওই তরুণী ঘর থেকে বেরিয়ে আসতে চাইলে বাড়ির প্রধান দরজা বন্ধ করে জোরপূর্বক বেডরুমে নিয়ে গিয়ে ধ*র্ষণ করে। সে তার মোবাইল ফোনে গোপনে ধ*র্ষণের দৃশ্য রেকর্ড করে। তারপর থেকে, সে ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে কয়েকবার তাকে ধ*র্ষণ করে।
এরপর থেকে ওই তরুণী তাকে আপত্তিকর ভিডিও ও ছবি মুছে ফেলার অনুরোধ করেন। কিন্তু তা না করে বারবার তাকে হুমকি ও ধ*র্ষণ করে। গত ১১ নভেম্বর সন্ধ্যায়ও তাকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে ধ/র্ষণ করে। এ অবস্থায় কোনো বিকল্প না পেয়ে মামলা করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
পাবনা থানার ওসি রওশন আলীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, মেয়েটি নিজেই মঙ্গলবার পাবনা থানায় একটি মামলা করেছে এবং তার অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার বিকেলে মেয়েটির ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়। তবে রিপোর্ট পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গ্রেপ্তার ড. নয়নকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডাঃ রফিকুল হাসানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, কয়েকদিন আগে ডাঃ নয়ন ব্যক্তিগত কাজ বলে তার কাছ থেকে ছুটি নেন। পরে শুনলাম আজ তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এদিকে, মেয়েটি পরিকল্পিতভাবে তাকে ফাঁসিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ডাক্তার নয়নের স্বজনরা। অপরদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পাবনা জেনারেল হাসপাতালের একটি সূত্র জানায়, চোখেরও কিছু সমস্যা রয়েছে ডা. এসব কারণে তার প্রথম স্ত্রীকে তালাক দেয়। পরে তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করেন।