বাংলাদেশের অত্যন্ত জনপ্রিয় একজন সঙ্গীতশিল্পী ও মানিকগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম। কখনো সংসদে গান গেয়ে, আবার কখনো রাজনীতির সুবাদে নানা ইস্যু নিয়ে সংবাদ মাধ্যমের শিরোনামে আসেন তিনি। আর সেই ধারাবাহিকতার মধ্যদিয়ে সম্প্রতি আবারও এলেন আলোচনায়।
জানা গেছে, মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে ঝিটকা আনন্দ মোহন উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি নির্বাচনে স্থানীয় সংসদ সদস্য মমতাজ বেগমের পক্ষে স্লোগান দিতে গিয়ে দুই অভিভাবককে মা/র/ধর করেছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
রোববার দুপুরে পুলিশ ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে এ ঘটনা ঘটে। পরে প্রিজাইডিং অফিসার উপজেলা শিক্ষা অফিসের সুপারভাইজার কামরুল ইসলাম ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি পদে নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করেন।
এর আগে গত ১৮ জুলাই ঝিটকা আনন্দ মোহন উচ্চ বিদ্যালয়ে অভিভাবক সদস্য পদে ভোটের মাধ্যমে চারজন অভিভাবক সদস্য নির্বাচিত হন।
বিদ্যালয়ে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি পদে নির্বাচনকে ঘিরে হরিরামপুর উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক দেওয়ান সাইদুর রহমান ও সংসদ সদস্য মমতাজ বেগমের সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
রোববার ছিল সভাপতি পদে নির্বাচন। এবারের নির্বাচনে সভাপতি পদে প্রার্থী ছিলেন দেওয়ান সাইদুর রহমান ও সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম।
তবে তাদের কেউ শারীরিকভাবে উপস্থিত না থাকলেও একটি পক্ষ সংসদ সদস্য মমতাজ বেগমের নাম ঘোষণা করে। অপর পক্ষ থেকে জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক দেওয়ান সাইদুর রহমানের নাম প্রস্তাব করা হয়।
নির্বাচনকে ঘিরে দুপুর একটার পর থেকেই স্কুল প্রাঙ্গণে দুই পক্ষের লোকজন জড়ো হতে থাকে। পুলিশ স্কুল চত্বর থেকে উভয়পক্ষের লোকজনকে বের করে দিলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে হাতাহাতি হয়।
এরপর বেলা ৩টার দিকে ৯ জনের মধ্যে ৭ সদস্যের উপস্থিতিতে প্রিজাইডিং অফিসার কামরুল ইসলাম ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নির্বাচনের জন্য সভা শুরু করেন।
এ সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইশতিয়াক আহমেদ অভিভাবক সদস্য মহিউদ্দিন মঞ্জু ও মিজানুর রহমানকে বিদ্যালয়ের তৃতীয় তলা থেকে নিচতলার সভা কক্ষে নিয়ে আসলে জেলা ও উপজেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা দুই অভিভাবক সদস্যকে ছিনিয়ে নিয়ে বেধড়ক মারধর করে। পরে পুলিশ তাদের উদ্ধার করে স্কুলের একটি কক্ষে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যায়।
আধা ঘণ্টা পর হরিরামপুর উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা তাপসী রাবেয়া এসে ছাত্রলীগ নেতাসহ বহিরাগতদের স্কুল চত্বর থেকে বের করে দেন। পরে প্রিজাইডিং অফিসার সভা শুরু করলেও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির কারণে তিনি নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করেন।
এদিকে ছাত্রলীগের হাতে দুই অভিভাবক সদস্যকে মারধরের সত্যতা স্বীকার করেছেন জেলা ছাত্রলীগের মহাব্যবস্থাপক রাজিদুল ইসলাম।
এদিকে সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম জানান, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও নির্বাচিত সদস্যরা তাকে প্রার্থী হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন। কিন্তু তিনি নিজে ওই বিদ্যালয়ের সভাপতি পদে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দেননি। তিনি মন্তব্য করেন, বিদ্যালয়ে দুর্নীতি ঠেকাতে হয়তো তার নাম প্রস্তাব করতে পারেন ।
এ সময়ে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের হাতে দুজন অভিভাবকের লাঞ্ছিত হওয়ার ব্যাপরে জানতে চাওয়া হলে, তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে সংবাদ মাধ্যমকে দাবি করে বলেন, যেহেতু তিনি ঘটনাস্থলে ছিলেন না তিনি, সেহেতু এ ব্যাপারে কিছুই বলতে পারবেন না তিনি।