Thursday , September 19 2024
Breaking News
Home / Countrywide / স্ত্রীকে মনোনয়ন দিয়েছেন নেত্রী, এটা আমার কারণেই সম্ভব হয়েছে : আ’লীগ নেতা

স্ত্রীকে মনোনয়ন দিয়েছেন নেত্রী, এটা আমার কারণেই সম্ভব হয়েছে : আ’লীগ নেতা

এমন ঘটনা আসলেই বিশ্ময় প্রকাশ করার মতই। বিশেষ করে, কাউকে দল থেকে মনোনয়ন পেতে হলে তাকে আগে থেকেই কোনো না কোনো পদে থাকতে হয়। কিন্তু তার বেলায় পুরোটাই উল্টো। জানা গেছে, দলে কোনো পদ না থাকলেও এবার জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার রুকিন্দিপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন কামরুন্নাহার শিমুল। এ ঘটনায় রীতিমতো ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নেতাকর্মীরা।

তবে দলে কোনো পদ না থাকলেও তাঁর স্বামী গোলাম মাহফুজ চৌধুরী অবসর জয়পুরহাট জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।

নৌকা প্রতীক পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শিমুল জয়পুরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সহকারী ক্যাশিয়ারের চাকরি ছাড়েন। গত শনিবার বিকেলে শিমুলকে জামালগঞ্জ জেডিসি মোড়ে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। সেখানে তিনি বলেন, ‘চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হব, স্বপ্নেও ভাবিনি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা মনোনয়ন দিয়েছেন। তাই আমি সেবা করার জন্য ২৬ বছরের চাকরি থেকে অব্যাহতি নিয়ে আপনাদের মধ্যে হাজির হয়েছি।’

দলীয় সূত্র জানায়, গোলাম মাহফুজ এর আগে রুকিন্দিপুর ইউপির চেয়ারম্যান ছাড়াও আক্কেলপুর পৌরসভার মেয়র এবং আক্কেলপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এ ছাড়া শিমুলের প্রয়াত শ্বশুর গোলাম রসুল চৌধুরীও আওয়ামী লীগের নেতা ছিলেন। স্বামী ও শ্বশুর আওয়ামী লীগ নেতা হওয়ার সুবাদেই মাঠে ঘোষণা অথবা কোনো প্রকার গণসংযোগ ছাড়াই নৌকার মনোনয়ন নিয়ে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হওয়ার সুযোগ লাভ করেছেন শিমুল।

এ বিষয়ে আক্কেলপুর পৌর আওয়ামী লীগ নেতা মজিবর রহমান বলেন, ‘রুকিন্দিপুর ইউনিয়নে মনোনয়ন পাওয়ার কথা বর্তমান চেয়ারম্যান আহসান কবির অ্যাপ্লবের। তিনি আক্কেলপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। কিন্তু তাকে বাদ দিয়ে মাঠেও নেই, দলেও নেই, এমন একজন নারীকে চেয়ারম্যান পদে নৌকার মনোনয়ন দেওয়া হলো। এটা মেনে নিতে পারছি না।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা জানান, বর্তমান চেয়ারম্যানের সঙ্গে গোলাম মাহফুজের দ্বন্দ্ব ছিল। মাহফুজ চাকরিজীবী স্ত্রীর নামে দল থেকে মনোনয়ন হাসিল করে সেই দ্বন্দ্বের প্রতিশোধ নিয়েছেন।

তবে গোলাম মাহফুজ চৌধুরী অবসর বলেন, ‘বাবা এবং আমি এই ইউপির চেয়ারম্যান ছিলাম। সারা জীবন আমরা মানুষের কল্যাণে কাজ করেছি। বিষয়গুলো আমি হোয়াটসঅ্যাপে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে জানিয়েছি। তিনি আমার সঙ্গে কথা বলেছেন। স্ত্রীকে মনোনয়ন দিয়েছেন নেত্রী। এটা আমার কারণেই সম্ভব হয়েছে। আমার স্ত্রী কোনো দিন চেয়ারম্যান পদে ভোট করবেন, এটা কখনো ভাবিনি। কিন্তু পরিস্থিতি বাধ্য করেছে। এটা ছাড়া উপায় ছিল না।’

আক্কেলপুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সুদীপ কুমার রায় বলেন, ‘চাকরি থেকে অব্যাহতি নিয়ে ইউপি নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে আইনগত বাধা নেই। মনোনয়ন জমা দেওয়ার আগে অবশ্যই তাঁকে চাকরি থেকে অব্যাহতিপত্র নিতে হবে।’

এদিকে দলে কোনো পদ না থাকা সত্বেও কামরুন্নাহাকে মনোনয়ন দেয়ায় সংবাদ মাধ্যমে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের বেশকিছু নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন, এ ধরণের ঘটনা আসলেই মেনে নেয়া যায় না। কোনো প্রকার গণসংযোগ বা মাঠে ঘোষণা ছাড়াই তাকে মনোনয়ন দেয়টা ঠিক নয়।

About

Check Also

আ.লীগ ও তৃণমূল থেকে বিএনপিতে যোগদানের হিড়িক

নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ ও তৃণমূল বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে বিএনপিতে যোগদানের প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফ্যাসিবাদী আওয়ামী …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *