Saturday , November 23 2024
Breaking News
Home / Countrywide / সোহরাওয়ার্দীতে যেসব গুরুত্বপূর্ন কারণে সমাবেশ করতে চাইছে না বিএনপি

সোহরাওয়ার্দীতে যেসব গুরুত্বপূর্ন কারণে সমাবেশ করতে চাইছে না বিএনপি

১০ ডিসেম্বর রাজধানী ঢাকায় একটি বড় ধরনের সমাবেশ করার ঘোষনা দিয়েছে বিএনপি। কিন্তু এই সাবেশ সফল করার পথে কোনো বাঁধা আসবে কিনা সে বিষয়েও অঙ্ক কষছে দলটি। ইতিমধ্যে দলটি মনে করছে নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে সরকার। বিএনপি নানা ধরনের জল্পনা-কল্পনার মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নয়াপল্টনে সমাবেশ নয়, সেখানে সমাবেশ হলে সেটা সাধারন মানুষের জন্য সমস্যা সৃষ্টি করবে। তবে দলটি সমাবেশ করতে চাইলে শর্ত সাপেক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে করার অনুমতি দেওয়া হবে। তবে দলটি নয়াপল্টনে সমাবেশ করবে এমন বিষয়ে এখনো অনড় দলের নীতিনির্ধারকরা।

ঢাকায় বিএনপির সমাবেশকে ঘিরে সরকার বাধা দেবে বলে আশ”/ঙ্কা করছে বিএনপি। অন্যান্য বিভাগীয় গণসমাবেশের মতো ঢাকাসহ সারাদেশে কয়েকদিন আগেই বিচ্ছি”ন্ন হয়ে যাবে। এতে করে সমাবেশে যোগ দিতে আসা নেতাকর্মীরা সমস্যায় পড়বেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের ভিত্তিতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি দেওয়ার বিষয়টি জানতে পেরে গত বৃহস্পতিবার রাতে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে কথা বলেন বিএনপির সিনিয়র নেতারা। নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশের বিষয়ে তাদের অনড় থাকার নির্দেশ দেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।

গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সদরঘাটে এক কর্মসূচি শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সাংবাদিকদের বলেন, বিএনপিকে শর্ত সাপেক্ষে ১০ ডিসেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হবে। তিনি বলেন, ‘বিএনপি একটি রাজনৈতিক দল। তাদের রাজনীতি করার অধিকার আছে। আমরা কখনই তাদের মানা করিনি, তারা সারাদেশে সভা-সমাবেশ করছে। আমরা ঢাকায় সমাবেশ করতে রাজি হইনি। আমরা তাদের আশ”/ঙ্কার বিষয়টি প্রকাশ করেছি মাত্র। আপনারা ২৫ থেকে ৩০ লাখ লোক আনবেন, এই লোকগুলোকে কোথায় রাখা হবে? তারা কোথায় বাস করবে? পুরো ঢাকা শহরকে পঙ্গু করে দেবে। আমরা তাদের বলেছি, বড় স্থানের কোথাও যান। ‘

বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির লক্ষ্যে এবং সমাবেশে মানুষের সমাগম কম হওয়ার আশ”/ঙ্কায় ১০ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে সমাবেশ করতে চায় বিএনপি। তিনি বলেন, বিএনপি আগে থেকেই জানে সমাবেশে লোকসংখ্যা ৩০ থেকে ৫০ হাজারের বেশি হবে না। নয়াপল্টনে এক কিলোমিটার রাস্তা জুড়ে গেলেও ৫০ হাজারের বেশি মানুষ হবে না। এতে এটাই প্রমাণিত হয় যে তারা জনসমাগম নিয়ে ভয় পায়। ’

গত ১৫ নভেম্বর বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল ডিএমপি কমিশনারের সঙ্গে দেখা করে সমাবেশের জন্য নয়াপল্টন কার্যালয়ের সামনের সড়কের অনুমতি চেয়ে চিঠি দেয়। এরপর থেকে সমাবেশস্থল নিয়ে গণমাধ্যমে নানা বক্তব্য আসছে।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করতে না চাওয়ার নানা যুক্তি দিচ্ছে বিএনপি। দলটির নীতিনির্ধারকরা বলছেন, বিএনপি নিয়মিত নয়াপল্টনে সমাবেশ করছে। যদি সমস্যা না হয়, তাহলে গণসমাবেশের অনুমতি দেওয়া যাবে না কেন?

সরকার ঢাকায় সমাবেশের দিনেও অবরোধ করবে বলে মনে করছে বিএনপি। অন্যান্য বিভাগীয় গণসমাবেশের মতো ঢাকাসহ সারাদেশে কয়েকদিন আগেই বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। ঢাকার আবাসিক হোটেলে রুম ভাড়া পাবেন না বিএনপির নেতাকর্মীরা। তা ছাড়া হোটেলে থাকলে গ্রে”প্তার হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে তাদের নেতাকর্মীদের সমাবেশস্থলে আসতে হতে পারে। নয়াপল্টন দলীয় নেতাদের কাছে পরিচিত জায়গা। ভাসানী ভবনে কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও মহানগর কার্যালয় নিয়ে সেখানে থাকতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন নেতাকর্মীরা।

এছাড়া আগামী ৮ ও ৯ ডিসেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সমাবেশের আগের দিন পর্যন্ত সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠনের দখলে থাকবে। বিএনপির সমাবেশের প্রস্তুতি কেমন? কয়েকদিন আগে আসা নেতাকর্মীরাই বা থাকবেন কোথায়, কীভাবে?

দলটির এক সিনিয়র নেতা বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের মধ্যে। ক্যাম্পাস ও আশপাশের এলাকায় ছাত্রলীগের সরব উপস্থিতি থাকে। সেখানে বিএনপি নেতাকর্মীদের নানাভাবে বা’ধা দেওয়া যায়। তা ছাড়া সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নতুন কিছু স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। ফলে সমাবেশেরর জায়গাও অনেক ছোট হয়ে গেছে।

এ সমাবেশ ঘিরে ব্যাপক উত্তে”জনা বিরাজ করছে। বিএনপি বড় সমাবেশ করে নয়াপল্টনের সামনে অবস্থান নিতে পারে বলে গুঞ্জ”ন রয়েছে। এমতাবস্থায় বিএনপি সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছে, এই সমাবেশ সরকার উৎখাতের আন্দোলন নয়। সমাবেশ থেকে দেশব্যাপী নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

এরপর সমাবেশ নিয়ে ভিন্নভাবে ভাবছে সরকার। তবে সমাবেশ ঠেকাতে তাদের নেতাকর্মীদের গ্রেফ’তার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ দলটির। সরকার নতুন করে গায়েবি মামলা দিচ্ছে।

বিএনপির নেতাকর্মীরা মনে করছেন, ছাত্রলীগ কেন তাদের সমাবেশের দুই দিন আগে তারিখ পরিবর্তন করে সম্মেলন ডেকেছে? এর পেছনে কোনো উদ্দেশ্য থাকতে পারে বলে মনে করছেন দলের নেতারা।

গতকাল শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘এখন পর্যন্ত নয়াপল্টনে সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আমরা অনেক সমাবেশ করেছি। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপস্থিতিতেও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। তাহলে এখন সমস্যা কোথায়? তিনি বলেন, ১০ ডিসেম্বর শনিবার। ওই দিনটি সাপ্তাহিক ছুটির দিন। জনসাধারণের কোন সমস্যা হবে না।

এদিকে এই সমাবেশের পর কী কার্যক্রম চালাবে সে বিষয়ে এখনও পরিষ্কার কিছু জানায়নি। তবে দলটি আগামি জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে নানা ধরনের কর্মসূচী দিতে পারে। তবে আন্দোলনের কথা বললেও ঠিক চূড়ান্ত আন্দোলন কবে থেকে শুরু করবে দলটি সে বিষয়েও তেমন কিছু জানায়নি। তবে বিএনপি বিচার বিশ্লেষন করে এবং সরকারের মনোভাব দেখার পর আন্দোলনে নামতে পারে। কারণ বিএনপি মাঝে এখনো ভী’তি রয়েছে ব্যপকভাবে গ্রেফতার হ ওয়ার।

About bisso Jit

Check Also

জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে প্রস্তুত আ.লীগ: বাহাউদ্দিন নাছিম

বাংলাদেশে জুলাই-আগস্ট মাসে ঘটে যাওয়া ছাত্র আন্দোলনের পর রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। ৫ আগস্ট …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *