গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গীতে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এক শিক্ষক ও আরেক নারী শিক্ষিকা স্কুল থেকে স্কুল থেকে লাপাত্তা হয়েছেন। এ ঘটনায় প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষের ভূমিকায় সাধারণ শিক্ষকদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক জানান, টঙ্গীর সফিউদ্দিন সরকার একাডেমি অ্যান্ড কলেজের দিবা শাখার একজন শিক্ষিকা মাতৃত্বকালীন ছুটিতে রয়েছেন। অধ্যক্ষ অস্থায়ীভাবে কারো সাথে পরামর্শ না করে উক্ত শিক্ষকের স্থলাভিষিক্ত হিসেবে তার ব্যক্তিগত পছন্দের শিক্ষিকাকে অস্থায়ীভাবে নিয়োগ দেন।
বুধবার ওই শিক্ষক বলেন, দুই সন্তানের জননী ওই শিক্ষিকা স্কুলটিতে শিক্ষক হিসেবে সুযোগ পেয়েই বিভিন্ন বিতর্কের জন্ম দেন। ইতোপূর্বেও দুইজন শিক্ষকের সঙ্গে তার মন দেওয়া-নেওয়ার ঘটনা ফাঁস হলে তাদের সতর্ক করা হয়। অবশেষে তৃতীয়বার আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের একজন শিক্ষককে প্রেমে জড়িয়ে ফেলেন ওই শিক্ষিকা।
একপর্যায়ে গত ২৫ জানুয়ারি বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার দিন সবার অজান্তে তারা উধাও হয়ে যান। এরপর থেকে তাদের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। ২৮ জানুয়ারি স্কুলের বার্ষিক বনভোজনের অনুষ্ঠানেও তারা উপস্থিত ছিলেন না। এরই মধ্যে সহকর্মীদের কাছে খবর আসে যে তারা ঢাকায় গিয়ে কোর্ট ম্যারেজ করেছেন।
এদিকে, ওই শিক্ষিকার স্বামী বিদ্যালয়ে গিয়ে আলোচিত শিক্ষকের বিরুদ্ধে মৌখিক অভিযোগ করেন এবং দুই সন্তানের ভবিষ্যৎ চিন্তায় স্ত্রীকে ফিরিয়ে এনে দেওয়ার দাবি জানান; কিন্তু রহস্যজনক কারণে বুধবার পর্যন্ত অধ্যক্ষ এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেননি। পরিবর্তে, ‘পুরস্কার’ হিসেবে ইংরেজি বিষয়ের আলোচিত ওই শিক্ষককে নতুন কারিকুলামের জন্য বাছাই করে প্রশিক্ষণে পাঠিয়েছেন।
দিবা শাখার সহকারী শিফট ইনচার্জ ইয়াসমিন নাহার বুধবার বলেন, “শিক্ষিকার স্বামী যখন আমাদের কাছে অভিযোগ নিয়ে আসেন, তখন আমরা আমরা স্পোর্টস নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। স্কুল বন্ধ থাকায় এরপর কী হয়েছিল তা জানা যায়নি। বর্তমানে তারা স্কুলে আসছে না।
ওই প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ মনিরুজ্জামান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এত তাড়াতাড়ি খবর পান কীভাবে? তিনি আমাদের স্কুলের নিয়মিত শিক্ষিকা নন, তিনি ইংরেজিতে খুব ভালো। তাই আমি মাতৃত্বকালীন ছুটিতে একজন শিক্ষিকার বদলি হিসেবে তাকে মৌখিকভাবে নিয়োগ করেছি।
ওই শিক্সক শিক্ষিকা এখন কোথায় জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্কুল খোলার পর জানা যাবে।
আলোচিত শিক্ষকের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনাটি সম্পূর্ণ অস্বীকার করে বলেন, যা শুনছেন তা কিছুই নয়- সব গুজব ও মিথ্যা।
কোথায় আছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এখন প্রশিক্ষণে আছি। এরপর আর কিছু না বলে দ্রুত ফোন কেটে দেন।
এ ব্যাপারে ঐ শিক্ষিকার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।