দেশে সামাজিক অবক্ষয়ের বিষয়টি মাঝে মাঝেই বিভিন্ন গণমাধ্যমে উঠে আসছে, যেটা দিন দিন বেড়েই চলেছে। যার মধ্যে একটি হলো শিক্ষক কর্তৃক ছাত্রীকে খারাপ কাজের হয়রা’নির করা। এমন ঘটনা যেন হারহামেশাই ঘটছে। এবার তেমনই একটি ঘটনা ঘটলো বরিশাল জেলার গৌরনদী উপজেলাধীন একটি এলাকায়। গৌরনদী উপজেলা প্রাথমিক প্রধান শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে থাকা বিএম ইউনুস আলীর বিরুদ্ধে তার বিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে শ্লী’/ল”তাহানী করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ঐ ব্যক্তি পূর্ব সমরসিংহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী এক শিক্ষার্থীর মা স্কুল ম্যানেজিং কমিটি ও শিক্ষকদের বিরুদ্ধে মামলা করেও কোনো প্রতিকার পাননি। এ নিয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী-অভিভাবক ও অন্যান্য শিক্ষকদের মধ্যে অসন্তোষ ও ক্ষো”ভ বিরাজ করছে।
নি’র্যা”/তনের শিকার পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রী জানান, স্কুল বন্ধের দিনে ঐ প্রধান শিক্ষক ছাত্রীর মাকে বলে স্কুলে ছাত্রীর ছবি লাগবে বলে ছবি তোলার জন্য ওই ছাত্রকে বাকাই বাজারে ডেকে নেন। এ সময় তিনি তাকে ডাসার কলেজ ক্যাম্পাসে বেড়াতে নিয়ে যান। মোবাইল ফোনে ছাত্রীকে প্রেমের প্রস্তাব দেওয়া এক যুবকের সঙ্গে ছাত্রীর বেশ কিছু ছবি তোলেন প্রধান শিক্ষক।
তারপর থেকে, স্কুল ছুটির পর প্রধান শিক্ষক প্রায়ই তাকে স্কুল ভবনের দ্বিতীয় তলায় তাদের শ্রেণীকক্ষে ডেকে তার গো”পন জায়গায় হাত দিতেন। ছাত্রীটি এসব ঘটনার কথা কাউকে বললে প্রধান শিক্ষক তাকে ভ”য় দেখিয়ে ভয় দেখাতেন যে তারা ছবিটি ইন্টারনেটে ছেড়ে দেবে এবং তাকে স্কুল থেকে বহিষ্কার করা হবে। পরে ওই ছাত্রী বিষয়টি বিদ্যালয়ের তিন সহকারী শিক্ষক ও তার নানী ও মাকে জানায়।
খারাপ কাজের হয়রা”নির শিকার আরেক শিক্ষার্থীর মা অভিযোগ করে বলেন, প্রধান শিক্ষক আমার মেয়ের শ্লী”/লতা”হানির কথা জানালে আমি তাকে স্কুলে যেতে মানা করে দেই। তারপর একদিন মেয়েকে নিয়ে স্কুলে গেলাম। এ সময় বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও ২ জন সদস্যের উপস্থিতিতে বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নিকট আমি বিচার দেই। এ সময় বিষয়টি সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মাহাবুবুর রহমানকে মোবাইল ফোনে জানাই। পরে অন্য শিক্ষকদের আশ্বাসে মেয়েটিকে আবার নিয়মিত স্কুলে পাঠাই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক জানান, এক শিক্ষার্থীর উপস্থিতিতে ছাত্রীর মায়ের অভিযোগ শুনে সভাপতি ও শিক্ষকরা পঞ্চম শ্রেণির ক্লাসে প্রধান শিক্ষকের পাঠদান বন্ধ করে দেন। এরপর পঞ্চম শ্রেণির ক্লাসরুমগুলো দ্বিতীয় তলা থেকে শিক্ষকদের পাঠাগারের পাশের নিচতলায় স্থানান্তর করা হয়।
তবে এসব অভিযোগ সম্পূর্ণ ও ভিত্তিহীন দাবি করে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিএম ইউনুস আলী বলেন, আমি ষ’ড়য’/ন্ত্রের শিকার। বিদ্যালয়ের ২/১ জন শিক্ষক ও পঞ্চম শ্রেণির কয়েকজন ছাত্র আমার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে। শিক্ষক প্রতিনিধিকে এ বিষয়ে রিপোর্ট না করার অনুরোধ করেন।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা চুন্নু ফকির বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি।
স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সুশান্ত কুমার বক্সী বলেন, দুই ছাত্রীকে এই ধরনের খারাপ কাজের হয়রা”নির বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। তবে ক্লাসে পড়া না পারায় এক শিক্ষার্থীকে তির”’স্কার করেন প্রধান শিক্ষক। সে বিষয়টি নিষ্পত্তি হয়েছে।
একজন ছাত্রীর খারাপ কাজের হয়রা”নির একটি অডিও রেকর্ডিং এবং অন্য একজন ছাত্রীর মা শিক্ষকদের কাছে খারাপ কাজের হয়রা”নির অভিযোগ করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।
তবে এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসারের নিকট কোন অভিযোগ দেয়া হয়েছে কিনা সে বিষয়ে কিছু জানা যায়নি। অভিযুক্ত ব্যক্তি ঘটনাকে একটি ষ”ড়যন্ত্র হিসেবে বোঝানোর চেষ্টা করছেন গণমাধ্যমকে। তবে ভু”ক্তভো/গী কিশোরীদের অভিভাবকরা জানিয়েছে ওই ব্যক্তির ঘটনা ঘোরানোর চেষ্টা করছে, তবে তার দাবি আমরা মেনে নেব না।