বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর বিপুল সংখ্যক শ্রমিক বিদেশে যান উপার্জনের আশায়। কিন্তু তাদের মধ্যে কিছু সংখ্যক বিদেশে গিয়ে উপার্জন করতে না পেরে হতাশ হয়ে ফিরে আসেন দেশে। বর্তমান সময়ে নারী নারীরা গৃহকর্মী হিসেবে কিংবা পোশাক কারখানার শ্রমিক হিসেবে বিদেশে যাচ্ছেন। কিন্তু তাদের অনেকেই অভিযোগ করেন নি’/র্যা”তিত হওয়ার। এবার তেমনই একটি ঘটনা ঘটেছে হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলাধীন কামালপুর গ্রামের গৃহকর্মী ইয়াছমিন আক্তার সাথে।
সৌদি আরবের রিয়াদে নি/’র্যা”তিত গৃহকর্মী ইয়াছমিন আক্তার অবশেষে দেশে ফিরেছেন। বাড়ি ফিরলে গতকাল শনিবার তাকে মাধবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
এর আগে গত শুক্রবার প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় ইয়াছমিনকে রিয়াদ থেকে উদ্ধার করা হয়। শুক্রবার রাতে সৌদি আরবে বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা তাকে দেশে পাঠিয়ে দেন। খবর পেয়ে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাকে নিয়ে আসেন তার পরিবারের সদস্যরা।
এদিকে ইয়াছমিনকে সৌদি আরবে পাঠানোর সঙ্গে জড়িত দালাল মো. কাশেম মিয়াকে আটক করেছে চুনারুঘাট থানা পুলিশ। শনিবার সন্ধ্যায় চুনারুঘাট থানার ওসি মো. আলী আশরাফের নেতৃত্বে একদল পুলিশ উপজেলার আমতলী এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে।
জানা যায়, ইয়াছমিনকে উদ্ধারের দাবিতে গত ২ অক্টোবর তার বাবা আব্দুল কাদ্দুছ প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগ দেন। এতে বলা হয়, ইয়াসমিন কয়েকদিন আগে সৌদি আরবের রিয়াদ থেকে তাকে ইমুতে কল করে কেঁদেছিল এবং তাকে সৌদি আরবের রিয়াদে বন্দী করে নি’র্যা/’তন করা হচ্ছে এমনটাই জানায়। সে তাদের অ’ত্যা’/চার সহ্য করতে পারছে না। ইয়াছমিন তাকে সেখান থেকে বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে আসার জন্য অনুরোধ করেন। এরপর আব্দুল কাদ্দুছ চুনারুঘাট উপজেলার আমতলী এলাকার বাসিন্দা কাশেম মিয়ার সাথে তার মেয়েকে সৌদিতে পাঠানোর জন্য নিযুক্ত দালালের সাথে যোগাযোগ করেন। তবে কাশেম বিষয়টি এড়িয়ে গেছেন বলে জানান তিনি।
ইয়াছমিনের বাবা জানান, কাশেম তার মেয়েকে ঢাকার শান ওভারসিজের মাধ্যমে সৌদিতে পাঠায়। সৌদির একটি কক্ষে তাকে এক সপ্তাহ আটকে রেখে নি’র্যা/’তন করা হয়। যার কারণে তার মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে বাসায় ফিরে তাকে মাধবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এ ব্যাপারে তিনি মাধবপুর থানায় একটি মামলা করেন।
তিনি আরও বলেন, বিমানবন্দর থেকে বাড়ি ফেরার সময় দালাল কাশেম মিয়া তার কয়েকজন সহযোগী নিয়ে ইয়াছমিনকে গাড়িতে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় বিমানবন্দর পুলিশের সহায়তায় তাদের রক্ষা করা হয়।
অভিযুক্ত দালাল কাশেম মিয়া বলেন, “এটা অপহ”রণ নয়, আমি ইয়াছমিনকে মাধবপুরে এনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বুঝিয়ে বলতে চেয়েছিলাম। কারণ, আমাকে মিথ্যা তথ্যে অভিযুক্ত করা হচ্ছে। তিনি ইয়াছমিনকে সৌদি আরব থেকে দেশে আনার ব্যবস্থাও করেছেন বলে দাবি করেন।
চুনারুঘাট থানার ওসি আলী আশরাফ জানান, সৌদি আরবে ইয়াছমিন আক্তার নামে এক গৃহকর্মীকে কয়েকদিন ধরে নি’র্যা/’তন করা হয়। দূতাবাস তাকে উদ্ধার করে দেশে পাঠায়। কাশেম মিয়ার বিরুদ্ধে মাধবপুর থানায় মামলা হলে চুনারুঘাট থেকে কাশেম মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়। কাশেমকে মাধবপুর থানায় হস্তান্তর করা হবে।
উল্লেখ্য, এর আগেও অনেক নারী গৃহকর্মী সৌদি আরবে গিয়ে নানাভাবে নি/’র্যা”তনের শিকার হন এবং তারা দেশে ফিরে সেখানে নি’/র্যা”তনের ভ”য়াবহ ঘটনার বর্ণনা দেন। এদিকে অনেক প্রবাসী শ্রমিক বিদেশ থেকে দেশে ফিরে তাদের প্রবাস জীবনের বিভিন্ন কষ্টকর জীবনের ঘটনা কথা তুলে ধরেন এবং দেশের মানুষকে অবৈধভাবে বিদেশে না যে যাবার জন্য অনুরোধ করেন।