সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এমন একটি মাধ্যম যেখানে বিভিন্ন ধরনের মানুষ তাদের মতামত বা ধারনা জানিয়ে থাকে কিংবা যোগাযোগ কাজে ব্যবহার করে থাকে। কেউ ভালো কাজে এটাকে ব্যবহার করে এবং কেউ অসৎ উদেশ্যে এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে ব্যবহার করে। যোগাযোগ মাধ্যমের এই সকল প্রতিষ্ঠানগুলো শুধু প্রয়োজনীয় কাজেই নয় ব্যবহার হয় বিনোদনের কাজেও। তবে এই প্রতিষ্ঠনকে কাজে লাগিয়ে কিছু অসাধু নেটিজেনারা নানা ধরনের অপরাধমূলক কাজ করে থাকে। এমনি এক অপরাধমূলক কর্মকান্ড সাম্প্রতিক সময়ে যোগাযোগ মাধ্যম ও সংবাদ মাধ্যমে বেশ ভাইরাল হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের( University of Dhaka ) ছাত্র থাকাকালীন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফে’সবুকে প্রথমে বন্ধুত্ব, তারপর প্রেম। তারপর কথা বলার সময় কৌশলে আপত্তিকর ছবি, অডিও-ভিডিও রেকর্ড করে। এরপর তারা সংগৃহীত আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও অনলাইনে ভাই’রাল করার ভয় দেখিয়ে টাকা দাবি করতে থাকে। এমনই এক ব্ল্যাকমেইলারকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের( Dhaka Metropolitan Police ) (ডিএমপি( DMP )) গোয়েন্দা সাইবার ও বিশেষ অপরাধ বিভাগ।
গ্রেফতারকৃতের নাম মোঃ মেহমুদ হাসান( Md. Mehmud Hasan ) রিয়াদ। গ্রেফতারের সময় তার হেফাজত থেকে ব্ল্যাকমেইলিংয়ে ব্যবহৃত ২টি মোবাইল ফোন ও ভুয়া ফেসবুক আইডি উদ্ধার করা হয়।
বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ( March ), ২০২২) রাজধানীর হাজারীবাগ( Hazaribagh ) থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা-সাইবার ও বিশেষ অপরাধ বিভাগের সংগঠিত অপরাধ তদন্ত দল।
অর্গানাইজড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন( Organized Crime Investigation ) টিমের টিম লিডার অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মোঃ নাজমুল হক জানান, তিনি নিজেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের( University of Dhaka ) কম্পিউটার সায়েন্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্রী পরিচয় দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মেয়েদের সাথে যোগাযোগ রাখতেন। আপত্তিকর ছবি, অডিও এবং ভিডিও কথা বলার সময় কৌশলগতভাবে রেকর্ড করে। এরপর বিভিন্ন অজুহাতে সংগ্রহ করা ছবি, অডিও ও ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করার হুমকি দিয়ে টাকা দাবি করে। প্রতারণার শিকারের অভিযোগে ২০২২ সালের ২ মার্চ( March ) ধানমন্ডি( Dhanmondi ) থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্ত করছে অর্গানাইজড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন( Organized Crime Investigation ) টিম।
তিনি আরও জানান, মামলার তদন্তকালে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় আসামির অবস্থান শনাক্ত করে হাজারীবাগ( Hazaribagh ) থানা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতকে ধানমন্ডি( Dhanmondi ) মডেল থানায় দায়ের করা মামলায় বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
গোয়েন্দা সাইবার ও বিশেষ অপরাধ বিভাগের উপ-কমিশনার মুহাম্মদ শরিফুল ইসলামের( Muhammad Shariful Islam ) নির্দেশে অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার নুসরাত জাহান মুক্তার( Nusrat Jahan Muktar ) তত্ত্বাবধানে অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ নাজমুল হকের নেতৃত্বে এ অভিযান চালানো হয়।
এ ধরনের কেলেঙ্কারি এড়াতে গোয়েন্দা-সাইবার ও বিশেষ অপরাধ বিভাগ কিছু পরামর্শ দিয়েছে। তা হল-
যোগাযোগ মাধ্যমে কারো সাথে আপত্তিকর বা অশালীন কথাবার্তা না বলা। অপরিচিতদের সাথে বন্ধুত্বের সম্পর্কে না জড়ানো। অপরিচিত কাউকে ছবি, নিজের তথ্য প্রকাশ না করা। যথাসম্ভব এদের থেকে এড়িয়ে চলা। অনেক সময় দীর্ঘদিনের বন্ধুও এসকল আপত্তিকর ভিডিও ধারন করে নেট দুনিয়ায় ছড়িয়ে দিতে পারে। নিজের সম্মান বজায় রেখে যে কোন মানুষের সাথে কথা বলা ইত্যাদি ।