রাজশাহীতে মাহমুদুর রহমান নামে এক ব্যবসায়ী স্থানীয় রেজা উন-নবী আল মামুনের বিরুদ্ধে ১৭ লাখ টাকা চাঁদা দাবি ও ৬টি ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করার অভিযোগ উঠেছে। ডিশ ব্যবসার আড়ালে কিশোর গ্যাং ও সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ন্ত্রণ, অপহরণ, চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্ম চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন ভিকটিম। গত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে এই আল মামুন ১৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন।
ভুক্তভোগী মাহমুদুর রহমান মানবজমিনকে জানান, গত ২১ আগস্ট বিকেল ৪টার দিকে রাজশাহীর মোহনপুর থানার কেশরহাট এলাকা থেকে ডিবি পুলিশের পরিচয়ে আল মামুনের ১১-১২ সহযোগী তাকে চোখ বেঁধে তুলে নিয়ে যায়। সেখান থেকে রাজশাহীর উপশহর আল মামুনের টর্চার সেলে অমানুষিক নি/র্যাতন চালানো হয়। তার কাছে ১৭ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। এ সময় তাকে প্রাণনাশের হু/মকি দিয়ে ৫টি নন-জুডিশিয়াল ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করা হয়। আল মামুন তাকে বললেন- “আমি তোমাকে মে/রে ফেলবো এবং এটাকে সড়ক দুর্ঘটনা বলে চালিয়ে দিব”।
এর আগে ১৪ জানুয়ারি ভিকটিমকে শহরতলীর একটি অফিসে আটকে রেখে ১৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন আল মামুন। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তার ওপর চালানো হয় অমানুষিক নি/র্যাতন। এ সময় তিনি স্ত্রীকে ডেকে ইসলামী ব্যাংকের তিনটি চেক দেন। একটিতে ১ লাখ, ৫ লাখ এবং আরেকটিতে ৬ লাখ মিলিয়ে মোট ১২ লাখ উল্লেখ করা হয়েছে।
পরে বিষয়টি তার পূর্ব পরিচিত রাজশাহীর ব্যবসায়ীর মধ্যস্থতায় আল মামুনকে ১১ লাখ টাকা প্রদান করে চেকগুলো ফেরত নেন।
রেজা উন-নবী আল মামুনের কিছু সোর্স আছে বলেও অভিযোগ মাহমুদুর রহমানের। সেই সোর্স খবর দেয় কার কত টাকা। এমনই একটি সূত্র তাকে মিথ্যাভাবে জানায় যে আমি রাজশাহীতে ২০-২৫ বিঘা সম্পত্তি কিনেছি। এ সংবাদের ভিত্তিতে তারা আমার কাছ থেকে চাঁদা আদায়ের চেষ্টা করে। দাবিকৃত চাঁদার টাকার জন্য ক্রমাগত চাপ দিতে থাকে। এমন পরিস্থিতি সামলাতে না পেরে কয়েকবার আ/ত্মহত্যার চেষ্টা করেছি।
আল মামুনের ভয়ে আমি আমার বাড়ি এমনকি থানায়ও যেতে পারি না। পরে গত রোববার রাতে আমি বোয়ালিয়া থানায় জবানবন্দি দেই। এর আগে গত ৫ অক্টোবর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার ও র্যাব-৫ এর অধিনায়ক বরাবরে ই-মেইলে অভিযোগ দায়ের করেছি। আমি একটা মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে চাকরি করতাম। এখন আমি চাকরি ছেড়ে ব্যবসা করি। কষ্টার্জিত টাকা দিয়ে শহরের উপকণ্ঠে একটি ফ্ল্যাট কিনেছি।
আল মামুনের ভয়ে ফ্ল্যাটে যেতে পারছি না। ফ্ল্যাট বিক্রি করে চাঁদা দেওয়ার চাপ দিচ্ছে। এ ব্যাপারে রেজা উন-নবী আল মামুনের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহরাওয়ার্দী হোসেন বলেন, কেউ থানায় এসে জবানবন্দি না দিলে তা গ্রহণ করা হয় না। ডিবি পুলিশের নাম ব্যবহার করে অপহরণ ও চাঁদা দাবির মতো অভিযোগ পেলে পুলিশের তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণের কথা উল্লেখ করে এজাহার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে এখনো পর্যন্ত তার থানায় এ ধরনের লিখিত কোনো অভিযোগ আসেনি বলে দাবি করেন।